নাটোরের বনলতা সেন এর স্রষ্টা
রুপসী বাংলাার কবি জীবনানন্দ দাশের প্রয়াণ দিবস।
‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়, হয়তো মানুষ নয় হয়তো-বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে…’
‘রূপসী বাংলা’ কাব্যে ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ দেশের প্রতি তার ভালোবাসা এভাবেই ব্যক্ত করেছেন। বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ সালের এই দিনে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯১৯ সালে ইংরেজিতে সম্মানসহ বিএ ও ১৯২১ সালে এমএ পাস করেন। ১৯২২ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত তিনি অধ্যাপনাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। দেশ বিভাগের কিছু আগে তিনি সপরিবারে কলকাতা চলে যান।
জীবনানন্দ বাংলা কাব্য-আন্দোলনে রবীন্দ্রবিরোধী তিরিশের কবিতা নামে খ্যাত কাব্যধারার অন্যতম কবি। পাশ্চাত্যের মডার্নিজম ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী বঙ্গীয় সমাজের বিদগ্ধ মধ্যবিত্তের মনন ও চৈতন্যের সমন্বয় ঘটে ওই কাব্য-আন্দোলনে। তার রূপসী বাংলা কবিতা ষাটের দশকে বাঙালির জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংগ্রামী বাঙালিকে তীব্রভাবে অনুপ্রাণিত করে। জীবনানন্দ দাশের রচিত কাব্যগ্রন্থ ধূসর পাণ্ডুলিপি, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, সাতটি তারার তিমির, রূপসী বাংলা, বেলা অবেলা কালবেলা প্রভৃতি।
ঔপন্যাসিক ও গল্পকার জীবনানন্দের পরিচয় মেলে মৃত্যুর পর পাওয়া পাণ্ডুলিপিতে। উপন্যাসের মধ্যে মাল্যবান, সুতীর্থ, জলপাইহাটি, জীবন প্রণালী ও বাসমতীর উপাখ্যান উল্লেখযোগ্য। তিনি দুই শতাধিক গল্প লিখেছেন। জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থ নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত হয়। এ গ্রন্থটি ভারতের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারও পায়। ১৯৫৪ সালের এই দিনে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।