যে দেশ লাখ লাখ মানুষের রক্তে স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতার জন্য মা-বোনদের ইজ্জত দিতে হয়েছে। আজকেও যখন স্বাধীন দেশে মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়, তখন আমরা কাকে দোষ দেব? যারা এখন এগুলো করছে তারা আর তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মধ্যে কি তফাৎ আছে?
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৯০’র ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে শহীদ নাজির উদ্দীন জেহাদের ৩০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা চেতনার কথা বলে। স্বাধীনতার কোন চেতনা দেশে এমন পরিস্থিতির সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়, যে সময় কার্টুন বের হয়। যে যেখানেই যান খোঁজ নিয়ে দেখবেন- সেখানে ছাত্রলীগ আছে কিনা।
তিনি বলেন, এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। এমন বাংলাদেশের জন্য আমরা লড়াই করি নাই। আমরা একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছিলাম, একটা মানবিক বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছিলাম, একটা সুখী-সমৃদ্ধ-শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছিলাম যেখান মানুষের অধিকার থাকবে, মানুষ নিশ্চিন্তে নির্ভিগ্নে জীবনযাপনের সুযোগ পাবে।
আজকে সেটা সংকুচিত না, সেটাকে রুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। এই কারাগার, এই নিগড় থেকে মুক্তি পেতে হবে। আর সেই মুক্তির লড়াই শহীদ জেহাদ আমাদের আলোকবর্তিকা হোক, তার স্মৃতি আমাদের পথ দেখাবে।
বছরের পর বছর ধরে নানা নির্যাতন-নিপীড়ন, একদলীয় শাসন, নানা ধরনের এক নায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা দেখলাম সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আরব বসন্ত।
বহু দেশে বিরাট বিরাট পরিবর্তন ঘটে গেল; ভালো মন্দ বিভিন্ন রকম। অতি সম্প্রতি আমরা দেখছি, মিশরে জেনারেল সিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে। বেলারুশে আন্দোলন চলছে, থাইল্যান্ডে জেনারেলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আন্দোলন আমাদের এখানেও হবে, হতে বাধ্য। কারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে জোর করে দমন করা যায় না, মানুষের প্রয়োজনকে অগ্রাহ্য করে দীর্ঘদিন টিকে থাকা যায় না।
কিন্তু একটু সময় লাগে কখন? যদি সামরিক শাসন থাকে, যদি একনায়কতন্ত্র থাকে, যদি ফ্যাসিবাদ থাকে তাহলে সেখান থেকে মুক্ত হতে একটু সময় লাগে।
স্মরণসভায় আরো বক্তব্য রাখেন ১৯৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সাবেক ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, আসাদুজ্জামান রিপন, খন্দকার লুৎফর রহমান, খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, কামরুজ্জামান রতন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, আসাদুজ্জামান আসাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।