শহরের ঝুলন্ত তারের সমস্যা, অপসারণ, বিনিয়োগকারী ও গ্রাহকের উদ্বিগ্নতা ইত্যাদি বিষয়কে বিবেচনায় রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় এক সমন্বয় সভা।
রমনাস্থ কমিশনের কার্যালয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংগঠন আইএসপিএবি, এনটিটিএন অপারেটরের প্রতিনিধি এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাগণ রাজধানীতে টেকসই ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদান ক্ষেত্রে নিজস্ব অবস্থান এবং উদ্ভূত প্রতিবন্ধকতা নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান জানান।
কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসানুল কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আইএসপিএবি সভাপতি এম এ হাকিম সমস্যা সমাধানে কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সিটি কর্পোরেশন নগরীর তারের জঞ্জাল অপসারণে উদ্যোগী হওয়ায় উপস্থিত সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বেসরকারি এনটিটিএন অপারেটর সামিট ও ফাইবার অ্যাট হোমের পক্ষ থেকে একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে রাজধানীর অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবস্থাপনার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়।
ফাইবার অ্যাট হোমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রফিকুর রহমান তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও বর্তমান প্রেক্ষিত এ বক্তব্য প্রদান করেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম জানান যে, নগরীতে কোনো ঝুলন্ত তার না রাখার পক্ষে তার সংস্থা। তবে তিনি ঝুলন্ত অবস্থায় তার না রেখে কিভাবে মাটির নিচে দিয়ে তারের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা যায় এ বিষয়ে একটি মডেল প্রদান করেন।
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও জানানো হয় যে তাঁরা এরই মধ্যে ধানমন্ডির রাইফেল স্কয়ার থেকে সাতাশ নম্বর পর্যন্ত ঝুলন্ত তার ব্যবস্থাপনার একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছেন।
উপস্থিত সবাই দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রদর্শিত মডেলের ও কার্যক্রমের ভূয়সী প্রসংসা করেন এবং এ বিষয়ে সকল প্রকার সহযোগিতার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছান।
আমরা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে আমরা যেনো সবাই সবার জায়গা থেকে দেশের আইন, বিধান ও সংশ্লিষ্ট গাইডলাইনের বাইরে না যাই।
ইন্টারনেটের দামের বিষয়ে বলা হয় যে, ট্যারিফ নির্ধারণের বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সাথে বিটিআরসি কাজ করছে এবং একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা চাই নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট, তা আমরা পাবো। সিটি কর্পোরেশন আমাদের কিছুটা সময় দেবে আশা করছি। যেকোনো উদ্যোগই আমরা নিই না কেনো তার ক্ষেত্রে দামের প্রভাব গ্রাহকের উপর পরবে না, তা নিশ্চিত করছি।
কমিশনের লাইসেন্সির কোনো সমস্যা থাকলে অবশ্যই কমিশন তা দেখবে এবং তার সমাধানের চেষ্টা কবে, এটা আশ্বস্ত করছি। বিটিআরসি, এনটিটিএন, আইএসপি অপারেটর এবং সিটি কর্পোরেশন সবার সমন্বিত উদ্যোগের ফলে আমরা অচিরেই এ সমস্যা সমাধান করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদুল আলম, সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা কামাল, বিটিসিএলের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী রাম কৃষ্ণ রায়, সামিট কমিউনিকেশনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার অফিসার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী মোর্তুজা খান, কোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ, আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক মো. এমদাদুল হক এবং বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।