সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেছেন, যারা জাতির পিতার হত্যার দিনে কেক কেটে নির্লজ্জ উল্লাস করে, যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে বাঁচানোর জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল, তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করেছিল।
যারা সংবিধান থেকে চার মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ কেটে বাদ দিয়েছিল, এবং স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে ৭ ই মার্চ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য আশা করা যায় না।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, বিএনপি আজকে ৭ই মার্চ পালন করে এটাই সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়। তাদের চক্রান্ত দেশের মানুষের বোঝার বাকি নেই। তাদের এসব অসৎ উদ্দেশ্য আমরা বাস্তবায়ন করতে দিব না।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে বুধবার (১০ মার্চ) বিকাল ৪ টায় বিএনপি কর্তৃক ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদে গৌরব ‘৭১ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন ।
পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি তখন এধরনের অপপ্রচার মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরী করে।তরুন প্রজন্মের কাছে ভুল মেসেজ দেয়।
তারা আজ ৫০ বছর পরেও মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে, সেদিনের বিএনপির সেই আলোচনা সভায় স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে কোন আলোচনাই করা হয়নি। যে ভাষনকে ইউনেস্কা পর্যন্ত স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে তারা কিছুই খুঁজে পায় না বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বলার জন্য।
স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল কিছুই ৭ই মার্চের ভাষণে নিহিত ছিল।
আপনাদের এখনো সময় আছে নিজেদের ভুল স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চান, পিছনের দরজা দিয়ে হলেও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সাথে মিলিত হন।
মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যজোটের সভাপতি রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে উদ্ধত হয়েছে।জাতির কাছে ভুল তথ্য প্রচার করাই তাদের মূল লক্ষ্য বলে আমার মনে হয়। ৭ই মার্চ ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রধান এবং চূড়ান্ত আহবান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল বলেন, ৭ই মার্চের সেদিন বিকাল সাড়ে ৩ টায় আমিও সাড়ে ৭ কোটি বাঙ্গালীর সাথে বঙ্গবন্ধুর সাথে আমিও জয় বাংলা শ্লোগান দিচ্ছিলাম। কিভাবে যুদ্ধ করতে হবে, কিভাবে পাক হানাদারদের প্রতিহত করতে সকল নির্দেশনা সেদিন বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন।আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবা না, কথাটি মাথায় রেখে আমরা ২৫ মার্চ রাতে যুদ্ধে নেমে পরলাম।
রাজাকারের সন্তান রিজভিরা কোন সাহসে বলে সেদিন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়নি। আমরা অস্ত্র জমা দিলেও ট্রেনিং জমা দেই নাই, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিষেদগার করলে আমরা তাদেরে জিব্বা ছিড়ে ফেলবো। তারা অবিলম্বে ক্ষমা না চাইলে, হিট এন্ড রান, পালাবার জায়গা পাবে না।
যুবনেতা ইকবাল মাহমুদ বাবলু বলেন, ১৯৭৫ এর পর যেভাবে স্বাধীনতার ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল ঠিক একইভাবে মির্জা ফকরুল গংরা পুরানো শকুনের মত জাতির পতাকা খামচে ধরার চেস্টা করছে। তাদের পূর্বপুরুষরাই ৭১ সালে স্বাধীনতার বিরেুদ্ধাচারণ করেছিল।
তারেক রহমান আজকে লন্ডনে বসে দেশ শাসন করার স্বপ্ন দেখে। ৭৫ এর পরে পাঠ্যপুস্তকে পর্যন্ত আমাদের মনগড়া ভুল ইতিহাস পড়ানো হয়েছে।যারা স্বাধীনতাকে বির্তকিত করতে চায় তাদেরকে আমরা দাতভাঙ্গা জবাব দিব।
গৌরব ৭১ এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন , মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও গৌরব ‘৭১ এর নেতাকর্মীরা ।
বিএনপি নেতৃত্বকে পরিকল্পিত মিথ্যাচার ও ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার জন্য তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবার আহ্বান জানান গৌরব ‘৭১- এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন।