মঙ্গলের গ্রহাণুর ধাক্কায় ৪০০ কোটি বছর আগে শুকিয়ে যাওয়া ব-দ্বীপের ছবি তুলে পাঠাল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোবট যান পারসিভিয়ারেন্স। শুধু শুকিয়ে যাওয়া নদীর ব-দ্বীপই নয় বরং এবড়োথেবড়ো পাথুরে জমি, মেটে রঙে একাকার হয়ে যাওয়া ধূ ধূ প্রান্তর ও আকাশ- সবই ধরা পড়েছে ওই রোবট যানের ক্যামেরায়।
১৪২টি ছবি জুড়ে রোবট যানের আশপাশের একটি পরিদৃশ্য তৈরি করেছে নাসা; যার মাধ্যমে আরও ভালো করে মঙ্গলের দৃশ্যপটের সঙ্গে পরিচিতি ঘটছে সাধারণ মানুষের।
১৯ ফেব্রুয়ারি লালগ্রহের মাটি ছুঁয়েছে পারসিভিয়ারেন্স। অবতরণের সময়ই পাথুরে মঙ্গলপৃষ্ঠের একটি ছবি পাঠিয়েছিল সেটি। তার সঙ্গে নতুন ছবিগুলো হুবহু মিলে যায়।
২১ ফেব্রুয়ারি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরার মাধ্যমে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে শতাধিক দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে পারসিভিয়ারেন্স। এই মুহূর্তে মঙ্গলের জেজেরো গহ্বরে অবস্থান করছে পারসিভিয়ারেন্স। সেখান থেকেই পারিপার্শ্বিক দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছে তার ১৩৫-৪০০ মিলিমিটারের মাস্টক্যাম-জেড ডুয়াল ক্যামেরা, যার লেন্স দিয়ে তোলা ছবি ৩০ হাজার পিক্সেল পর্যন্ত জুম করে দেখা যায়।
মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে কোন ধরনের নুড়ি, পাথর পরীক্ষার জন্য পৃথিবীতে আনা হবে; তা ওই ক্যামেরার মাধ্যমেই ঠিক হবে। অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড স্পেস এক্সপ্লোরেশন এবং সান ডিয়াগোর মালেনি স্পেস সায়েন্স সিস্টেমস যৌথভাবে মাস্টক্যাম-জেডের খুঁটিনাটি সব যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি তৈরি করেছে।
নাসা যে দৃশ্য প্রকাশ করেছে, তাতে বহুদূরে অবস্থিত পর্বতগাত্রও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এমনকি ৩ থেকে ৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বস্তুকেও স্পষ্ট দেখা সম্ভব এই ছবিতে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা থ্রি-ডি ছবি এবং ভিডিও তুলতেও সক্ষম।
মঙ্গলে কখনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না তা জানতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলে পৌঁছায় পারসিভিয়ারেন্স। কয়েক বছর মাটি খুঁড়ে সেখান থেকে পাথর, জীবাশ্ম এবং মাটির নমুনা সংগ্রহ করে ২০৩০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে পাঠানোর কাজ করবে সেটি। গবেষণাগারে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন বিজ্ঞানীরা। জানাবেন- লালগ্রহকে আদৌ মানুষের বসবাসের উপযুক্ত করে তোলা যাবে কি না।
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা