প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেছেন, খিচুড়ি রান্না প্রশিক্ষণের জন্য নয়, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য মিড ডে মিল সঠিক বাস্তবায়নের জন্যে বিদেশে কর্মকতাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ স্কুলে মিড ডে মিল (দুপুরের খাবার) কীভাবে বাস্তবায়ন করে, সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জনে বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে মোট প্রকল্পের অতি অল্প অর্থ ব্যয় ধরা হয়েছে।
এ অর্থ ব্যয় কোনো অপচয় নয় বরং অভিজ্ঞতা অর্জনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাটা রাখা হয়েছে।
সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় স্কুল ফিডিং পলিসি অনুমোদিত হয়েছে। এ পলিসির ভিত্তিতে ১৯ হাজার ২৯৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করেছি। বর্তমানে প্রকল্পটি ১০৪টি উপজেলায়, সেটি ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পর্যায়ক্রমে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করা হবে। সেই নির্বাচনী ইশতেহারকে সামনে রেখে আমরা ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটা প্রকল্প প্রণয়ন করে দাখিল করেছি।
খিচুড়ি কীভাবে রান্না করে সেটার জন্য কিন্তু আমরা বিদেশে লোক পাঠাচ্ছি না। এ প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন হয়নি। গতকাল পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যের সভাপতিত্বে এটার পিইসি মিটিং ছিল।
মিটিংয়ে সেটির বিষয়ে আমাদের কাছে কিছু কোয়ারি করেছে, সেগুলোর আমরা জবাব দেব। জবাবের পরে যদি তারা সন্তুষ্ট হয় তাহলে একনেকে উত্থাপিত হবে। একনেকে অনুমোদিত হলে জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন করতে পারবো।
আরো বলেন, তবে পরিকল্পনা কমিশন এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন দেবে কিনা সেটি তাদের বিষয়। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন কিছু ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন, তার জবাব দেওয়া হবে। এর পর এটি একনেকে উঠবে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য।
বাচ্চাদের আমরা দুপুর বেলা খাবার দেব। খাবারটা হবে দুই ধরনের। তিন দিন বিস্কুট এবং তিন দিন রান্না করা খাবার। বর্তমানে ছয় দিন বিস্কুট দেওয়া হয়। রান্না করা খাবারের মধ্যে খিচুড়িটি সবচেয়ে প্রোটিন-সমৃদ্ধ।
তিনি বলেন, এটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। ৬৫ হাজার ৬২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য মিড ডে মিল চালু করতে হবে।
কীভাবে ম্যানেজ করব, সেই ম্যানেজমেন্ট দেখার জন্য আসলে যে সমস্ত উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশে এই ব্যবস্থা চালু আছে, সেই ব্যবস্থা দেখার জন্য এবং দেশে-বিদেশে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য কম্পোনেন্ট রেখেছি সক্ষমতা অর্জনের জন্য।
এক হাজার সরকারি কর্মকর্তাকে খিচুড়ি রান্না শিখতে বা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে এর অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে অধিদপ্তর। স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণের জন্য তাদেরকে বিদেশ পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জনগণের টাকা খরচ করে এ ধরনের সফরের যৌক্তিকতা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।