সাম্প্রতিক শিরোনাম

করোনায় হজ ও নামাজ

ইসলাম জনকল্যাণমুখী ও বিজ্ঞানমনস্ক এক জীবন ব্যবস্থা। মানুষের জীবন, সল্ফ্ভ্রম, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যথাযথ নিশ্চয়তা বিধানের বিষয়টি ইসলামে স্বীকৃত। সৃষ্টিগতভাবেই নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিটি সৃষ্ট জীবের রয়েছে; আর সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ ও সমৃদ্ধির বিষয়ে পবিত্র ইসলাম সবচেয়ে বেশি দরদ প্রদর্শন ও বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছে।

ইসলাম কখনোই মানুষকে তার সাধ্য-সামর্থ্যের বাইরে কোনো জিনিস, ফরমান বা দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেয়নি। সুরা বাকারার সর্বশেষ আয়াতে বলা হয়েছে- ‘লায়ুকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ কারও ওপর এমন কোনো দায়িত্ব অর্পণ করেন না, যা তার সাধ্যাতীত। এমনকি পবিত্র ইসলামের বিধান বলে কোনো কিছুকেই মানুষের ওপর জবরদস্তিমূলক জটিলতার উদ্ভবও ঘটাননি। এখানে সুরা হজের সর্বশেষ আয়াতটি উদ্ধৃত করে বলা যায়- ‘ওয়ামা জাআলা আলাইকুম ফিদ্দিনি মিন হারাজ’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ ইসলামের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোনো কঠোরতা আরোপ করেননি।

বরং ইসলামের সংবিধিবদ্ধ পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনুল কারিমকে গোটা মানবজাতির জন্যই মহান স্রষ্টা সহজবোধ্য করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন- ‘ওয়ালাকাদ আস্‌সারনাল কোরআনা লিয্‌যিক্‌র ফাহাল মিম্মুদ্দাকির’ অর্থাৎ উপদেশ গ্রহণের জন্য এই কোরআনকে আমি সহজতর করে দিয়েছি; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি? বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা মহামারিতে ইসলামের বিধিবদ্ধ ইবাদতসমূহের আনুষ্ঠানিকতার ব্যাপারেও আমাদের মহান প্রভু নির্দেশিত পন্থায় প্রতিপালন এবং তার প্রেরিত পয়গম্বর ও কিতাবের উপদেশমালার ওপর আমল করাই সময়োচিত কাজ বলে বিবেচিত হবে।

মুসলিম উম্মাহর ঐক্য-সংহতি, শক্তিমত্তা আর শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনের প্রতীক। মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশের এক অনবদ্য মহড়া হলো হজ। সুদীর্ঘ ২২২ বছর পর এবার হজ উদযাপনে এক নতুন ঘোষণার সূত্রপাত দেখা গেল। আর সেটি হলো- করোনা মহামারির এই নতুন বাস্তবতায় সৌদি আরবের বাইরে পৃথিবীর আর কোনো রাষ্ট্রের কেউই এবার পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাবে না; এমনকি সৌদি আরবের অধিবাসী যে কাউকেই এবার হজ পালনে অনুমতি দেওয়া হবে না। সীমিত সংখ্যক নির্বাচিত মানুষের অংশগ্রহণে হজের আনুষ্ঠানিকতা চালু রাখার সিদ্ধান্তই কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে। আর এ সিদ্ধান্ত কেবলই আদম সন্তানের জীবন বাঁচানোর মহান তাগিদেই গৃহীত হয়েছে। সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশের প্রায় পঁয়ষট্টি হাজার হজযাত্রীর মন-মানস বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে আছে। হাজিগণ মহান আল্লাহর মেহমান হিসেবে সম্মানিত। যারা এ বছর হজে গমন করবেন বলে সাব্যস্ত করেছিলেন এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়ে রাখছিলেন, তাদের জন্য নিশ্চিতভাবেই মহান আল্লাহর নিকট রয়েছে উপযুক্ত পুরস্কার।

পবিত্র ইসলামের সুমহান শিক্ষার নির্যাস থেকে বলা যায়, যাঁরা পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এবার হজে যেতে পারছেন না, হজ আদায় করা হচ্ছে না; তাদের এই আফসোস আর আহাজারি মহান প্রভুর দরবারে রহমত আর বরকতের ভাণ্ডার হয়ে কবুল হবে। তাদের নিয়তের বিশুদ্ধতা আর অন্তরের আর্তনাদ আল্লাহপাক মঞ্জুর করে নেবেন। যদি এমন হয় যে, এবার না যেতে পারার কারণে আগামী বছর শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যাওয়ার জন্য হজে যেতে পারবেন না অথবা আগামী হজ মৌসুমের আগেই ইহধাম ত্যাগ করতে হলো, তবে তাতেও সেই বান্দাকে লোকসানের মুখোমুখি হতে হবে না; বরং মহান আল্লাহ তার পক্ষ থেকে ওই বান্দার আমলনামায় কবুল হজের সওয়াব লিখে দেবেন। আল্লাহপাক আমাদের সব ভালো কাজের উত্তম প্রতিদান দিন।

নামাজ ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম। পবিত্র কোরআনে বিরাশি বার নামাজ পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নামাজকে রাসুল (সা.)-এর বাণীর আলোকে জান্নাতের চাবি হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করাই হচ্ছে ইসলামের বিধান। যদিও কারও কোনো ওজর বা সমস্যা থাকলে ক্ষেত্রবিশেষে বাড়িতে থেকেও নামাজ আদায় করা যাবে। তবে মহামারি চলাকালে ইসলামের পরিস্কার নির্দেশনা রয়েছে এই মর্মে যে, বাড়িতে অবস্থান করে নিজ গৃহেই নামাজ আদায় করতে হবে। আর তা যদি কোনো সংক্রামক ব্যাধির মহামারি হয়ে থাকে তবে তো আরও অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ থেকে নিজের ও অন্যদের বাঁচাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে অবশ্যই নিজ গৃহে অবস্থান করতে হবে। নামাজের জন্য নামাজিদের আহ্বানের শরয়ি মাধ্যম হলো আজান। মহামারি, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা বিপদগ্রস্ততার সময়ে রাসুলে পাকের যুগে এই আজানের বাক্যমালার সঙ্গে একটি অতিরিক্ত বাক্য সংযোজনের ইতিহাস পাওয়া যায়। আর তা হলো- ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম, সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’ অর্থাৎ তোমরা তোমাদের আবাসস্থল অথবা স্বগৃহে তোমাদের নামাজ আদায় করো।

এতে করে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের সমান সওয়াবই মহান আল্লাহ বান্দার আমলনামায় সংযুক্ত করে দেবেন। সুতরাং করোনা মহামারি চলাকালে সরকারের সংশ্নিষ্ট মহল মুসল্লিগণকে নিজেদের বাসগৃহে নামাজ আদায়ের যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা ইসলামেরই নির্দেশনা মাত্র। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাতে স্বল্প সংখ্যক মুসল্লির অংশগ্রহণে দেশের মসজিদগুলোতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বর্তমানে নামাজ আদায় করা হচ্ছে। এমনকি শুক্রবারের জুমার নামাজ এবং গত ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাতও একই পদ্ধতিতে প্রতিপালিত হয়েছে; হয়তো আসন্ন ঈদুল আজহার প্রাক্কালে করোনার প্রভাব হ্রাস না পেলে আমাদের এভাবেই তা আদায় করতে হবে। জীবন বাঁচানোর তাগিদ যেখানে মুখ্য, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সেখানে আবশ্যকীয় নয়; সে কারণেই ইসলাম জনকল্যাণমুখী জীবন বিধান হিসেবে স্বীকৃত।

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...