বাইরে কারখানা বন্ধের নোটিশ কিন্তু ভিতরে চলছে রমরমা কাজ। রাজধানীর অদূরে সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার নরসিংহপুরের হা -মীম গ্রুপের এই পোশাক কারখানার প্রধান ফটকে বড় করে টানানো রয়েছে কারখানা ছুটির নোটিশ। সেখানে করোনার কারণে এই পোশাক কারখানাটি আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটির নোটিশ টানানো রয়েছে। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেল বেশ কয়েকটি শাখায় গোপনে শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। চাকরি হারানোর ভয়ে তারা কোনো প্রতিবাদ কিংবা কাজে যোগ না দিয়েও পারছে না শ্রমিকরা।
অথচ করোনায় আক্রান্ত হওযার ঝুঁকি নিয়েই ভেতরে কাজে ব্যস্ত হাজারো শ্রমিক। কাজে যোগ না দিলে ছাঁটাইয়ের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে আসছে শ্রমিকরা। এমন দৃশ্য এখন দেশের বিভিন্ন শ্রমঘন পোশাক কারখানা এলাকায়। সোমবার এমনই একটি দৃশ্য চোখে পড়েছে রাজধানীর নিকটতম শিল্পাঞ্চল এলাকা আশুলিয়ায়।
কয়েকজন শ্রমিক এই প্রতিবেদককে জানান, গেটের বাইরে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ছুটির নোটিশ টানানো হলেও টেলিফোনে আমাদেরকে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যথায় চাকরি থেকে বরখাস্ত করারও হুমকি দেয়া হচ্ছে। অগত্যা আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজে যোগ দিয়েছি। কাজে যোগ দেয়া কোনো শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তারমূলক পোশাক বা অন্য কোনো সরঞ্জাম দিচ্ছে না বলেও তারা জানান। এই অবস্থায় যেসব শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে তারা চরম ঝুঁকিতে আছেন বলেও জানা যায়।
রেজা (ছদ্দনাম) নামের এক শ্রমিক জানান, আমি স্যুয়িং সেকসনে কাজ করি। এখানে স্যুয়িং সেকসন ছাড়াও ফিনিশিং সেকসনেও কাজ চলছে দেদারছে। শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফিনিশিং সেকসনের রীতা (ছদ্দনাম) নামের এক নারী শ্রমিক জানান, আমরা সাধারণ মানের মাস্ক পরেই কাজ করছি। হ্যান্ড গ্লাভস বা অন্য কোনো প্রতিরক্ষা মূলক পোশাক আমাদের নেই। স্যুয়িং এবং ফিনিশিং এই দুই সেকসনে সব মিলিয়ে এক হাজার থেকে ১২শ’ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছে।
হামীম গ্রুপের নরসিংহপুর জোনের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম জানান, আমাদের আশুলিয়া জোনে সব মিলিয়ে ৮ থেকে ১০ শাখা বা ইউনিট রয়েছে। অন্য সবকটি ইউনিট কাজ বন্ধ রয়েছে তবে চলতি মাসেই একটি শিপমেন্ট থাকায় কিছু কাজ জরুরী ভিত্তিতে করতে হচ্ছে। শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করেই আমরা কাজ করাচ্ছি, কাউকে বাধ্য করা হচ্ছে না। আর আমরা প্রত্যেক শ্রমিকের নিরাপত্তা মূলক পোশাক দিয়েই কাজে নিয়ে আসছি