করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো বাণিজ্য নয়, বিনামূল্যে সকলকে ভ্যাকসিন দিতে হবে শ্রমজীবী মানুষদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা ভ্যাকসিন দিতে হবে
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে সকল ধরণের বাণিজ্য বন্ধ কর ও বিনামূল্যে সকলের জন্য করোনা ভ্যাকিসিনের ব্যবস্থা কর এ দুই দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট আজ ২৫ জানুয়ারি সোম বার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। পল্টন মোড়ে জামায়েত হয়ে সচিবালয়ে যাওয়ার সময় জিরো পয়েন্ট মোড়ে পুলিশ বাধা দিলে সেখানে অবস্থান করে জোটের নেতা-কার্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
জোট সমন্বয়ক ও সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদ (মার্কসবাদী)’র আ ক ম জহিরুল ইসলাম, ইউসিএলবি’র নজরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জুলহাস নাইন বাবু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত প্রায় এক বছরে সারা বিশ্বে করোনায় একুশ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় নানা রকমের প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়েছে।
অন্যান্য দেশের সরকার তাদের দেশের জনগণের জীবন সুরক্ষায় ভ্যাকসিন সংগ্রহ করছে। কিন্তু বাংলাদেশে সরকার করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন সংগ্রহের দায়িত্ব দিয়েছে সরকারের এক উপদেষ্টার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোকে। বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সাথে জি টু জি চুক্তি না করে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাকে সাথে নিয়ে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। যার মাধ্যমে বেক্সিমকো ৫০০ কোটি টাকা ব্যবসা করে নেবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বেক্সিমকো বেসরকারিভাবে ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বিক্রি করবে এর মধ্যে ১০ লাখ ডোজের জন্য এরইমধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের বাজারে বেক্সিমকো এর খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে ১৩ ডলার বা ১১২৫ টাকা। নেতৃবৃন্দ বলেন ১৯৯৬ সালে শেয়ার বাজারে শাইনপুকুরের উন্মাদনা সৃষ্টি করে যেভাবে বেক্সিমকো মানুষকে লুটে নিয়েছিল সেভাবেই করোনা ভ্যাকসিনের অপর্যাপ্ততার সুযোগে চাহিদার উন্মদনা তৈরি করে চড়াদামে বিক্রি করে তারা মানুষকে সর্বস্বান্ত করবে। জোট নেতৃবৃন্দ সরকার হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো বাণিজ্য চলবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মাত্র দশ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেই দেশের সকল মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব। নেতৃবৃন্দ বিনামূল্যে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সকলের জন্য করোনা ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান। ব্যবসায়ী বন্ধুদের মুনাফা সুযোগ করে দিতে সরকার যদি ‘টাকা ছাড়া টিকা নাই’ নীতি কার্যকর করে তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে নেতৃবৃন্দ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিমাসে পঞ্চাশ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আমদানি করলে সব মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে পাঁচ বছরের অধিক সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিন প্রয়োগে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। নেতৃবৃন্দ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষ যারা নাগরিক সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন তাদেরকে অগ্রাধিকার তালিকায় রাখার দাবি জানান।
মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো বাণিজ্য নয়, বিনামূল্যে সকলকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। জোট নেতৃবৃন্দ সরকার হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো বাণিজ্য চলবে না।