রাজধানীর কোতয়ালী থানার ইসলামপুরের ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখার সামনে থেকে ৮০ লক্ষ টাকা চুরির ঘটনায় ৬০ লক্ষ টাকা উদ্ধারসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ(ডিএমপি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দু’টি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২ জুন ২০২০) সকালে ডিবি কার্যালয়ে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহবুব আলম বিপিএম-সেবা, পিপিএম-বার প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, গত ১০ মে রাজধানীর পুরান ঢাকায় বিভিন্ন শাখা থেকে উত্তোলন করা ন্যাশনাল ব্যাংকের ৮০ লাখ টাকার একটি বস্তা গাড়ি থেকে খোয়া যায়। দিনেদুপুরে ঘটে যাওয়া ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করে ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, দায়ের করা ওই মামলাটি কোতয়ালী থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকটি টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোঃ হান্নান ওরফে ব্রিফকেস হান্নান ওরফে রবিন ওরফে রফিকুল ইসলামসহ সহযোগী, মোঃ মোস্তফা, মোঃ বাবুল মিয়া ও মোছাঃ পারভীন। আর তাদের হেফাজত হতে উদ্ধার করা হয় ৬০ লক্ষ টাকা ও দুটি বিদেশী পিস্তল।
বাকি ২০ লক্ষ টাকা সম্পর্কে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, তারা বিভিন্নভাবে তা খরচ করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আর চক্রের মূলহোতা হান্নানের বিরুদ্ধে ত্রিশের অধিক মামলা রয়েছে।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুর রহমান আজাদ অপরাধের মোটিভ সম্পর্কে ডিএমপি নিউজকে মুঠোফোনে বলেন, গ্রেফতারকৃত হান্নান ও তার সহযোগীরা মূলত টানা দলের সদস্য। ১০ মে দুপুরে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে টাকা নিয়ে যখন ব্যাংকের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা ও একজন সিকিউরিটি গার্ড ইসলামপুর শাখায় টাকা আনতে উপরে ওঠে, তখন একজন সিকিউরিটি গার্ড ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভার গাড়িতে ছিলো। এ সুযোগে হান্নানসহ তার অপরসহযোগীরা সেখানে এসে সিকিউরিটি গার্ড ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভারের সাথে ভাব জমিয়ে বিভিন্ন ধরণের কথা-বার্তা বলতে থাকেন।
তিনি বলেন, টাকা আনতে দেরী হচ্ছে দেখে তারা গাড়ির ড্রাইভারকে উপরে পাঠায়। ড্রাইভার উপরে উঠলে হান্নানের সহযোগীরা সিকিউরিটি গার্ডকে বিভিন্ন কথা-বার্তায় অন্যমনস্ক রাখে। আর হান্নান গাড়ির দরজা খুলে টাকার বস্তা নিয়ে কোনদিকে দৃষ্টিপাত না করে রিকসা নিয়ে আরমনি টোলায় একটি বাসায় চলে যায়। পরবর্তী সময়ে তার সহযোগীদের ২৫ হাজার করে টাকা দিয়ে বাকি টাকা সে নিজের কাছে রেখে দেয় এবং বিভিন্নভাবে তা খরচ করতে থাকে।
মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে গেন্ডারিয়া ও যাত্রাবাড়ী থানায় পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে যোগ করেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুর রহমান আজাদ।
গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।