বিভাগ খেলাধুলা

ভাষার কারনে বেশিরভাগ ক্রিকেটারই কথা বুঝেনা: গিবস

সাম্প্রতিক সংবাদ
তানভীর হাসান
Sponsored

সিলেট থান্ডারের কোচ হয়ে আসার পর সংবাদমাধ্যম থেকে একটু দূরেই ছিলেন হার্শেল গিবস। কিন্তু সিলেটে আসার পর দলের প্রথম অনুশীলন শেষে শুধু মুখোমুখিই হলেন না, দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট যেন খুলে দিলেন মনের দুয়ার। ৮ ম্যাচে কেবল ১ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে তার দল। নিজে থেকেই তুলে ধরলেন বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা। সবচেয়ে বড় দুটি সমস্যা তার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অনেকের সঙ্গে ভাষার দূরত্ব ও প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের অনেকের ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে না পারা।

নতুন বছর আগমণের মুহূর্তটি কেমন কাটল?

হার্শেল গিবস: সাধারণভাবেই কেটেছে, ইন্টারেস্টিং কিছু নয়। খুব বেশি কিছু করার ছিল না। আমাদের টিম হোটেলে ক্যাবল টিভিতে ইংলিশ চ্যানেল কেবল দুটি। তাই টিভি দেখে সময় কাটানোরও উপায় ছিল না। ফোনেই ব্যস্ত ছিলাম। অবশ্য শুয়ে-বসে, শান্তভাবে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে খারাপ লাগেনি।

আপনার দল তো বিপিএলে খুব ভালো করতে পারেনি। এখন ঘরের মাঠে খেলা। ক্রমাগত হারতে থাকা একটি দলকে অনুপ্রাণিত করা কতটা কঠিন?

গিবস: আমি বলব না কাজটা কঠিন। তবে কঠিন হোক বা না হোক, এই পরিস্থিতিতে থাকাটা আসলে খুব ভালো কিছু নয়। আমরা সবাই এই অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছি আগেও। দিনশেষে সবাইকে গভীরভাবে ভাবতে হবে যে আমরা একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে, একটি ব্র্যান্ডকে এই লিগে প্রতিনিধিত্ব করছি। পারফরম্যান্সে তাই গর্ব খুঁজে নিতে হবে। সেই সুযোগ মিলিয়ে যাচ্ছে না। পরের চার ম্যাচে সবার সামনেই সুযোগ থাকছে নায়ক হওয়ার। ঘুরে দাঁড়ানোর।

সিলেট থান্ডারের কোচ হয়ে আসার পর সংবাদমাধ্যম থেকে একটু দূরেই ছিলেন হার্শেল গিবস। কিন্তু সিলেটে আসার পর দলের প্রথম অনুশীলন শেষে শুধু মুখোমুখিই হলেন না, দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট যেন খুলে দিলেন মনের দুয়ার। ৮ ম্যাচে কেবল ১ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে তার দল। নিজে থেকেই তুলে ধরলেন বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা। সবচেয়ে বড় দুটি সমস্যা তার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অনেকের সঙ্গে ভাষার দূরত্ব ও প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের অনেকের ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে না পারা…

নতুন বছর আগমণের মুহূর্তটি কেমন কাটল?

হার্শেল গিবস: সাধারণভাবেই কেটেছে, ইন্টারেস্টিং কিছু নয়। খুব বেশি কিছু করার ছিল না। আমাদের টিম হোটেলে ক্যাবল টিভিতে ইংলিশ চ্যানেল কেবল দুটি। তাই টিভি দেখে সময় কাটানোরও উপায় ছিল না। ফোনেই ব্যস্ত ছিলাম। অবশ্য শুয়ে-বসে, শান্তভাবে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে খারাপ লাগেনি।

আপনার দল তো বিপিএলে খুব ভালো করতে পারেনি। এখন ঘরের মাঠে খেলা। ক্রমাগত হারতে থাকা একটি দলকে অনুপ্রাণিত করা কতটা কঠিন?

গিবস: আমি বলব না কাজটা কঠিন। তবে কঠিন হোক বা না হোক, এই পরিস্থিতিতে থাকাটা আসলে খুব ভালো কিছু নয়। আমরা সবাই এই অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছি আগেও। দিনশেষে সবাইকে গভীরভাবে ভাবতে হবে যে আমরা একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে, একটি ব্র্যান্ডকে এই লিগে প্রতিনিধিত্ব করছি। পারফরম্যান্সে তাই গর্ব খুঁজে নিতে হবে। সেই সুযোগ মিলিয়ে যাচ্ছে না। পরের চার ম্যাচে সবার সামনেই সুযোগ থাকছে নায়ক হওয়ার। ঘুরে দাঁড়ানোর।

স্কোয়াডের শক্তিতেও কি ঘাটতি থেকে গেছে? বিশেষ করে, মানসম্পন্ন একজন অলরাউন্ডারের অভাব?

গিবস: হ্যাঁ, হতে পারে। দূর্ভাগ্যজনকভাবে, ড্রাফটের সময় আমি ছিলাম না। আমাকে একটি স্কোয়াড ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি যদি ড্রাফটের সময় থাকতাম, অবশ্যই ভালো দুয়েকজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান দলে নিতাম। বাঁহাতি পেসার নিতাম। বৈচিত্র্য থাকত। কিন্তু আমাকে এই স্কোয়াডই দেওয়া হয়েছে।

কোচ হিসেবে আমি খুঁজব, কিভাবে আমরা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারি। আমরা যখন মাঠে নেমেছি, প্রতিপক্ষ দেখেছে যে আমাদের কেবল একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য তাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখা সহজ হয়েছে, কারণ আমাদের প্রায় সবাই ডানহাতি ব্যাটসম্যান! স্কোয়াডে কেবল একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, এমন স্কোয়াড আর কোথাও সম্ভবত দেখতে পাবেন না।

প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে অন্তত দুজন বাঁহাতি থাকবে, এটিই ন্যূনতম স্ট্যান্ডার্ড হওয়া উচিত। যাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের চাপে রাখা যায়। আমার সেই সুযোগ ছিল না। কাজটি তাই কঠিন ছিল।

আর আগে যেটি বললাম, ম্যাচ পরিস্থিতি বোঝার মানসিকতা যদি না থাকে, শুরুতে যদি জুটি গড়ে না ওঠে, পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি হয়।

আরেকটা দিকের কথাও বলি। আমাদের দলে ডানহাতি স্পিনার আছে, বাঁহাতি স্পিনার আছে। কিন্তু বল টার্ন করেনি, এবার উইকেট দারুণ (ব্যাটিংয়ের জন্য)। ডানহাতি বা বাঁহাতি, দুই ধরনের স্পিনারদের জন্যই কাজটি হয়ে উঠেছে কঠিন। গতির বৈচিত্র্য ও লাইন-লেংথ এথানে গুরুত্বপূর্ণ স্পিনারদের জন্য।

বল যখন টার্ন করে না, তখনই কিন্তু একজন স্পিনারের সত্যিকার মান বোঝা যায়। তখনই বোঝা যায় কার স্কিল কেমন, কোথায় উন্নতি করতে হবে। এজন্যই রশিদ খানের মতো স্পিনার বেশি ভালো করে সেই উইকেটে, যেখানে টার্ন করে না। এবার অনেক স্পিনারই প্রচুর রান দিয়েছে, কারণ উইকেট ছিল খুব ভালো (ব্যাটিংয়ের জন্য)।

আর একগাদা ডানহাতি ব্যাটসম্যানের কথা বারবার বলতে হচ্ছেই। বৈচিত্র্য যখন ছিল না ব্যাটিং অর্ডারে, প্রয়োজন ছিল ব্যাটসম্যানদের রান করা। সেটি হয়নি। এই স্কোয়াড নিয়েই আমাকে কাজ করতে হয়েছে।

আশা করি, সামনের ম্যাচ কয়েকটিতে ওরা গভীরভাবে

ভাববে যে স্কিলের দিক থেকে কোথায় উন্নতি করতে হবে। মাঠের পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে কিভাবে বুঝতে পারা যায়। প্রয়োজনের সময় চাপের মধ্যে মানিয়ে নেওয়া জরুরি।

বিপিএলের সার্বিক মান আপনার কাছে কেমন মনে হয়েছে?

গিবস: মান এমনিতে ভালো। বিশ্বজুড়ে লিগগুলোয় খেলছে, এমন অনেক ক্রিকেটার আছে। এজন্য তাদের কাছে প্রত্যাশাও বেশি যে নিজেদের উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করবে তারা।

স্থানীয় ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে একটি বড় বাঁধা হলো, তাদের অনেকেই ইংরেজি বোঝে না। আমার জন্য তাই তাদেরকে অনেক কিছুই বোঝানো কঠিন। এটি খুবই হতাশার। আমি যখন কথা বলি, দেখি যে তারা শুনছে। কিন্তু দেখেই বুঝতে পারছি যে, এসব তাদের মাথায় ঢুকছে না। অনুধাবন করতে পারছে না।

খেলাটা নিয়ে তাদের সার্বিক বোঝাপড়ার মান আরও বাড়াতে হবে। একটা বড় ব্যাপার হলো, তারা খুবই টেম্পারামেন্টাল। ওদের কাছে কিছু ব্যাখ্যা করাই কঠিন আমার জন্য। কারণ তারা বুঝতেই পারে না।

একটি উদাহরণ দেই, সেদিন রুবেল মিয়া ব্যাটিং ওপেন করেছে। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ২৮ বলে ১৪। টাইম আউটের সময় আমি মাঠে গিয়ে তাকে বললাম, ‘হচ্ছেটা কি? ২৮ বলে ১৪ রান!’ সে শুনে কেবল ওপর-নিচে মাথা নাড়ল। এটা তার দোষ নয়, কিন্তু বাস্তবতা।

ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে না পারার বড় একটি উদাহরণ এটি। ২০২০ সাল চলে এসেছে এখন। এখনও যদি একজন ব্যাটসম্যান বুঝতে না পারেন যে ২৮ বা ২৫ বলে ১৪ রান করলে আমাকে সেখান থেকে চালিয়ে যেতে হবে ও পুষিয়ে দিতে হবে, তাহলে খুবই হতাশার। হতে পারে, আমি খুব বেশি প্রত্যাশা নিয়ে এখানে এসেছিলাম। হতে পারে, স্থানীয় ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়ে একটু বেশিই আশা ছিল আমার।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, গড়পড়তা মানের চেয়ে ভালো ক্রিকেটার তারাই, যারা ম্যাচ পরিস্থিতি ভালো পড়তে পারে। সাকিব আল হাসানের কথাই ধরুন, ক্রিকেট নিয়ে তার বোঝাপড়া ও ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে পারায় গত বছর দুয়েকে তার অনেক উন্নতি হয়েছে। এমনকি বিশ্বকাপে তার খেলার দিকে যদি তাকান, সে কিন্তু নিজেকে থিতু হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। গিয়েই ধুমধাম মারতে শুরু করেনি। তার ইনিংসগুলোর টাইমিং ছিল ভালো। এই ছোট ছোট ব্যাপারগুলি স্থানীয় ক্রিকেটারদের বুঝতে হবে, যদি তারা নিজেদের খেলাকে পরের ধাপে নিয়ে উন্নীত করতে চায়। এটিই খেলার মানসিক দিক।

আমি চেষ্টা করতে পারি কথা বলতে, তাদেরকে বোঝাতে। কিন্তু তারা যদি বুঝতেই না পারে, তাহলে আমার কিছু করার নেই। এরকমই হচ্ছে।

আপনার দলের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনকে অনেক দিন থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে মনে করা হচ্ছে প্রতিশ্রুতিশীল একজন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেভাবে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না তিনি, এই টুর্নামেন্টেও ভালো করেননি। তার সমস্যা কোথায় বলে মনে হয়?

গিবস: সে ভালো ক্রিকেটার। কিন্তু তাকে উপলব্ধি করতে হবে, কতটা ভালো ক্রিকেটার সে হতে চায়। যেটি বললাম, এটি আসলে ক্রিকেট বুঝতে পারার ব্যাপার। শুধু মোসাদ্দেক নয়, মিঠুন আছে, এই ছেলেগুলি ভালো ক্রিকেটার। এবারের টুর্নামেন্টে মিঠুনের দুটি ইনিংস, টি-টোয়েন্টিতে ইনিংস গড়ে তোলার দিক থেকে আমার দেখা সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংসগুলোর মধ্যে থাকবে হয়তো।

প্রথম ম্যাচে সে ৯০ রানের মতো করেছে (অপরাজিত ৮৪), অসাধারণভাবে ইনিংস গড়ে তুলেছিল। যেভাবে এগিয়েছে, যেসব জায়গা দিয়ে শট খেলেছে, সবই ছিল দুর্দান্ত। পরেও দুয়েকটি ইনিংসে তার সামর্থ্য ফুটিয়ে তুলেছে। দারুণভাবে ইনিংস গড়েছে।

কিন্তু অনেক সময়ই এই ছেলেরা, একটু বেশি চিন্তা করে ফেলে। তারা ভাবে, বড় শটই সবকিছু। আসলে যা মোটেও ঠিক নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ইনিংস কিভাবে গড়া হচ্ছে, মাঠের কোন জায়গা দিয়ে শট খেলব, কখন আক্রমণ করব, কখন নিজেকে সংযত রাখব, কখন জুটি গড়ব।
মিঠুনকে দিয়েই উদাহরণ দিচ্ছি। প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত খেলল। আরেক ম্যাচে সেদিন চল্লিশের মতো করল (ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে অপরাজিত ৪৯)। খুব ভালো। কিন্তু সেই ইনিংসের পরের ম্যাচেই শূন্য রানে আউট হলো, যখন ইনিংসের ৬ ওভার বাকি। অনেক সময়ই এই ছেলেরা, নিজেদের সামর্থ্যে আস্থা রাখতে পারে না। ক্রিকেটে এমন পরিস্থিতি আসে, যখন ৪-৫টি বল দেখে খেলতে হয়, তারপর চালাতে হয়। এই ব্যাপারগুলি বুঝতে হবে। মিঠুন উল্টো চেষ্টা করতে গিয়েছে, কাজে লাগেনি।

সবই ছোট ছোট ব্যাপার। কিন্তু গড়পড়তা ক্রিকেটাররা যে সময়ে এসব ঠিকঠাক করতে পারে, তুলনামূলক ভালো ক্রিকেটাররা আরও কম সময়ে করতে পারে। এই ছেলেরা কেবল যদি এই মানসিক দিকগুলোয় উন্নতি করতে পারে, ওদের খেলায় বিশাল পার্থক্য দেখতে পাবেন। ওদের হাতে শট আছে, স্কিল আছে। কেবল মানসিকতার উন্নতি করতে হবে।

সাকিব যেমন আর সবার চেয়ে আলাদা। কেন? সেটিই বুঝতে হবে অন্যদের। সে আলাদা, কারণ তার ভাবনা অন্য পর্যায়ের। খেলাটা বুঝতে পারার ক্ষমতা তার অন্যদের চেয়ে আলাদা। সেজন্যই সে এত ভালো। গত দুই বছরে তার ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে পারার ক্ষমতা অনেক বেড়েছে, এজন্যই সে সব সংস্করণে এত ধারাবাহিক হতে পেরেছে।

কিন্তু এই ছেলেরা কাজ অসম্পূর্ণ রেখে যায়। পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজ রেখে যায়। কাজ শেষ করে আসে না। এই ব্যাপার আমি খুব ভালোভাবে খেয়াল করেছি, শুধু আমাদের দলে নয়, সব দলের স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যেই। ওদের বুঝতে হবে, টি-টোয়েন্টি মানেই কেবল তেঁড়েফুড়ে খেলা নয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই বলছি, টি-টোয়েন্টি মানে কেবল চাপ সৃষ্টি করাই নয়, নিজেদেরও চাপ সহ্য করার সামর্থ্য থাকতে হবে।

আমি সবসময় তিনটি ‘পি’ নিয়ে কথা বলি, ‘প্রেশার, পার্টনারশিপ অ্যান্ড পেশেন্স।’ ব্যাটিং-বোলিংয়ে এই তিনটি ব্যাপারই গুরুত্বপূর্ণ, সংস্করণ যেটিই হোক।

পাশাপাশি ক্ষুধাটাও থাকতে হবে। বিশ্বের ভালো সব ব্যাটসম্যানরা সবসময় রান করতে চায়, সংস্করণ যেটিই হোক। সবসময়ই ক্ষুধার্ত থাকে। কখনোই সহজে ছেড়ে দেয় না। বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, এই মানের ব্যাটসম্যানরা কোনো রানেই সন্তুষ্ট হয় না। সবসময় আরও বেশি করতে চায়। এই ছোট ব্যাপারগুলি এখানকার স্থানীয় ক্রিকেটারদের বুঝতে হবে। যদি বুঝতে পারে, দেখবেন ওরা কতটা ভালো ক্রিকেটার হয়ে উঠছে।

মিঠুনের মতো ক্রিকেটার, আপনি বলছেন স্কিল আছে যথেষ্ট, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও বেশ কিছুদিন খেলেছে। তাহলে শিখছে না কেন?

গিবস: আমি আগে ওকে খুব বেশি দেখিনি। এখানে আসার পরই যা দেখলাম। দেখুন, নিজের খেলা বুঝতে পারা জরুরি। মিঠুন ভালো ব্যাটসম্যান। টাইমিং করতে পারার ক্ষমতা অসাধারণ, হাতে সব ধরনের শট আছে। কিন্তু নিজের ভালোটা তাকেই বুঝতে হবে। নিজের কাজটা তাকে করতে হবে। আমি সবসময় তাকে বুঝিয়ে দিতে পারব না। বেশ কিছুদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছে, তাকেই বুঝতে হবে বাস্তবতা।

আগেই বলেছি, ব্যাপারগুলি ছোট ছোট। শতকরা এক ভাগ উন্নতির ব্যাপার। নিজেকে যত ভালো বুঝতে পারা যায়, ততই ভালো হয়ে ওঠা যায়। তার যথেষ্ট বয়স হয়েছে, তাকেই বুঝতে হবে। আমি কেবল বলতে পারি, বাকিটা তার।

আর ভাষার দূরত্ব তো আছেই। আপনাদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছি, আপনারা সব বুঝতে পারছেন, ওদের সঙ্গেও এভাবে বুঝিয়ে বলতে পারলে ভালো লাগত। আমি অবশ্যই চাইব, আমি যখন কথা বলছি, আমার প্রতিটি শব্দ তারা যেন বুঝতে পারে। কিন্তু সেটি তো হচ্ছে না! খুবই হতাশার।

আমি ঠিক নিশ্চিত নই, নিল ম্যাকেঞ্জি (বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ) যখন কথা বলে, ওরা কতজন ঠিকভাবে বুঝতে পারে। আমি তো তার মতোই দক্ষিণ আফ্রিকান, আমি ঠিক জানি না, সে যা বলতে চায়, তার সবটুকু ওদের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারে কিনা। আমি জানি, সে দারুণ ব্যাটিং কোচ, ওর কথা মতো কাজ করলে ছেলেরা অনেক শিখতে পারবে। কিন্তু আমি জানি না, ওর কথা ছেলেরা কতটা ধরতে পারছে।

পরের বছর এখানে এলে, হয়তো নতুন ভাষা শিখে আসতে হবে আমাকে (হাসি)…!

Sponsored
Leave a Comment

সর্বশেষ

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…

September 21, 2024

২০২৩ এর সফল ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাইমন সাদিক

সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…

March 4, 2024

ডিআর কঙ্গোতে শান্তিরক্ষী মিশনে  সেনাবাহিনীর ‘আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ মোতায়েন

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…

March 3, 2024

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…

January 12, 2024

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…

January 10, 2024

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…

January 7, 2024
Sponsored