ইন্টারনেটের সংক্ষিপ্ত জন্মকথা!
বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট আমদের জিবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে গেলেও এর শুরুটা কিন্তু মোটেও সহজ কিছু ছিল না। এখন সারা বিশ্বের প্রায় ৪৬০ কোটি মানুষ বিভিন্নভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন কিংবা জীবনের কোন না কোন ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছেন। তাছাড়া প্রতিদিন প্রায় ২.৮০ মিলিয়ন টেরাবাইট নতুন ডেটা ও ইনফরমেশন ন্টারনেটের ভার্চুয়াল জগতে যুক্ত হচ্ছে এবং শুধুমাত্র গুগলের ইউটিউবে প্রতিদিন প্রায় ৪.২২ মিলিয়ন ডাটার সম পরিমাণ ভিডিও আপলোড করা হয়ে থাকে। তবে ইন্টারনেটের শুরুটা জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে সেই ১৯৬৯ সালের দিকে। মুলত অসংখ্য গবেষক এবং বিজ্ঞানীর অক্লান্ত পরিশ্রম এবং দীর্ঘ মেয়াদী সাধনার ফলে আজ ইন্টারনেট অনেকটাই সহজলভ্য হয়ে আমাদের কাছে চলে এসেছে। ইন্টারনেটের বিপ্লব ছড়িয়ে দিতে একটি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা ছিল একেবারেই চমকে দেবার মতো। আর সেটি হলো আমাদের চোখে যুদ্ধবাজ এবং কূটকৌশলী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (ডিআরপিএ) বা ডারপা। আসলে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের একটি গবেষণামুলক সংস্থা। যা কিনা সামরিক বাহিনীর জন্য বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ভবিষ্যতের আরো উন্নত প্রযুক্তির সামরিক সাজ সরঞ্জাম এবং যুদ্ধাস্ত্র ডেভলপমেন্টের জন্য গবেষণা করে যায়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই রিসার্চ সেন্টারকেই কিন্তু ইন্টারনেটের আঁতুড়ঘর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মার্কিন সেনাবাহিনীর এই ডারপা গবেষণাগারে ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ব্যাপক গবেষণা ও রিসার্চের পর ১৯৬৯ সালের চুড়ান্ত পরীক্ষা করে দেখা হয় আসলে ভবিষ্যত ইন্টারনেটের মাধম্যে ডাটা ট্রান্সফার বাস্তবে সম্ভব হবে কি না। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালির্ফোনিয়া বিশ্ববিদ্যায়ের গবেষণাগারে একটি নোড বসানো হয় এবং ৩৫০ মাইল দূরুত্বে স্টামফোর্ড বিশ্ববিহ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টারে অপর একটি নোড বসানো হয়। তারপর প্রাথমিকভাবে LOGIN শব্দটি কম্পিউটার ব্যবহার করে নতুন এই গবেষণামুলক ইন্টারনেট সিস্টেমের মাধম্যে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। তবে ক্যা্লির্ফোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানীরা কম্পিউটারের মাধম্যে LO লিখে পাঠানোর পর পরই ইন্টারনেট সিস্টেমটি ক্রাসড করে বসে। আরা তাই মানব ইতিহাসে ইন্টারনেট পরিসেবা ব্যবহার করে বৈজ্ঞানিকদের পাঠানো প্রথম বার্তা ছিল LO। অথচ আজ কিনা ইন্টারনেট সারা বিশ্বের পাওয়ায়র হাউজ অব ইনফরমেশন হিসেবে আনুমানিক কয়েক ট্রিলিয়ন টেরাবাইট ডাটা সংগ্রহ করে রেখেছে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। ধন্যবাদ
(সিরাজুর রহমান)