সাম্প্রতিক শিরোনাম

করোনা কর আমাদের করুণা, হোক মানবতার জয়

এলড্রিক বিশ্বাস: করোনাভাইরাস নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই। চারিদিকে করোনা নিয়ে নানা তথ্য উপাত্ত আমাদের সংবাদপত্র মানে প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, ফেইসবুকে প্রতিদিনই সরগম। থাকছে সংবাদ আর লেখা। আমরা এখন কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি। এই মুহুর্তে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে অনেকেই নিবেদিত আছেন। কেউ ব্যানারে, কেউ স্ব-উদ্যোগে খাদ্যসহ নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করছেন। এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাক। বাংলাদেশে এখন কয়েক কয়েক কোটি স্বচ্ছল ব্যক্তি আছেন যারা ইচ্ছা করলে বর্তমান সময়ে গরীব, দুঃখী, অসহায়দের সহযোগিতা করতে পারেন। তবে যে বিষয়টি একটু উল্লেখ না করলেই নয় তা হল দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

এরা মানসম্মানের দিকে চেয়ে বর্তমান সংকটময় সময়ে অন্যান্যদের মত না পারছেন গণহারে লাইন ধরে সাহায্য নিতে, না পারছেন কাউকে জানাতে। শহরে ও গ্রামে এইরূপ পরিবার অসংখ্য। আমাদের খ্রীষ্টিয় সমাজেও অনেক পরিবার আছে যারা উপরোক্ত মধ্যবিত্তের মধ্যে পড়ে। মন্ডলীর ধর্মীয় গুরুজন, সমাজনেতা, সচেতন ব্যক্তিবর্গদের এ ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করার সময় এসেছে। দেশে সমস্ত কিছু কাটিয়ে উঠার পর মধ্যবিত্তের অনেক সমস্যা থাকবেই, সমাধান হলেতো ভাল , না হলে তা চাপা পড়বে মনের মধ্যে নিঃশব্দ ক্ষেভে। অনেকের জন্য চিন্তার বিষয় তারা কি ভাবে সমবায় সমিতি বা এনজিও’র ঋণের কিস্তির টাকা কি ভাবে শোধ করবে। অন্যান্যদের সাথে আমাদের ক্ষুদ খ্রীষ্টিয় সমাজকেও রক্ষা করতে হবে, উঠে দাঁড়াতে শক্তি যোগাতে হবে।


গতকাল বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ এসেছে, গার্মেন্টস শিল্প অর্থাৎ গার্মেন্টস কারখানাগুলো খোলা হবে, কাজে যোগদানের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে সকল গার্মেন্টস কর্মীদের। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে গতিশীল রাখতে গার্মেন্টস সেক্টর এর ভূমিকাকে বা অবদানকে আমরা যেন ভুলে না যাই। তবে লকডাউনের শেষ পয্যায়ে মাত্র ৭ দিন পর গার্মেন্টস খুলে দিলে এমন কোন ক্ষতি হত না বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। গার্মেন্টস খোলার জন্য বলা ও গার্মেন্টস কর্মীদের কাজে যোগদানের জন্য চাপপ্রয়োগ যথাযথ সিদ্ধান্ত হয়নি এই সন্ধিক্ষণে। আমরা ফুটবল খেলায় দেখি অনেক সময় আত্নঘাতি গোল হয়। করোনা যুদ্ধে মাত্র ৭ দিনের জন্য গার্মেন্টস শিল্প বন্ধ রাখলে অগণিত গার্মেন্টস কর্মী ঢাকার বাহির থেকে ঢাকায় কাজে যোগদানের জন্য চলে আসতো না। প্রয়োজনে চলে আসলেও তারা দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করলে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর আতঙ্ক সৃষ্টি হত না। যদিও গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শেষ মুহুর্তে।


বাংলাদেশে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীষ্টানসহ সকল ধর্মেও মানুষের বসবাস। দেশের যে কোন ক্রান্তিকালে জাতিধর্মে র পরিচয়ের মানবতার সেবায় সকলে যার যা সামর্থ আছে তাই নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমার মনে পড়ে সেই ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দের দুর্ভিক্ষের কথা। আমি তখন আগ্রাবাদস্থ চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র। ছাত্র রাজনীতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত। হাজার হাজার মানুষ চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ সরকার নানা সংকটে দেশ চালাচ্ছে। তারমধ্যে দেশে দেখা দিল খাদ্য সংকট। মানুষের ঘরে নেই চাল। তখনতো বর্তমান সময়ের মত অন্যান্য মুখরোচক খাবার যেমন নুডলস্, সুস্বাদু নান, পিজা এসব ছিল না। মানুষ ছিল ভাতের পাগল। আমরা চট্টগ্রামের টাইগার পাস-আমবাগানে ও যুবরা নেমে পরলাম প্রতি ঘর থেকে ১টি করে আটা রুটি সংগ্রহের জন্য। কনসেপ্টটা এইরকম ছিল, এই সংকটময় সময়ে অনাহারী মানুষকে রুটি খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সেই সময় চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন গ্রুপ রুটি সংগ্রহ করতো। তাই আভ্যন্তরীণ সমস্যা মোকাবেলায় প্রায় ২ মাস এভাবে আমরা অনেকেই ব্যস্ত ছিলাম। ২টি চাউলের জাহাজ সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে চাল নিয়ে আসার কথা ছিল কিন্তু আন্তর্জাতিক চক্রান্তের ফলে সেই জাহাজ আর বাংলাদেশে আসেনি।

ষড়যন্ত্র তখনও ছিল এখনও আছে। ষড়যন্ত্রের এখন কৌশল ও শাখা প্রশাখা গজিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সরকার সেই দুর্ভিক্ষ কাটিয়ে উঠেছিল কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের শেষ ছোবল মেরেছিল ১৯৭৫ খ্রীষ্টাব্দের ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও তাঁর পরিবার, আত্নীয়দের হত্যার মাধ্যমে। আমরা তখন রাস্তায় বের হলে ছোট শিশুরা বলতো ঐ দেখ রুটি টোকানীরা (সংগ্রহকারী) যায়। ১৯৭৪ এর মত সংকট এই সময়ে আসেনি তবে মানুষের সাহায্যের জন্য অনেকে সংগঠন, সংস্থা, ব্যক্তি এগিয়ে এসেছে। তারা সকলে ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। করোনার প্রভাব ও এর ভীতিকর পরিস্থিতি কতদিন মোকাবেলা করতে হবে জানিনা, তবে আমাদেও সবরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা খাদ্য সংকটের সমস্যা নয় এটা অজ্ঞাত এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে কঠিনতম সংগ্রাম। আমরা যথেষ্ট সংযমের পরিচয় দিলে ও নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে করোনা আমাদেও করুণা করতে পারে।


আমরা সৃষ্টিকর্তা পিতা ঈশ্বরের কাছে আকুল প্রার্থনা জানাই আমাদের করোনা ভাইরাস থেকে তুমি রক্ষা কর। কয়েকদিন পর সারা ক্যাথলিক বিশ্বে পূণ্য সপ্তাহ শুরু হবে। পুণ্য সপ্তাহের মধ্যে পুণ্য বৃহস্পতিবার, পূণ্য শুক্রবার ও পুনরুত্থানের অজস্র আশির্বাদে ধুয়ে মুছে করোনা এই পৃথিবী থেকে এই কামনা করছি।

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...