‘পর্তুগালের লিসবনে বুধবার রাতে লেগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে পা রাখলো পিএসজি। আক্রমণাত্মক ফুটবলে আলো ছড়ানো দুই দলের লড়াইয়ের শুরুতেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ পায় পিএসজি। মাঝমাঠে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে পড়লেন নেইমার।’
‘কিন্তু ওয়ান-অন-ওয়ানে করে বসলেন অবিশ্বাস্য ভুল, নিলেন লক্ষ্যভ্রষ্ট শট। দলের সেরা তারকার এমন সুযোগ হাতছাড়া করায় হতাশায় মুখ ঢেকে ফেললেন পিএসজি কোচ, মাথায় হাত বেঞ্চে কিলিয়ান এমবাপেদের। বল দখলে প্রতিপক্ষ এগিয়ে থাকলেও আক্রমণ ও গোলে শট নেওয়ায় এগিয়ে ছিল আতালান্তা। সেই ধারাবাহিকতায় ২৬তম মিনিটে গোলের দেখা পায় তারা। সতীর্থের পাস প্রতিপক্ষের পা ছুঁয়ে ডি-বক্সে ফাঁকায় পান মারিও পাসালিচ। প্রথম ছোঁয়ায় কোনাকুনি উঁচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন এই ক্রোয়াট মিডফিল্ডার। আক্রমণে বাড়তি মনোযোগ দিতে গিয়ে প্রথমার্ধে বারবার নিজেদের ঘর অরক্ষিত করে ফেলা আতালান্তা বিরতির পর খেলার ধরনে কিছুটা পরিবর্তন আনে।’
‘তারপরও, এই অর্ধে প্রথম সুযোগটি পায় তারা। তবে, কাজে লাগাতে পারেনি তারা; পাঁচ গজ দূর থেকে বেরাত জিমসিতির ভলি পোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। এই ম্যাচের আগে মৌসুমে ১১৫ গোল করা আতালান্তা দুই মিনিটের ব্যবধানে দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করতে পারেনি তারা।’
‘দশম মিনিটে হান্স হাতেবোরের হেড লাফিয়ে ঠেকানোর পর মাত্তিয়া কালদারার হেডও অসাধারণ নৈপুন্যে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন কোস্টা রিকার গোলরক্ষক।.পাঁচ মিনিট পর বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠেন নেইমার। মাঝমাঠ দিয়ে ছুটে যান মাউরো ইকার্দি। ব্রাজিলিয়ান তারকা শট নিতে পারতেন, সতীর্থকে পাসও দিতে পারতেন। কিন্তু শেষে গিয়ে শূন্যস্থানে বল বাড়ান তিনি, পিএসজি শিবিরে বাড়ে হতাশা।’
‘দুই মিনিট পর পাল্টা জবাব দিতে পারতেন নেইমার। তবে ২০ গজ দূর থেকে তার জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট। বিরতির আগে ফের গোলরক্ষককে একা পান তিনি। তবে দুরূহ কোণ থেকে উড়িয়ে মেরে আবারও হতাশা উপহার দেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার।’
‘তিন মিনিটের ব্যবধানে ভালো দুটি সুযোগ নষ্ট হয় পিএসজির। বদলি নামা এমবাপের ৭৩তম মিনিটের শট গোলরক্ষকের পায়ে প্রতিহত হয়। আর দুর্বল শটে হতাশা বাড়ান নেইমার। ৮০তম মিনিটে শট নিতে দেরি করে আরেকটি সুযোগ হারান চোট কাটিয়ে ফেরা এমবাপে।’
‘সময় ফুরিয়ে আসছিল, ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা জেঁকে বসেছিল পিএসজি শিবিরে। ভয়ডরহীন ফুটবলে তাক লাগিয়ে দেওয়া আতালান্তার ইতিহাস গড়ার মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। তবে, নাটকীয়তার সব রং যেন তোলা ছিল যেন শেষের অধ্যায়ের জন্য। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে সমতা টানলেন মার্কিনিয়োস। আর যোগ করা সময়ে ব্যবধান গড়ে দিলেন এরিক মাক্সিম চুপো-মোটিং। ছিটকে যাওয়ার দুয়ারে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য এক জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে পা রাখলো পিএসজি।’