স্কুল শিক্ষক দম্পতি রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুনের মুখে এখন খুশির ঝিলিক, হাসি লেগেই আছে। দুশ্চিন্তার ছায়া অনেকটাই এখন কেটে গেছে। আদরের সন্তান রোকেয়া- রাবেয়াকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সন্তানদের হাসিমাখা মুখ দেখে চোখের কোনে বেয়ে পড়ছে আনন্দাশ্রু। কিছু দিন আগেও মুখে হাসি ছিল না। কারণ তাদের আদরের সন্তান ফুটফুটে রোকেয়া- রাবেয়া অন্য শিশুদের মতো স্বভাবিক ছিল না। তাদের জন্ম ১৬ জুলাই ২০১৬ সালে পাবনার চাটমোহরে। দুইবোন জন্ম থেকেই ছিল মাথা জোড়া লাগা অবস্থায়। স্থানীয় একটা ক্লিনিকে তাদের জন্ম। নাওয়া খাওয়া ভুলে এরপর থেকেই বাবা-মায়ের যত চিন্তা সব দুই সন্তানের সুস্থতা নিয়ে। তারা যখন দিশেহারা দেশের লাখো পরিবারের মতো তাদের পরিবার আলোক বর্তিকা হয়ে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোকেয়া রাবেয়াকে দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর ঐদিন প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে সেখানে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটেরও উদ্বোধন করেন। রোকেয়া-রাবেয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে টানা ৩৩ ঘণ্টা অপারেশন চালিয়ে তাদের মাথা আলাদা করা হয় গত বছরের ০২ আগস্ট।
সার্জারির পর সিএমএইচ হাসপাতালে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে দেখেও আসেন। এর আগেও কয়েকদফা অপারেশন করা হয়। দেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াও হাঙ্গেরির ৩৫ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এতে অংশ নেন। এর আগে সাত মাস তাদেরকে রাখা হয় হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের একটি হাসপাতালে।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল শিশু দুটির সুস্থ জীবনে ফিরে যাওয়ার কথা জানালেন। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটির সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ছবি সবাইকে দেখিয়ে বলেন, ‘আমাদের রাবেয়া-রোকেয়া ভালো আছে’।