চাঁদ থেকে মাটি এবং নুড়ি সংগ্রহ করে বৃহস্পতিবার বেজিংয়ের সময় অনুযায়ী রাত ১১টা ১০ মিনিটে পৃথিবীতে ফেরার যাত্রা শুরু করেছে চীনের মহাকাশযান ‘ছাংওয়-৫’। তার খানিক আগেই চাঁদের মাটিতে দেশের পতাকা উত্তোলন করে এই মহাকাশযানটি। শুক্রবার ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (সিএসএনএ)-এর পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে সেই ছবি।
১৯৬৯-এর পরে ২০২০। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে আবারও চাঁদের বুকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করল কোনও দেশ। প্রথম নজিরটি ছিল আমেরিকার। দ্বিতীয়টি গড়ল চীন। একই সঙ্গে মহাকাশযানটিকে ফেরাতে পৃথিবীর বাইরে থেকে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ সারার কৃতিত্ব এই প্রথম এল চীনের কাছে।
চাঁদের ভূপৃষ্ঠ থেকে মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণের মুহূর্তটি সম্প্রচার করা হয় চীনের প্রচার মাধ্যমগুলিতে। দেখা যায়, কিছুক্ষণের চোখ ঝলসানো আলোর ঝলকানির মধ্যেই চাঁদের মাটি ছেড়ে শূন্যের দিকে পাড়ি দিচ্ছে মহাকাশযানটি। সেটির ‘সারফেস ল্যান্ডিং মেকানিজ়ম’-এর নীচে লাগানো একটি ক্যামেরার মাধ্যমেই তুলে ধরা হয় এই ছবি।
যে-কারণে আগ্নেয়গিরির আধিক্য আছে এমন অঞ্চল ‘মনস রুকমার’-এ অবতরণ করানো হয় মহাকাশযানটিকে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এখান থেকে সংগ্রহিত নুমনার বয়স ১৩০ কোটি বছরের বেশি হওয়ার কথা নয়।
ভূপৃষ্ঠ খুঁড়ে নমুনা তোলার পাশাপাশি ‘যন্ত্রচালিত হাতে’ পৃষ্ঠের উপর থেকেও নমুনা সংগ্রহ করেছে ছাংওয়-৫। এই নমুনা চাঁদের উৎস সংক্রান্ত গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হবে, জানিয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি এগুলির মাধ্যমে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহটির আগ্নেয়গিরি সম্পর্কিত তথ্যের অনুসন্ধান করার চেষ্টাও চালানো হবে।
মিশনটি সফল হলে আমেরিকা এবং রাশিয়ার পরে চীনই হবে চাঁদ থেকে নুমনা সংগ্রহ করে আনা তৃতীয় দেশ। তবে আমেরিকার ‘অ্যাপোলো’ কিংবা রাশিয়ার ‘লুনা ল্যান্ডারের’ তুলে আনা নমুনা অনেক পুরনো, জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদ থেকে শেষবার নমুনা সংগ্রহিত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যা থেকে ছাংওয়-৫-এর আনা নমুনায় পার্থক্য থাকবেই।