পৃথিবীর প্রতিবেশী এ গ্রহের মেঘে জীবসত্তা ভাসছে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। হাওয়াই এবং চিলির আটাকামায় টেলিস্কোপ ব্যবহার করে একদল বিশেষজ্ঞ শুক্র গ্রহের মেঘের আস্তরণ পর্যবেক্ষণ করেন। এতে তারা ফসফিন গ্যাসের অস্তিত্ব শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। এই গ্যাস পৃথিবীতে জীবিত প্রাণির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
যুগ যুগ ধরে চলছে ভিনগ্রহের প্রাণি খোঁজার চেষ্টা। মঙ্গল গ্রহে প্রাণ আছে কিনা, তা নিয়ে একের পর এক গবেষণা চললেও যথাযথ প্রমাণ মেলেনি। তবে গবেষণার কাজ থেমে থাকেনি। লাল ভূপৃষ্ঠে হন্যে হয়ে প্রাণ খুঁজছে নাসার পাঠানো রোভার। কিন্তু এরই মাঝে মঙ্গলের গবেষণাকে ছাপিয়ে খবরের শিরোনামে এখন শুক্র গ্রহ।
কারডিফ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেন গ্রিভস বলেছেন, এই পৃথিবীর বাইরে অন্য কোথাও জীবনের সন্ধান পেতে আমি পুরো ক্যারিয়ার আগ্রহী ছিলাম। তাই এমন সম্ভাবনা দেখে সত্যিই আমিই বিস্মিত। কিন্তু হ্যাঁ, আমাদের গবেষণায় কোথায় ঘাটতি আছে তা বলার জন্য লোকজনকে উৎসাহিত করছি। আমাদের কাগজপত্র ও উপাত্তে সবার প্রবেশাধিকার আছে, এভাবেই বিজ্ঞান কাজ করে।
পৃথিবীর অত্যন্ত কাছে ভেনাস বা শুক্র গ্রহের অবস্থান। যা আকারে প্রায় পৃথিবীর সমান।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, শুক্রর বায়ুমণ্ডলে ফসফিন নামের এক ধরনের গ্যাসের সন্ধান পেয়েছেন তারা। বিবর্ণ এই গ্যাসের গন্ধ রসুন এবং পচে যাওয়া মাছের গন্ধের মতো। পৃথিবীতে সাধারণত এটি প্রাকৃতিকভাবে ব্যাকটেরিয়া অথবা ক্ষয়ে যাওয়া জৈব পদার্থ থেকে উৎপন্ন হয়। এর জীবাণুগুলো পেঙ্গুইনের মতো প্রাণীর অন্ত্রে ও অক্সিজেন কম আছে এমন জলাবদ্ধ পরিবেশে থাকে। এই গ্যাস শিল্প কারখানায় তৈরি করা যায়, কিন্তু শুক্র গ্রহে কোনও কারখানা নেই এবং নিশ্চিতভাবেই নেই পেঙ্গুইন। তাহলে কেন গ্যাসটি সেখানে? এমন প্রশ্ন থেকেই প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বাইরে প্রাণের উপস্থিতির সবচেয়ে চমৎকার আলামত দেখতে পেয়েছেন তারা।