সাম্প্রতিক শিরোনাম

সততা ও দেশ প্রেম ছাড়া ভাল মানুষ হওয়া যায়না – মোহাম্মদ হাসান

সততা ও দেশ প্রেম ছাড়া ভাল মানুষ হওয়া যায়না।দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। যা কিছুই আমরা করি না কেন, তার মধ্যে সুশাসন, সততা, নিষ্ঠা, নিয়মতান্ত্রিকতা ও জবাবদিহিতা থাকার আবশ্যকতা আমাদের স্বার্থেই রয়েছে। আমার কাছ থেকে সমাজ, সংসার, দপ্তর ও দেশ সব সময় ভালো কিছুই আশা করতে পারে। আমারও উচিত ভালো কিছুই ডেলিভারি করা। আমার পদবি, পর্যায় এবং অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ আচার-আচরণই আমার থেকে প্রত্যাশিত। তাই পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চলন-বলন, সম্পাদন, নিয়ন্ত্রণ, অনুধাবন, প্রক্ষাপণ প্রকাশ পাওয়া উচিত। সব কাজে যথাযথ সচেতনতা, গাম্ভীর্য ও মর্যাদাবোধকে মেনে চলা উচিত। আমার অনাবধানতা, অজ্ঞতা কিংবা অবজ্ঞা দ্বারা আমি নিজে, আমার সংসার, সমাজ, দপ্তর ও দেশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, যেন বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমার কাছ থেকে সময় ও সমাজ যতখানি নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও কর্তব্যপরায়ণতা প্রত্যাশা করে তা পূরণে চেষ্টা অবশ্যই থাকতে হবে। এভাবেই আমি যদি আমার কাছে জবাবদিহির পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি তা হলে সার্থক হবে আমার পথচলা এবং আমার দ্বারা উপকৃত হবে দেশ, সময় ও সমাজ।

সততা মৌলিক গুনাবলী এবং সৎ চরিত্রাবলীর মধ্যে অন্যতম একটিচ গুন। মুসলমানদেও হওয়া চাই সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত। যে মিথ্যা বলবে না, প্রতারণা করবে ানা, ধোঁকা দেবনা, বিশ্বাস ঘাতকতা করবে না। সততার দাবী হল কেবল কল্যাণ কামনা করা, ইসাফ কায়েম করা, ওয়াদা পূরণ করা।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) হতে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি হওয়ামাল্লাম ইরশাদ করেছেন তোমরা সত্য বলাকে আঁকড়ে ধর। কেননা, সততা নেকীর দিকে ধার্বিত কওে আর নেকী জান্নাতের দিকে পথ প্রদর্শন করে। যদি কোন ব্যাক্তি সত্য বলতে থাকে এবং সত্যকে নিরুপণ করতে থাকে এমতাবস্থায় যে, আল্লাহ পাক তাকে চরম সত্যবাদী হিমেসে গণ্য করেন। পক্ষান্তরে, মিথ্যা হতে দূরে থাক। কেনানা মিথ্যা গোনাহের দিকে র্ধাবিত কওে আর গোনাহ দোযখের নিকট উপনীত করে। যে ব্যাক্তি সব সময় মিথ্যা কথা বলে এবং মিথ্যাকে খোঁজ করতে থাকে। এমতাবস্থায় যে, সে আল্লাহ পাকের নিকট চরম মিথ্যাবাদী রুপে সাবস্ত হয়। বুখারী , মুসলিম।

একজন সৎ মানুষের মধ্যে প্রতারণা, মিথ্যা , ধোঁকা, ছলনা, ক্ষতি সাধন এবং বিশ্বাস ঘাতকতা থাকবে না , কেননা,একজন মুমিনের জন্য অপরিহার্য হল,সর্বদা সত্য কথা বলবে, মিথ্যা কথা অপছন্দ করবে। সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়, আর মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম সততার সুফলের প্রতি ইঈিত কওে ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই সততা প্রণ্যেও দিকে নিয়ে যায় আর জান্নাত পূন্য পর্যন্ত পেীছিয়ে দেয়, বুখারী , মুসলিম।

আল্লাহ তায়ালা সত্যবাদী নারী- পুরুষদেও প্রশংসা কওে মুমিনণনকে নির্দেশ করেণ, তোমরা সত্যবাদীকে সঙ্গ লাভ কর। (তাওবা -১১৯) তাই মুসলমানদেও উচিত সততা, আমানতদারি, নিষ্কুলষতা এবং কল্যাণ কামিতার দ্বারা চরিত্র গঠন করা এবং প্রতারণা, মিথ্যা ও প্রবঞ্চণা থেকে বেঁচে থাকে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে প্রতারণা কওে সে আমাদের দলভুক্ত নয় (মুসলিম)

বয়স বাড়লে অভিজ্ঞতা বাড়ে এবং সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন সহজতর হয়, কম সময় ও শ্রমে বেশি কাজ করার ফলাফলও পাওয়া যায়। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধৈর্য, কর্মোদ্যম, শক্তি ও সাহসেও ভাটা পড়ে। শ্রান্তি আসে ক্লান্তি বাড়ে। অবসাদের আত্মীয়রা এসে বাসা গাড়ে। দৃষ্টি, শ্রবণ ও স্মৃতিশক্তি কমে যায় এবং নানান রোগবালাই শরীরকে কর্ম-অক্ষম করে তোলে।

ফলে অভিজ্ঞতার দ্বারা একদিকে যে বাড়তি লাভ হয় এসব অনিবার্য অতিথির আগমনে ক্ষতি বাড়তেই থাকে। ফলে ফলাফল প্রায় পূর্ববতই থাকে। তাও আবার অর্থনীতির সেই অনিবার্য শর্ত ‘আর সব যদি ঠিক থাকে।’ অর্থাৎ পরিবেশ, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, অন্যের সাহায্য-সহযোগিতা এবং নিজের মনোবল, বুদ্ধিবিবেক ও চিন্তাশক্তির ন্যূনতম সজাগ পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকলেই না ওপরে যা বললাম তা সাধিত হতে পারে। এসব বাস্তব বিষয় বিবেচনায় এনেই বলি মনরে! সময় থাকতে হও সাবধান। শরীরের যত্ন নাও, মনকে ভালো খাবার দাও, পরিবেশকে বান্ধব করে তোলার পদক্ষেপ নাও, অহেতুক ঝক্কিঝামেলায়, বকাঝকায় নিজের বলবুদ্ধি, মন ও মনোযোগকে অবচয়, অপচয় ও অপব্যবহার না করে পজিটিভ চশমা পরো, নেগেটিভ ভাবনা ছাড়ো, নিয়মতান্ত্রিকতায় ঘাঁটি গাড়ো। উদার উন্মুক্ত প্রকৃতির কাছে ফিরে যাও, তার থেকে শক্তি সাহস ও শান্তির প্রেরণা নাও, বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে, শ্রাবণের জোয়ারে নদীর পথচলা, পাখির কূজনে, কুহেলি কুয়াশায় ঢাকা শীতের ভোর, শরতের নির্মেঘ আকাশ, কৃষ্ণচূড়া, বাগানবিলাস আর আজালিয়ার সৌন্দর্যে মুখ লুকাও, শ্বাস-প্রশ্বাস নাও। শান্ত সকালের মেধাবী প্রহরে সৃজনশীলতায় হও সমর্পিত চিত্ত। পশুপাখালির নিত্যদিনের সাংগিতীক জীবনযাত্রায় কান পেতে শোন, তাদের সঙ্গে সবার সঙ্গে একাত্ম হও। এরা সবাই বিধাতার, বিধাতাও এদের সবারই। মনের সব জড়তা, কূপম্ডুকতা, দীনতা, হীনতা ঝেড়েমুছে ফেল, নির্ভার করে তোল তাকে। হিংসা, দ্বেষ, ঈর্ষা, রাগ, ক্ষোভ, ভয়, আশঙ্কা, সংকোচ, শঙ্কা, সংক্ষুব্ধতা সবই করো পরিত্যাগ। নিত্যনতুন উদ্যমে গৌরব প্রত্যাশায় উদ্বেল হয়ে ওঠো।

কেউ কোনো এক সচেতন অবসরে যদি তার অতীতের দিকে তাকায় তা হলে সে দেখতে পায় কত বিচিত্র অবয়বে তার এই পথচলা। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে সে এগিয়ে চলেছে অনাগত ভবিষ্যতের পানে। শূন্য থেকে যাদের শুরু তারা যদি বিয়োগ করে তার বর্তমানকে তা হলে বেরিয়ে যাবে অর্জনের প্রকৃত খতিয়ান। এই প্রাপ্তি এই অর্জন কতটা বৈষয়িক, কতটা ন্যায়সঙ্গত ও সহজাত তার বিচার-বিশ্লেষণ করা দরকার। কোনো প্রতিজ্ঞা বা কোনো প্রত্যয় তাকে এই অভীষ্টে এনে দিয়েছে তারও শুমারি প্রয়োজন। তার সাহচর্যে যারা এসেছে তাদের সঙ্গে সে কেমন আচরণ করেছে, তার কাছ থেকে কী তারা পেয়েছে তার পর্যালোচনা তাকে করতে হবে। তাই যদি সে করে তা হলে সে দেখে অনেকের হৃদয়ে হয়েছে তার ঠাঁই আবার অনেককে দিয়েছে মর্মাঘাত। এসবের শুমারকরণে তাকে প্রত্যয়দীপ্ত হতে হয় ভবিষ্যতের জন্য। আর এর থেকে সে প্রেরণা পেতে পারে আরও বেশি শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীল মানবতাবাদী ও পরোপকারী হওয়ার।

তাই নিজেকেই নিজের সমালোচনা করতে হবে। চিহ্নিতকরণের চেষ্টা চালাতে হবে নিজের দোষত্রুটি, প্রবণতার ভালো ও মন্দ দিকগুলোকে। কীভাবে কোন মুহূর্তে তা চিন্তা ও কর্মকে প্রভাবিত কিংবা নিয়ন্ত্রিত করছে তা দেখতে হবে। দেখা যায়, এক ধরনের বিতৃষ্ণা, পরশ্রীকাতরতা, বিদ্বেষ, অসহিষ্ণুতা এবং অন্তর্মুখিতা অধিকাংশ আচরণকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। সীমাবদ্ধ চিন্তভাবনা এবং সংশয়-সন্দেহ ও বহুমুখী কিছু অপয়া ধ্যান-ধারণা সুচিন্তার সুযোগকে করছে সীমাবদ্ধ। মনকে আচ্ছন্ন রাখছে অন্য চিন্তায়। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
লেখকঃ মোহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...