নারী হয়েও দেশ মাতৃকার স্বাধীকার আ’ন্দোলনে জীবন বা’জি রেখে মু’ক্তিযুদ্ধে ঝাঁ’পিয়ে পড়েছিলেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ভানু নেছা (৮০)। কিন্তু ভাল নেই স্বাধীনতা যু’দ্ধের বীর সেনানী তালিকাভুক্ত এই নারী মু’ক্তিযোদ্ধা। দীর্ঘদিন হলো তিনি প্যা’রালাইসিসে আ’ক্রান্ত। চলাফেরা করতে পারেন না। এর মধ্যে ছয় মাস আগে স্ট্রোকে আ’ক্রান্ত হয়ে গু’রুতর অ’সুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।
বর্তমানে নিজ বাড়িতে ভা’ঙ্গা কুঁড়ে ঘরে মৃ’ত্যুর প্রহর গুনছেন। অর্থাভাবে মায়ের সুচিকিৎসা করাতে পারছেননা ভানু নেছার দরিদ্র সন্তানরা। স্থানীয় মু’ক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে মহান মু’ক্তিযুদ্ধে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় বিভিন্ন সম্মুখযু’দ্ধে অংশ নেন নারী মু’ক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা।
সে সময় জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে গো’লা-বা’রুদ মাথায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের বা’ঙ্কারে বা’ঙ্কারে পৌঁছে দিতেন তিনি। একবার তিনি গু’লিতে আ’হতও হয়েছিলেন। যার ফল স্বরুপ তিনি মু’ক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং নিয়মিত ভাতা প্রাপ্ত পান। কিন্ত এখন জীবনের এই শেষ সময়ে এসে গু’রুতর অ’সুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। এখন আর কেউ তাঁর খবর নেয়না। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের তেথুঁলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ভানু নেছার স্বামী আব্দুল প্রামাণিক মা’রা যান কয়েক বছর আগে।
ভানু নেছার দুই ছেলে দিনমজুরের কাজ করেন। মায়ের সরকারি ভাতা এবং নিজেদের সামান্য আয় দিয়ে কোনমতে চলে তাদের সংসার। তাই অর্থাভাবে মায়ের সুচিকিৎসা করতে পারছেননা ভানু নেছর দরিদ্র ছেলেরা। ভানু নেছার দুই ছেলে ইউনুস আলী ও শহিদুল ইসলাম জানান, তার মা বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। তাকে কোলে করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে হয়। ইশারায়, আকার-ইঙ্গিতে কথা বলেন। তার শরীর খুব দূর্বল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্যা’রালাইসিস হয়ে পড়ে আছেন। ছয় মাস হলো ঠিকমতো খেতে পারেন না। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।
কিন্তু চিকিৎসা করানোর টাকা তাদের নেই। সাঁথিয়া উপজেলার মু’ক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ক’মান্ডার আব্দুল লতিফ জানান, একাত্তরে নন্দনপুরে যখন পাক বাহিনীর সাথে যু’দ্ধ শুরু হয়, তখন আমরা বা’ঙ্কারে ছিলাম। ঠিক ওই সময় এই ভানু নেছা আমাদের অনেকভাবে সহযোগিতা করেছিল। আমাদের গো’লাবা’রুদ ফুরিয়ে গেলে আমি তাকে চিঠি লিখে সাঁথিয়া থানায় গিয়ে গো’লাবা’রুদ আনতে বলেছিলাম। তখন সে মাজায় কাপড় বেঁধে থানা থেকে গো’লাবা’রুদ নিয়ে আমাদের দিয়েছিল। নন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন স্বাধীনতার স্বপক্ষের বর্তমান সরকারকে ভানু নেছার চিকিৎসায় ব্যবস্থা গ্রহণের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম জামাল আহমেদ জানান, আমি ইতিমধ্যে তার খোঁজখবর নিয়েছি। তার বাড়িতে গিয়ে তাকে দেখেছি। মুলত তিনি বয়সের ভারে ন্যুজ্ব হয়ে পড়েছেন। তারপরও প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে অবশ্যই তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তাৎক্ষনিকভাবে পরিবারকে নগদ কিছু অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে।