মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনা মোকাবেলায় সরকার যেমন একবারেই ব্যর্থ, চরম উদাসীনতা, অবহেলা ও দুর্নীতির কারণে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, ঠিক তেমনি বন্যার বিষয়েও সরকারের নীরবতা, নিষ্ক্রিয়তা, মানুষকে আতংকগ্রস্ত করেছে। একজন মন্ত্রী তো বলেই ফেললেন- ‘বন্যার বিষয়ে এতটুকুও চিন্তিত নই’।
একদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমাগত বাংলাদেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে। একদিকে করোনা মোকাবেলায় সরকারের চরম ব্যথ্যতা মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে তুলেছে, অন্যদিকে ভারতের উজান থেকে বন্যার পানি নেমে আসাতে মানুষের সম্পদ, বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে যাওয়া, গবাদী পশুর মৃত্যু, ফসলহানি দেশের মানুষ সীমাহীন কষ্ট ও অর্থনৈতিক অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলেছে। ভারত অভিন্ন নদীগুলোর সকল বাঁধ, ব্যারেজের গেট খুলে দেয়ায় উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি, বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, মহানন্দা, পদ্মা, তিস্তা ও ধরলা নদীর অববাহিকায় ৩৪টি জেলা ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি জেলা এক মাসের মধ্যে ২/৩ বার বন্যার পানি উজান থেকে এসে বাড়ি-ঘর, ফসলের ক্ষেত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
সোমবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা এই অনির্বাচিত সরকারের এই অবহেলা উদাসীনতার এবং নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে বন্যা প্রয়োজনীয় ত্রাণের যথাযথ ব্যবস্থার গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
ভারতের সাথে যে অভিন্ন নদী প্রায় ১৫৪টি, একমাত্র পদ্মার ফারাক্কা বাঁধ ব্যতীত কোনোটারই কোনো পানিবণ্টন চুক্তি ভারতের অনীহার কারণে সম্পন্ন হয়নি। তিস্তার চুক্তির কথা ফলাও এই সরকার প্রচার করলেও গত এক দশকে কোনো চুক্তিই করতে সক্ষম হয়নি। অথচ একের পর এক ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার, বিদ্যুৎ ক্রয়সহ অসংখ্য অসমচুক্তি স্বাক্ষর করেছে। অন্যদিকে সীমান্তে প্রায় প্রতিদিন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশীদের গুলি করে হত্যা করছে। সে ব্যাপারেও সরকার কোনো কার্যকরী প্রতিবাদ জানাতে সাহস পায়নি। এই সরকারের নতজানু পরারাষ্ট্রনীতি কারণে প্রায় প্রতিবছর বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষেরা এই বন্যায় আক্রান্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন প্রায় নিষ্ক্রীয় হয়েছে।
বিএনপি সব সময়ই যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সর্বশেষ করোনাদুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একটি জাতীয় ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা অবিলম্বে কাজ শুরু করবেন।
দুর্গত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।