যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে খুন হওয়া ফাহিম সালেহর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার হন টাইরিজ ডেভন হাসপিল। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হতে পারে।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানায়, ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ফাহিমের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী হাসপিলের যোগসূত্র পেয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল গ্লোবাল শীর্ষক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফাহিমের চিফ অব স্টাফ হিসেবে কাজ করতেন হাসপিল। কাগজে-কলমে ওই পদে থাকলেও কার্যত হাসপিল ছিলেন ফাহিমের ব্যক্তিগত সহকারী।
বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাও এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিমের টুকরো লাশ গত মঙ্গলবার উদ্ধার করে পুলিশ।
ফাহিমের এক লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছিলেন হাসপিল। সেটা টের পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে আপসে অর্থ ফিরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন ফাহিম। তবে হাসপিল সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসে ফাহিমকে হত্যা করেন। ‘উদারতার ঘটনা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিণত হয়েছে’—এমন মন্তব্য করে ওই সূত্র।
ফাহিমের ফ্ল্যাট বরাবর যে লিফট থামে, সেটির ভেতরে থাকা সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, গত সোমবার বিকেলে ফাহিম ও হাসপিল একসঙ্গে ফ্ল্যাটটিতে যান। তখনই সর্বশেষ ফাহিমকে জীবিত দেখা গেছে।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সেদিন টেজার (পলায়নপর সন্দেহভাজনদের আটকাতে পুলিশের ব্যবহৃত বিশেষ অস্ত্র) দিয়ে ফাহিমকে পাকড়াও করার পর ছুরিকাঘাতে তাঁকে হত্যা করেন হাসপিল। পরদিন মঙ্গলবার ফিরে এসে তিনি ফাহিমের দেহ টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে ফেলেন। তারপর আলামত মুছে ফেলার কাজে হাত দেন। সব কাজ শেষ করার আগেই সেখানে ফাহিমের বোন পৌঁছে যাওয়ায় হাসপিল কাজ অসমাপ্ত রেখে পালিয়ে যান।
তদন্তে জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডের আলামত নিশ্চিহ্ন করার জন্য যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো ম্যানহাটনের ওয়েস্ট ২৩ স্ট্রিটের একটি দোকান থেকে কেনা হয়েছে। হাসপিলের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সেগুলো কেনা হয়েছে।