সাম্প্রতিক শিরোনাম

করোনা যুদ্ধের প্রথম লক্ষ্য কিন্তু চিকিৎসা নয়,মহামারী ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো-মোহাম্মদ হাসান

বাংলাদেশ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের তিন মাস পেরিয়ে চলেছে। একবিংশ শতকের দু’দশক পার হতে আর বাকি ছ’মাস। সন্দেহ নেই, এটা যোগাযোগ এবং তথ্যের স্বর্ণযুগ। প্রযুক্তির কল্যাণে সারা দেশের তো বটেই, বিশ্বের অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে প্রতি মুহূর্তে উঠে আসছে। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের কোথায় কতটা সাফল্য, ব্যর্থতাই-বা কী—আমরা জেনে যাচ্ছি। বাকিটা কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, এসব থেকে সেটা স্থির করতে সুবিধা হচ্ছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে মানুষ উপলব্ধি করছে যে, কোভিড-১৯ এমন একটি রোগ তার বিরুদ্ধে কারও একার লড়াই যথেষ্ট নয়। যদি দাবি করা হয়, একা ডাক্তার ও নার্স লড়ছেন, তা ঠিক হবে না। তেমনি সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগ কিংবা রোগীও একা কৃতিত্ব দাবি করতে পারবেন না। করোনার বিরুদ্ধে যোদ্ধা আসলে সবাই। তার মধ্যে সুইপার থেকে পরিবহণ কর্মী, এমনকী যে মানুষটিকে নীরব নিষ্ক্রিয় দর্শক বলে মনে হচ্ছে, তিনিও এই গৌরবের বন্ধনীতে ঢুকে পড়ছেন। কারণ, কিছু মানুষ সরাসরি কাজ করছেন, বাকিরা জরুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সহায়তা করছেন। করোনা এমন এক রোগ, যেখানে পাশের মানুষটির স্বাস্থ্যবিধি মান্য করা বা না-করার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। কারণ, অতি সংক্রামক এই ব্যাধিটার বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রথম লক্ষ্য তো চিকিৎসা নয়। প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে, মহামারীর ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো। সংক্রমণ সাফল্যের সঙ্গে ঠেকাতে পারলেই সবচেয়ে বড় কাজটি করা হবে।

চিকিৎসা করে একটি দেশ কতজনকে সুস্থ করতে পারবে? বাংলাদেশে জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি! মানুষ গণহারে সংক্রমণের শিকার হলে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা অসম্ভব। রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হলে প্রতিটি মানুষের সমান সহযোগিতা কাম্য। রোগলক্ষণ দেখা দিলেই ডাক্তার দেখাতে হবে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে, আদৌ কোভিড-১৯ পজিটিভ কি না। সংক্রমণ নিশ্চিত হলে রোগীকে অন্যদের থেকে অবশ্যই পৃথক রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট পরিবারটিকেও নিয়মানুসারে চলতে হবে। এর জন্য ভীত বা লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই। সরকার আছে। সরকারি ব্যবস্থা আছে। অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা ক্রমশ ভালো হচ্ছে। এখানে সুস্থতার হার জাতীয় মানে তো বটেই, আন্তর্জাতিক মানেও উল্লেখযোগ্য।
এ হল রুপালি রেখা। কিন্তু, উল্টো পিঠে খারাপ কিছুও যে অপেক্ষা করে। সরকারের এই আন্দাজ নির্ভুল। সমাজে কিছু কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষও আছে। তারা লড়াইয়ের অভিমুখটা যেন উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিতে চায়। আসল লড়াই যে শুধু রোগের বিরুদ্ধে, সেটা তারা ভুলে যায়। তার ফলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে লড়াইটা রোগীর বিরুদ্ধেই হয়ে যাচ্ছে! সুচিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষকে সমাজ গ্রহণ করতে অস্বীকার করছে। এমনকী, কিছু মানুষের সঙ্গে ‘সামাজিক বয়কট’-এর মতোই আচরণ করা হচ্ছে! সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির বাড়িতে লিখে দেওয়া হচ্ছে—‘করোনা বাড়ি’ বা ‘করোনা ফ্ল্যাট।

আমরা জানি, কুসংস্কারের চূড়ান্ত রূপ হল নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা। যেমনটা অতীতে যক্ষ্মা বা কুষ্ঠ রোগমুক্ত অনেক মানুষের ক্ষেত্রে করা হয়েছে। ডাইন সন্দেহে প্রহার বা হত্যার ঘটনা এখনও বন্ধ হয়নি। এসব সভ্যসমাজের কলঙ্ক। তাই করোনা-মুক্ত মানুষের সঙ্গে বিরূপ আচরণ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। করোনা রোগীর চিকিৎসা ও শুশ্রূষার সঙ্গে যুক্ত কিছু চিকিৎসক এবং নার্সের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এতে তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে পারেন। ডাক্তার এবং নার্সরা চিকিৎসা করতে ভয় পাবেন। আরও বড় বিপদ হল, এমন পরিণতির আশঙ্কায় অনেক মানুষ রোগ চেপে গিয়ে সমাজের বিপদও বাড়াতে পারেন। এই ব্যাপারে আমাদের সকলকেই বাস্তববোধ নিয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে হস্তক্ষেপ করতে হবে সরকারকেও। অন্যথায়, এই মহৎ লড়াইটা বিপথগামী হয়ে যেতে পারে।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...