পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫)
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মাঝে মাঝে তাঁর বান্দাদের ভয়, মুসিবত ও বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা অল্পতেই হতাশ হয়ে যাই। সামান্য বিপদে দিশেহারা হয়ে পড়ি। মহান আল্লাহ তাআলা এ সময়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেছেন। বিপদে পড়লে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হয়। তিনিই একমাত্র উদ্ধারকারী। তিনি চাইলে মুহূর্তেই বিপদ থেকে মুক্তি দিতে পারেন।
পৃথিবীতে মানুষ যতদিন বেঁচে থাকবে সুখ-দুঃখ, বিপদ-মুসিবত তত দিন থাকবে। বিপদকে ঘৃণা বা খারাপ দৃষ্টিতে দেখার কোনো সুযোগ নেই। অনেক সময় বিপদের কারণেই মানুষ আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। আবার যখন মানুষ চরম অন্যায়ের দিকে ধাবিত হয় তখনই মানুষের ওপর বিপদ-মুসিবত পতিত হয়।
বর্তমানে করোনাভাইরাস আতঙ্কে গোটা বিশ্ব থমকে গেছে। বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। কিছুদিন পর পর নতুন নতুন রোগব্যাধি ও ভাইরাস এসে আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা যত উন্নতিই করি, মহান আল্লাহর রহমত ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই। এ কারণেই আমাদের উচিত, আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া জ্ঞাপন করা এবং সব পাপ থেকে মহান আল্লাহর কাছে তাওবা করা।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোনো কঠিন সমস্যা বা বিপদের সম্মুখীন হতেন তখনই আল্লাহর কাছে একান্তভাবে দোয়া প্রার্থনা করতেন।
বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণের জন্য পবিত্র কোরআন এবং রাসুল (সা.) এর হাদিসে কিছু দোয়া ও আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, ‘যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)- এর ওপর কোনো কাজ কঠিন হয়ে দেখা দিত, তখন তিনি এ দোয়াটি পড়তেন।’
উচ্চারণ: ‘ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ।’
অর্থ: হে চিরঞ্জীব! হে বিশ্ব চরাচরে ধারক! আমি তোমার রহমতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (তিরমিজি মিশকাত, হাদিস নম্বর: ২৪৫৪)
বিপদে আপদে বান্দা যদি আল্লাহকে অন্তর দিয়ে ডাকেন তবে মহান রাব্বুল আলামীন সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেন। যারা তার কাছে দোয়া করে, তাদের প্রতি তিনি খুশি হন।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমার বান্দা যখন আপনার কাছে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে; আমি তো কাছেই আছি। আমি দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৬)
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের রবকে ডাকো বিনীতভাবে ও নীরবে। নিশ্চয়ই তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৫)
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মানবজাতি সৃষ্টি করে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে ভূষিত করেছেন। আর এ সৃষ্টির সেরা জীব যদি তার আসল মালিককে ভুলে যায় এবং তাঁর আদেশ-নিষেধ অমান্য করে, তাহলে তার মালিক তার প্রতি শুধু অসন্তুষ্টই হন না, বরং তাকে শাস্তি দিতে বাধ্য হন।
হাদিস শরিফে প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
‘যখন কোনো কওমের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা তা প্রকাশ্যেও করতে শুরু করে তবে তাদের মাঝে দুর্ভিক্ষ ও মহামারি ব্যাপক আকার ধারণ করে, যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে ছিল না।’ (ইবনু মাজাহ, আসসুনান : ৪০১৯)।
করোনাভাইরাসও এমন একটি ভাইরাস যা এর আগে আর কখনোই পৃথিবীতে দেখা যায়নি। তবে ২০০২ সালে চীনে সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামের একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল, যাতে সংক্রমিত হয়েছিল আট হাজার ৯৮ জন। মারা গিয়েছিল ৭৭৪ জন। সেটিও ছিল এক ধরনের করোনাভাইরাস।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে, তা থেকে আমাদের সর্বপ্রথম এটা চিহ্নিত করতে হবে যে এই রোগগুলো কেন হয়। এবং তা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আধ্যাত্মিক দিক থেকে চিন্তা করলে পৃথিবীতে নতুন নতুন রোগব্যাধি, বিপদাপদ আসার কারণ মানুষের গুনাহ।
মানুষ পাপ করতে করতে যখন পাপের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখনই আল্লাহর শাস্তি নাজিল হয়। পাপিষ্ঠ ফেরাউনকে আল্লাহ তায়ালা তখনই ধরেছেন, যখন সে নিজেকে আল্লাহ বলে দাবি করেছে।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : ‘হে মুসা! তুমি ফেরাউনের কাছে যাও, সে অত্যন্ত উদ্ধত হয়ে গেছে।’ (সূরা: ত্বাহা, আয়াত ২৪)।
নমরুদকে আল্লাহ তায়ালা তখনই শাস্তি দিয়েছেন, যখন সে নিজেকে প্রভু বলে দাবি করেছে। অনুরূপভাবে আদ, সামুদ প্রভৃতি জাতিকে তাদের সীমাহীন পাপাচারের কারণে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
তাই এই মুহূর্তে আমাদের সবার উচিত, অশ্লীলতা ত্যাগ করা। ঘরে ঘরে কোরআন তিলাওয়াত করা। বেশি বেশি সদকা করা, সব সময় পবিত্র থাকা, পরিচ্ছন্ন থাকা। নামাজের মাধ্যমে বেশি বেশি বিপদ থেকে পরিত্রাণ প্রার্থনা করা।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৪৫)
পাশাপাশি এ বিপদের মুহূর্তে আমরা বেশি বেশি সদকা করতে পারি। কারণ সদকার মাধ্যমে বিপদ দূর হয়ে যায়।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত এলাকায় যাতায়াত থেকে বিরত থাকতে। পাশাপাশি জনসমাগম হয় এমন জায়গা এড়িয়ে চলতে। তাই আমাদেরও উচিত যতটুকু সম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলা। সতর্ক থাকা।
এ ছাড়া এ সময় ডাক্তাররা সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। ইসলাম এ বিষয়টির প্রতি সব সময় জোর দিয়ে থাকে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ। (মুসলিম, হাদিস : ৪২২)
এ ছাড়া আরো বহু হাদিসে সার্বক্ষণিক অজু অবস্থায় থাকার প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আমরা যদি ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী বেশি বেশি সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি দিয়ে হাত ধোয়ার পাশাপাশি ঘন ঘন অজু করি, তাহলে একদিকে যেমন অজুর ফজিলত পাওয়া যাবে অন্যদিকে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার পদক্ষেপ গ্রহণ হবে।(সংগৃহীত)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment