জাতীয় সংসদ থেকে ‘ওয়াক আউট’ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হারুনুর রশিদ। সংসদের বৈঠকে সভাপতির দায়িত্বপালনকারী ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার বিরুদ্ধে ‘বক্তব্যে হস্তক্ষেপের’ অভিযোগ তুলে তিনি এই ‘ওয়াক আউট’ করেন।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার সময় অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এই সাংসদ।
আজ বাজেটের ওপর আলোচনার জন্য এমপি হারুনুর রশিদকে ১২ মিনিট সময় দেওয়া হয়। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের ‘উন্নয়নের কথা চিন্তা না করে’ মানুষ বাঁচানোর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রস্তাব করেন।
এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ দলটির ‘হাজার হাজার’ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলার’ অভিযোগ তুলে তা প্রত্যাহারের দাবি করেন।
সংসদে তারেক জিয়ার প্রসঙ্গ ওঠায় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা প্রায় সবাই তার প্রতিবাদ করেন। এ সময় সংসদে হইচই শুরু হয়।
এরই মধ্যে হারুনুর রশিদের নির্ধারিত ১২ মিনিট শেষ হয়ে যায়। তবে তিনি না বসে বক্তব্য অব্যাহত রাখেন এবং সময় বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডেপুটি স্পিকারের কাছে আবেদন করেন।
কিন্তু ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া সময় না বাড়ালে এর প্রতিবাদে সংসদ কক্ষ ত্যাগ করতে উদ্যত হন হারুনুর রশিদ। ডেপুটি স্পিকার তখন তাকে বসতে এবং তার কথা শুনতে অনুরোধ করেন।
এ পর্যায়ে হারুন চেয়ারে বসলে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘আপনি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন এটি সুন্দর প্রস্তাব। কিন্তু আপনি এমন দুজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন, যাদের কথা আমি সংসদের এই চেয়ারে বসে উচ্চারণ করতে চাই না। একটি নির্বাচিত সরকার কোনো কনভিক্টেড ব্যক্তির সঙ্গে ঐক্য করতে পারে না।’
বিএনপির এই এমপি ‘কিছু অসংসদীয় কথা’ তার বক্তব্যে বলেছেন উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার তা সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেন। পরে সংসদ নেতা শেখ হাসিনার পরামর্শে তিনি বাজেটের ওপর আরও এক মিনিট বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেন হারুনকে।
এ সময় হারুন ফ্লোর নিয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং স্পিকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘আপনি সময় বাড়িয়ে দেননি। মাননীয় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলার পর আপনি এক মিনিট সময় বাড়িয়েছেন। আমি আর বক্তব্য দেব না। আপনি আমার বক্তব্যে ইন্টারাপ্ট করেছেন। এর প্রতিবাদে আমি সংসদ থেকে ওয়াক আউট করছি।’ এ কথা বলে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন হারুন।
তার ওয়াকআউটের পর কেউ কেউ ফ্লোর চাইলে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘উনার (হারুনের) প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য আমি একাই যথেষ্ট। সংসদে কোনো সদস্য অসংসদীয় বক্তব্য দিলে আমি অবশ্যই ইন্টারাপ্ট করব। এটা সরকারি দলের কেউ দিলেও করব, বিরোধী দলের কেউ দিলেও করব।’