ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের নজিমুদ্দিন (৮০) ভিক্ষা করে সংসার চালান। ঘর মেরামতের জন্য দুই বছর ধরে অনেক কষ্টে ১০ হাজার টাকাও জমিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বজুড়ে হঠাৎ করোনা ভাইরাস মহামারি দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে পৃথিবীর বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দেশের মানুষের কষ্ট সইতে না পেরে সেই জমানো টাকা সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করে দেন ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন। এরপর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে নাজিমুদ্দিনকে ভিটেমাটি ও পাকা বাড়ি করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
অন্যদিকে বৃদ্ধ নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি খুব খুশি। আমাকে আর ভিক্ষা করা লাগবে না। আমার পরিবারের আর কোনো কষ্ট থাকবো না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাড়ি-ঘর এবং দোকান করে দিয়েছে। এছাড়া ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে তার অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসাও করা হয়েছে। এখন থেকে দোকান করব আর দোকান থেকে আয় করা টাকা দিয়ে পরিবার চালাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে চান তিনি এবং তিনি কেঁদে বললেন শেখ হাসিনা আরও ১০০ বছর বেঁচে থাকুক।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোববার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে নতুন বাড়ির চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বৃদ্ধ ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন আগে নিজ গ্রামে একটি সরকারি খাস জমিতে একটি কাঁচা ঘরে বসবাস করতেন। এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সেখানে ১৫ শতাংশ জমি দেওয়া হয়েছে। ওই জমিতে তাকে দুই কক্ষের একটি পাকা ঘরও করে দেওয়া হয়েছে। নাজিম উদ্দিনকে যাতে আর কখনো ভিক্ষা করতে না হয়, সেজন্য তাকে একটি দোকানও করে দিয়েছে সরকার।
এতদিনের কষ্টের জীবন শেষে জরাজীর্ণ মাটির ঘর ছেড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী সেই ‘দাতা ভিক্ষুক’ রোববার (১৬ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের আধুনিক পাকা ঘরে উঠবেন। নতুন পাকা ঘরের চাবিও তুলে দেওয়া হবে তার হাতে।