বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। নিজেকে সংগঠনের সমন্বয়ক দাবি করে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে অব্যাহতি দেন নুরুল হক নুর।
এর প্রেক্ষিতে পাল্টা আরেকটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নুরের এই কার্যক্রমকে চরম অসাংগঠনিক বলে দাবি করেন মুহাম্মদ রাশেদ খান। পরে অবশ্য দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে বলে জানান তারা।
রবিবার ছাত্র অধিকার পরিষদের একাধিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। একইসঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তারা।
এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে দেখ যায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর নিজেকে বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক উল্লেখ করে একটা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন।
যেখানে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে আহ্বায়ক রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। একইসঙ্গে স্থায়ী বহিষ্কার কেন করা হবে না সেই মর্মে পাঁচ সদস্যের একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও আরেকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন করে কেন্দ্রীয় কমিটি করতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। কমিশনের প্রধান করা হয়েছে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবু হানিফকে।
এর বিপরীতে নুরের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার ওই ঘোষণাকে চরম অসাংগঠনিক কার্যকলাপ আখ্যা দিয়ে রবিবার (৪ জুলাই) এক জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নুরকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান।
রাশেদ খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের উল্লেখিত নোটিশের আলোচনায় কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা অনুপস্থিত ছিলেন। তাই ওই সভায় সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত হওয়ার এখতিয়ার কারও নেই। এছাড়াও বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদে ‘সমন্বয়ক’ কোনো পদই নেই।
এদিকে, এই দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুলাই রবিবার জরুরি সভায় বসেন পরিষদের নেতাকর্মীরা। প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনা শেষে অবশেষে সমাধানে আসেন তারা। সভা শেষে আগামী এক মাসের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ করবে বলে জানান সংগঠনটির নেতারা।
রাজনৈতিক দল গঠন শেষে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। ততদিন রাশেদ খান আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন।
এই বিষয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর কালের কণ্ঠকে বলেন, সংগঠনে মতবিরোধ থাকবে, পাল্টাপাল্টি যুক্তিও থাকবে এটাই সৌন্দর্য। আমাদের মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ পেয়েছে। পরে আমরা আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করে নিয়েছি।
সার্বিক বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি।
পরে আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আমরা সমাধান করেছি। পাশাপাশি আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন ও পরিষদের নতুন কাউন্সিল করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।