বদলীর আদেশের পরে দুই মাসেও কর্মস্থল ত্যাগ না করে দায়িত্বভার হস্তান্তরে টাল বাহানা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে পাবনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে।
নিজ অনুসারী ঠিকাদার সিন্ডিকেটকে বিশেষ সুবিধা দিতে এবং নিজেরকৃত অনিয়ম ঢাকতে যেকোন মূল্যে আগামী জুন মাস পর্যন্ত পাবনায় থাকার পরিকল্পনায় নতুন যোগদান করা নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমানকেও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি তিনি।
পাবনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, পাবনায় যোগদান করার পর থেকেই এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়া নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
নিজের অনুসারী একটি বিশেষ ঠিকাদারী সিন্ডিকেটকে গড়ে তুলে, তাদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে বড় বড় প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে দেন।
এমনকি নীতি নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে নিজ কার্যালয়ে বিতর্কিত ঠিকাদারদের সাথে নিয়ে থার্টি ফাস্ট পার্টি, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে ভোজসভার আয়োজনও করতেন তিনি।
সর্বশেষ, করোনায় ত্রাণ তহবিল গঠনের নামে ঐ ঠিকাদারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চাঁদাবাজিতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি।
অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িত থাকায় গত ২৫ মার্চ একেএম বাদশা মিয়াকে তার কর্মস্থল পাবনা থেকে এলজিইডি সদর দপ্তরে বদলী করা হয়।
তার জায়গায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মাদারীপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমানকে পদায়ন করা হয়।
লিখিত পত্রে এই আদেশ জনস্বার্থে এবং অবিলম্বে কার্যকরের কথা বলা হলেও, দীর্ঘ দেড় মাসেও দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি একেএম বাদশা মিয়া।
এ ব্যপারে সদ্য পদায়ন হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, সরকারী আদেশে যোগদান করার জন্য আমি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাবনায় এসেছি। তবে, ১৪ মে তারিখ পর্যন্ত দায়িত্বভার বুঝে পাইনি। আশা করছি দুই এক দিনের মধ্যেই দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেয়া হবে।
দায়িত্বভার বুঝিয়ে না দেয়া প্রসঙ্গে মুঠোফোনে বদলীকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যপারে বিষয়টি নিয়ে পড়ে কথা বলবেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি পাবনা কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি দাতাসংস্থার অর্থায়নে পাবনায় এলজিইডির তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে বড় ধরণের অনিয়ম করেছেন একেএম বাদশা মিয়া ও তার অনুসারী ঠিকাদাররা।
সে সব অনিয়ম ঢাকতে এবং তাদের কাজের ৩৬ কোটি টাকার বিল প্রদান করতেই যেকোন মূল্যে জুন মাস পর্যন্ত পাবনায় থেকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।