সাম্প্রতিক শিরোনাম

বর্তমানে চলমান কোল্ড ওয়ার নিয়ে একটি সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ

সিরাজুর রহমান: সারা বিশ্বে সৃষ্টি হওয়া নতুন কোল্ড ওয়ারের অংশ হিসেবে এখন পরাশক্তিধর দেশগুলো তাদের সীমানা লংঘন করে অন্যের আকাশে উস্কানিমুলক নজরতদারি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপ, স্কানিভিয়া অঞ্চল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের আকাশে মার্কিন ও তার ন্যাটো জোটের মধ্যে যুদ্ধবিমান ও বোম্বার ইন্টারসেপ্ট পাল্টা ইন্টারসেপ্টের হার কোল্ড ওয়ার যুগের সমাপ্তির পর বর্তমানে ভয়াবহ আকারে পৌছে গেছে। বিশেষ করে আলাস্কার আকাশে মার্কিন এফ-২২ সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার টিইউ-৯৫ বিয়ার বোম্বার ইন্টারসেপ্ট করার পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের আকাশে রাশিয়া তার বেশ কিছু সংখ্যক এসইউ-২৭ জেট ফাইটার দিয়ে একটি মার্কি বি-৫২ এবং নজরদারি বিমানকে ইন্টারসেপ্ট করে। তার সাথে নেদারল্যাণ্ডসের বিমান বাহিনীর এফ-১৬ জেট ফাইটার রাশিয়ার দুটি টিইউ-৯৫ বিয়ার বোম্বারকে ইন্টারসেপ্ট করে নিজ দেশের আকাশ সীমার বাহিরে বের করে দেয়। এদিকে নরওয়ের আকাশেও রাশিয়ার বিমান প্রতি নিয়ত ইন্টারসেপ্ট করে যেতে হচ্ছে। আবার দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের চলছে ঠিক একই ধরণের সামরিক পেশিশক্তি প্রদর্শন এবং আকাশ আগ্রাসন। যদিও অবশ্য এসব ইন্টারসেপ্টে কেউ কারো বিমান শুট ডাউন বা মিসাইল ফায়ারের সাহস পায় না। তবুও এই ধরণের রেষারেষিতে ভবিষ্যতে ঘটে যেতে পারে বড় আকারের বিপর্যয় বা যুদ্ধ।

আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ও চীনকে কৌশলগতভাবে মোকাবেলা করার জন্য সারা ইউরোপ জুড়ে ১৫০টি বা তার বেশি সংখ্যক বি-৬১ গ্রাভেডী নিউক (সর্বোচ্চ ৩২০ কিলোটন টিএনটি) নিউক্লিয়ার অস্ত্র বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটিতে মোতায়েন করে রেখেছে। এখানে মূলত রাশিয়াকে কৌশলগতভাবে মোকাবেলা করা এবং পাশাপাশি চারদিক থেকে পরিকল্পনা মাফিক ঘিরে ফেলার জন্য মার্কিন প্রশাসন নিজস্ব ছক মোতাবেক তুরস্ক, জার্মান, নেদারল্যান্ড এবং বেলজিয়ামে থাকা ছয়টি সামরিক ঘাঁটিতে বি-৬১ নিউক বোম্বস মোতায়েন করে রেখেছে। তাছাড়া মনে করা হয় রাশিয়া এবং চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক সক্ষমতা অর্জন এবং হুমকি মোকাবেলায় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বিশেষ করে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল এবং পূর্ব ইউরোপে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে অত্যন্ত গোপনে শত শত নিউক্লিয়ার মিসাইল মোতায়েন করে রেখেছে। বিশেষ করে তুরস্কের ইন্সিরলিক বিমান ঘাটিতে ৫০টি এবং বেলজিয়ামের ক্লেইন ব্রগেল এয়ার বেসে ১০-১২ টি বা তার কাছাকাছি স্ট্রাটিজিক বি-৬১ গ্রাভিটি নিউক বোম্বস ডিপ্লয় করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার বলে থাকেন যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী তুরস্কের বিমান ঘাঁটিতে থাকা অর্ধেক নিউক্লিয়ার অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ তুরস্কের সামরিক বাহিনীর হাতে দিয়ে রেখেছে। যা কিনা একটি শতভাগ মিথ্যা বা বনোয়াট তথ্য।

প্রথমত, সুপার এয়ার ক্রাফট ক্যারিয়ার এবং যুদ্ধ বিমান বা বোম্বার সক্ষমতা এবং সংখ্যার বিবেচনায় রাশিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপেক্ষা যথেষ্ঠ পিছিয়ে থাকলেও স্ট্র্যাটিজিক নিউক্লিয়ার এণ্ড থার্মো নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স এবং ইন্টার কন্টিন্যান্ট্যাল ব্যালেস্টিক মিসাইলের সংখ্যা এবং সক্ষমতায় এ মুহুর্তে বিশ্বের বুকে পুতিনের দেশ রাশিয়া প্রথম স্থান দখল করে রেখেছে। আর এ হিসেবটি কিন্তু মার্কিন প্রশাসনের খুব ভালো করেই জানা আছে। তাছাড়া মার্কিন ও তার ন্যাটো জোট এবং রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক কিন্তু মোটেও কোন ভালো অবস্থানে নেই। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার আগ্রাসী নীতি এবং সাংঘার্ষিক সমর কৌশল ন্যাটো জোটের জন্য খুবিই বিপদজনক হয়ে দেখা দিয়েছে।

তাই ভবিষ্যতে যে কোন কারণে পূর্ব ইউরোপে সামরিক সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠলে শেষ পর্যন্ত পারমাণবিক যুদ্ধে রুপ যে নিবে না তা কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তাছাড়া রাশিয়ার নাকের ডগায় বা একেবারেই সীমান্তের কাছে শতশত মার্কিন নিউক ওয়েপন্স ডিপ্লয় করাকে ক্রেমিলিন সরকার মোটেও ভালো চোখে দেখছে না। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠলে রাশিয়ার পুতিন সামরিক বাহিনীর মিসাইল হামলার প্রথম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে ইউরোপের আশপাশে থাকা মার্কিন নিউক সামরিক ঘাঁটিগুলো। এখানে তুরস্ক, বেলজিয়াম, জার্মান, নেদারল্যাণ্ড আসলে মার্কিন নিউক নিজ দেশে ডিপ্লয়ের সুযোগ করে দিয়ে কার্যত পরোক্ষভাবেই তারা নিজ দেশকেই ভবিষ্যত রাশিয়ার পরমাণু হামলার ঝুঁকীর মুখে ফেলে দিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা তার অসংখ্য সামরিক ঘাঁটিতে বি-৬১ বার তার চেয়ে বেশি ধব্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন নিউক্লিয়ার যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করে কার্যত নিজের মূল ভূ-খণ্ডকে আরো সুরক্ষিত এবং নিরাপদ করার কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছে। তাছাড়া মহাসাগরের বুকে লুকিয়ে থাকা মার্কিন ওহিও ক্লাস সাবমেরিনে শতশত নিউক ওয়ারহেড সমৃদ্ধ ট্রাইডেন্ট-২/৫ ইন্টার কন্টিন্যানটাল ব্যালেস্টিক মিসাইল মজুদ থাকায় রাশিয়া সহসাই মার্কিন মূল ভূ-খণ্ডে হামলার কোন সুযোগ পাবে বলে মনে হয় না। তাছাড়া ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হলে প্রথম অবস্থায় ইউরোপে থাকা মার্কিন স্ট্র্যাটিজিক নিউক বেসগুলো সরাসরি রাশিয়ান তোপল-এম কিম্বা ইস্কেন্দার এম ট্যাক্টিক্যাল নিউক ব্যালেস্টিক কিংবা ক্যালিবার ক্রুজ মিসাইলের দ্বারা ভয়াবহভাবে আক্রান্ত হতে পারে। আর এক্ষেত্রে যাই হোক না কেন, মুল ক্ষতিটা কিন্তু মার্কিন নিউক মজুদ থাকা ইউরোপের দেশগুলোকে সবার আগে বহণ করতে হবে।

যেখানে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ১৯৪২ সালে জাপান পালহার্বারে বিমান হামলায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও মার্কিন মূল ভূখণ্ড কিন্তু সব সময়ই ছিল একেবারেই সুরক্ষিত এবং নিরাপদ। বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপের প্রত্যেকটি দেশ ক্ষত বিক্ষত হলেও মার্কিন মুল ভূখণ্ডকে একটি বুলেটের আচড়ও কিন্তু সইতে হয় নি। সেদিক দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বেশ ভাগ্যবানই বলা চলে। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সভিয়েত ইউনিয়নে প্রায় তিন কোটি লোক মৃত্যুবরণ করেছিল।

আবার বিষয়টি এমনও হতে পারে যে, ইউরোপের ছয়টি সামরিক ঘাঁটিতে শতাধিক মার্কিন নিউক ওয়েপন্স মোতায়েন থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও মোতায়েনকৃত বি-৬১ গ্রাভেডী নিউক বম্বসগুলো একেবারেই ডামি, ফেইক বা নকল। আবার যে দেশগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে তারাও হয়ত আদৌ জানেই না এগুলো রিয়েল না ডামি। এখানে মুলত রাশিয়াকে প্রবল চাপে রাখা এবং পূর্ব ইউরোপে সার্বিক রাশিয়ার আগ্রাসনকে প্রতিহত করা এবং পাশাপাশি এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনকে যতটা সম্ভব নিষ্ক্রিয় করে রাখার কৌশলের অংশ হিসেবে সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা প্রায় ছয় শতাধিক মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স মোতায়েন করার বিষয়টি অনেকটাই ইচ্ছাকৃতভাবেই এবং অতিরঞ্জিত আকারে প্রকাশ্যে আনা যে হচ্ছে না তা কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...