শেষ পর্যন্ত এ বছরের জন্য স্থগিত হয়ে গেল অমরনাথ যাত্রা। কাশ্মীরের দুর্গম পাহাড়ে প্রায় ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অমরনাথ হিন্দুদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তীর্থক্ষেত্র।
হিমালয়ের গুহায় অবস্থিত একটি মন্দির পরিদর্শনে প্রতিবছর দু্ই মাসব্যাপী হওয়া এ তীর্থযাত্রায় লাখ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী অংশ নেন। প্রতি বছর লাখ লাখ যাত্রী সেই তীর্থক্ষেত্র পায়ে হেঁটে দর্শন করতে যান।
অমরনাথ গুহা কর্তৃপক্ষ এবং সরকার জানিয়েছে, করোনার কারণে এ বছর তীর্থযাত্রা বন্ধ রাখা হচ্ছে।
প্রতি বছরই এই যাত্রা নিয়ে উত্তেজনা থাকে। বেশ কয়েক বার তীর্থযাত্রীদের ওপর জঙ্গি হামলাও হয়েছে। গত বছর জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির পরে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় যাত্রা মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এই তীর্থ যাত্রা। এ বছর অবশ্য মূলত করোনার কারণেই যাত্রা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামী ৩১শে জুলাই পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের সব উপাসনালয় বন্ধ থাকবে।
করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জন্য জম্মু ও কাশ্মীরের সব প্রার্থনালয়ও ৩১ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত কেন্দ্রশাসিত এ অঞ্চলে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে, মৃত্যু হয়েছে ২৬৩ জনের।
প্রতিবছর সাধারণত জুলাই ও অগাস্ট মাসে এ অমরনাথ যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। যাত্রা শেষ হয় পাহাড়ের উপর অবস্থিত অমরনাথ গুহার মন্দিরে গিয়ে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, তীর্থযাত্রীদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে, এ উদ্বেগ থেকেই চলতি বছরের যাত্রা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তারা বলছেন, ভক্ত-অনুসারীদের জন্য মন্দিরের আচার অনুষ্ঠানগুলো সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
গত বছর বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার পর কর্তৃপক্ষ অগাস্টের শুরু থেকে বাকি সময়ের জন্য অমরনাথ যাত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ভারতের সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ছিল। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার পর জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়।
এর আগে ২০১৭ সালে অমরনাথ মন্দির পরিদর্শন শেষে ফিরে যাওয়ার পথে বাসে জঙ্গি হামলায় ৬ নারীসহ ৭ তীর্থযাত্রী নিহত হয়েছিল।