করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভয়ে কেউ এগিয়ে না আসায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক সার্জেন্ট’র লাশ সোমবার দাফন করেছে।
সেনা সদস্যের নাম আজিজুল ইসলাম (৬৭)। তার বাড়ি গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন পশ্চিম বাউপাড়া এলাকায়।
মরহুমের স্ত্রী রহিমা বেগম ও নাতীন রাজিয়া সুলতানা মুক্তা জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪১ ঈষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অবসর প্রাপ্ত সার্জেন্ট আজিজুল ইসলাম প্রায় ১৬ বছর আগে গাজীপুরের পশ্চিম বাউপাড়া এলাকায় বাড়ি নির্মান করে স্বপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন। দু’সন্তানের জনক আজিজুলের গ্রামের বাড়ি চট্রগ্রামের সন্দ্বীপ থানার হারানিয়া আফগান বাড়ি এলাকায়। তার দু’ছেলের মধ্যে একজন কুয়েত ও অন্যজন লেবাননে চাকুরি করেন এবং বর্তমানে সেখানে রয়েছেন। প্রায় দেড় বছর ধরে আজিজুল কিডনী ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। তার দু’টি কিডনীই ড্যামেজ হয়ে যায়। তিনি পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী কিডনীর ডায়ালসিস করাতে রবিবার সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (ডায়ালসিস করার আগে) দুপুরে তিনি মারা যান। পরে তার নমূনা পরীক্ষা করা হলে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। সিএমএইচ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় এ্যাম্বুলেন্স যোগে নিহতের লাশ দাফনের জন্য রাত সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুরের বাসায় আনা হয়। নিহতের দু’সন্তান বিদেশে থাকায় লাশ দাফনের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকাসীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে লাশ দাফনের জন্য এলাকার কোন লোকজন এগিয়ে আসেনি। এমনকি এ্যাম্বুলেন্স থেকে লাশ নামাতেও অস্বীকৃতি জানান এলাকাবাসী। উপায়ন্তর না পেয়ে তার পরিবার জরুরী নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানান।
জিএমপি’র মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স’র সহকারী কমিশনার আহসান হাবিব জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের লাশ দাফনে কেউ এগিয়ে আসছে না। এ খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এলাকাবাসী এগিয়ে না আসায় অবশেষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ওই লাশ দাফনের দায়িত্ব নেয়। থানা পুলিশের ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় ধর্মীয় অনুশাসন ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে ভোর রাতে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। এসময় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের একটি টিম সহযোগিতা করেছে।