১৯৭১’র ২৫ মার্চ কালোরাতে যে বিভিষিকা নেমে এসেছিল এ দেশে সেখানে যে চারটি স্হানে প্রায় একই সাথে আঘাত হেনেছিল তদানীন্তন পুলিশকেও এই আক্রমনের স্বীকার হতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণ অন্য অনেকের মত জীবন মৃত্যুর বিবেচনায় মহামন্ত্র হিসেবে অন্তরে গ্রথিত করে পুলিশ দেশপ্রেমের অমর কাব্য রচনা করেছিল ২৫ মার্চ পাকিস্তানী প্রশিক্ষিত সাজোয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে থ্রী নট থ্রী দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রচেষ্টার মাধ্যমে।
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে প্রথম থ্রী নট থ্রী’ র বুলেট টি ছুঁড়েছিল তদানীন্তন রাজারবাগের যুদ্ধরত পুলিশ সদস্যরা। দুঃখ জনক হলেও সত্য এ স্বীকৃতি অর্জন করতে প্রকৃত ইতিহাসের সত্য স্বীকৃতি পেতে এ প্রজন্মের পুলিশ অফিসারদেরকে বহুমুখী কাজ করতে হয়েছে যার মধ্যে বিভিন্ন রকম লেখালেখি, আত্মত্যাগী পুলিশ সদস্যদের কবর সনাক্ত করা, গীতি নৃত্য নাট্য স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতা মঞ্চায়ন করা, নক্ষত্রের রাজারবাগ সিনেমা তৈরী ও প্রদর্শন করা, জীবিত সদস্যদের খুঁজে বের করা, পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর নির্মাণ করা, সাংস্কৃতিক জোটকে সংগে নিয়ে পুলিশ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ ২৫’মার্চ কালোরাত্রিতে প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠান ধারাবাহিক ভাবে করে যাওয়া, সাংবাদিক কর্মীদের মধ্যে এ বিষয়ক আগ্রহ তৈরী করে রাজারবাগের সে সময়ের ইতিহাস প্রচার মাধ্যমে তুলে ধরা, প্রেক্ষাপট বিষয়ক গান রচনা করে তা পরিবেশন করা, নানা রকম কর্মকান্ডে দেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিবর্গ ও মন্ত্রীদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের মধ্যে উপলব্ধি তৈরী করা এবং তাদের উচ্চারণে বক্তব্যের মাধ্যমে নাগরিক সমাজে এটি ছড়িয়ে দেয়ার মত বহুমাত্রিক কাজ করে প্রথম বুলেট ছুঁড়ার ইতিহাস স্বীকৃতি পেয়েছে এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ পুলিশ’কে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়েছে। ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ হাবিবুর রহমান স্যার, বর্তমান সিএমপি জয়েন্ট কমিশনার মোস্তাক আহমেদ স্যার, পুলিশ সুপার নুরুল স্যার সহ আমারও সৌভাগ্য হয়েছিল তাদের সাথে কাজ করার এমনকি বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব মান্নার হিরা ও অন্যতম কোরিওগ্রাফার বদরুল হাসান সহ অনেকেই এ ইতিহাস স্বীকৃতিতে অবদান রেখেছেন।
প্রাসঙ্গিকভাবে বলে রাখা দরকার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে ৭৫’র কালো অধ্যায় রচিত না করলে পুলিশের এই ইতিহাস স্বীকৃতিতে এতটা ঘাম ঝড়ানোর প্রয়োজন হতো না। ১৯৭৫’র ১৫ই জানুয়ারী প্রথম পুলিশ সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু নিজেই তার স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। “আজ স্বাধীন বাংলাদেশ প্রথম পুলিশ সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। যতদিন বাংলার স্বাধীনতা থাকবে ততদিন বাংলার মানুষ থাকবে, ততদিন এই রাজারবাগের ইতিহাস লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে। (১৯৭১-এর) ২৫শে মার্চ রাতে যখন ইয়াহিয়া খানের সৈন্যবাহিনী বাংলাদেশের মানুষকে (সশস্ত্র) আক্রমন করে, তখন তারা চারটি জায়গা বেছে নিয়ে তার উপর আক্রমন চালায়। সেই চারটি জায়গা হচ্ছে, রাজারবাগ, পিলখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর আমার বাড়ী…রাজারবাগের পুলিশেরা সেদিন সামান্য অস্ত্র নিয়ে বীর বিক্রমে সেই সামরিক বাহিনীর মোকাবেলা করেন। কয়েকঘন্টা তুমুল যুদ্ধ করেন। ……পুলিশ বাহিনীর অনেক কর্মি এখানে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা রাস্তায় নেমে যুদ্ধ চালিয়েছেন নয় মাস পর্যন্ত। যারা পুলিশ বাহিনীর বড় বড় কর্মচারী ছিলেন, তাদের অনেকেই স্বাধীনাত সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।’’
৭৫’ পরবর্তী ইন্ডেমনিটি এবং তাদের শাসন ব্যবস্থার কারনে এগুলো স্বাধীনতা পন্থিরা খুব একটা খোঁজাখুঁজি করেছেন বলে কাজ করতে গিয়ে আমার মনে হয় নাই, কারণ আমি স্ব-উদ্যোগে গবেষণার তাগিদে খুঁজতে গিয়ে দেখি বাংলাদশে টেলিভিশন আর্কাইভে ভিডিও আছে- বক্তব্য নাই। বাংলাদেশ বেতারে ১৮-১৯ মিনিটের বক্তব্যের মধ্যে অনেক কষ্ট করে ৩ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি বক্তব্য পাই। বলছি কেন ৭৫ পরবর্তী শাসকরা বাংলার মাটি থেকে বঙ্গবন্ধুকে শুধু হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হননি বরং তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি মুছে ফেলেছেন যাতে সেগুলো আর কোন ভবিষ্যতেই আলোর মুখ না দেখে। এগুলো খুজে বের করা ডকুমেন্টারী বানানো ইত্যাদি কাজ গুলো আমি নিজে স্বপ্রনোদিত করে আমার ডিপার্টমেন্টকে দিয়েছি। মহামন্য রাষ্ট্রপ্রতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের শ্রদ্ধাভাজন আইজিপি পরবর্তীতে পুলিশ সপ্তাহের বক্তব্যে অনেকেই বঙ্গবন্ধুকে কোড করে এ সব বক্তব্য রেখেছেন। খুব সম্প্রতি ফেইসবুকের মাধ্যমে দেখলাম আরো একটা প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষেত্রে প্রদত্ত ভাষণের ডুকুমেন্টারী করেছেন।
তখনকার যুদ্ধটা ছিল দৃশ্যমান বলে কখনও সম্মুখ, কখনো পিছিয়ে এসে আবার শক্তিসঞ্চয় করে শত্রুকে আক্রমন করা কিংবা গেরিলা আক্রমনের মত কৌশল অবলম্বন করা সম্ভব হয়েছে। রণনীতি পরিবর্তন করে সুবিধামত আক্রমন করা যেত তখন । কিন্তু বর্তমান করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাটা নিশ্চয়ই সে রকম নয়। এখানে প্রত্যেকেই এক অর্থে প্রত্যেকের শত্রু’ র মত এমনকি প্রকৃতির আলো বাতাস মাটি পানি সব কিছুতেই এই অদৃশ্য শত্রু তার অবস্থান নিচ্ছে। মানুষের হাঁচি, কাশি থেকে শুরু করে স্পর্শ পর্যন্ত করোনার পক্ষে কাজ করছে, মানুষের পক্ষে নয়। এক কথায় এক মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে প্রতিনিয়ত মরতে হচ্ছে কিংবা বাঁচার চেষ্টা করতে হচ্ছে মানুষকে। ঢাল লাঠি
বন্দুক বোমা কিছুই করোনার বিরুদ্ধে কার্যকরী নয়। সেই সাথে না আছে আমাদের দেশে কিংবা বিশ্বের কাছে কোন পূর্বাভিজ্ঞতা। আসলে এ সংক্রান্তে দেশপ্রেম আর মনোবল ছাড়া এ মুহূর্তে কিছুই নাই আমাদের।
বিশেষজ্ঞদের একটা পরামর্শ সচেতনতা বাড়াতে হবে। মানুষকে ঘরে থাকতে হবে পারলে সেখানেও নিরাপদ দূরত্বে থেকে হাঁচি কাশি দিতে হবে যাতে পরিবারের অন্য কারো ক্ষতি না হয়। বারংবার হাত ধৌত করতে হবে ইত্যাদি। নানা বিষয়ক সচেতনতা। মূলত সেখানেই আমার উদ্বিঘ্নতা। এ কাজে জরুরী বিচারে ডাক্তার বিশেষ করে প্রয়োজন বলে তাদেরকেই প্রথমত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা জরুরী আর সরকার যথাসাধ্য সেটি চেষ্টা করে সফলও হয়েছেন বলবো। নিরাপত্তা কিট ডাক্তাররা পেয়েছেন আশা করি। অন্তত; যারা এই বিশেষ বিষয়টার সাথে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন তারা অন্তত পেয়েছেন। আমরা খানিকটা আশাবাদী হয়েছি বাঁচার লক্ষ্যে। যতদূর চোখে পড়ে সংবাদকর্মীরাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংবাদ সংগ্রহের কাজে তারা নিরাপত্তা কীট পেয়েছেন।যদিও পর্যাপ্ত নয়।
নাগরিকদের ঘরমুখি করা, খাদ্য সহায়তা পৌছে দেয়ার জন্য পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু সংখ্যক সদস্য মাঠে কাজ করছেন। নিয়মিত আমাদের চোখেও পড়ছে সেটি। দেখলাম এ সকল ডিপার্টমেন্ট বেতন বোনাসের কিছু পয়সা দিয়ে সরকারকে সহায়তা করছেন গরীব দুঃখিদের খাদ্য সরবরাহে। সবকিছুর জন্যই স্যালুট কিন্তু পুলিশ সদস্য ও আইন শৃঙ্খলায় যারা কাজ করছেন তাদের নিরাপত্তা উপেক্ষিত মনে হচ্ছে অন্তত এখনও পর্যন্ত । এক্ষেত্রে বাংলাদেশের দু’একজন বিত্তবান এগিয়ে আসলেই কর্তব্যরত এ সকল সদস্যদের মনোবল চাঙ্গা রাখার লক্ষে ‘ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কিট’ সরবরাহ করা দরকার।
এমন সময়েও কি সব কিছু সরকার কেই করতে হবে? আমাদের ভেবে দেখা দরকার যদি দু’একজন সদস্য করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেক্ষেত্রে পুলিশ মনোবল নিয়ে কাজ করছে সেটা অব্যাহত রাখা কতটুকু সম্ভব হবে ভবিষ্যতে! দেশ ও জাতীকে সু-রক্ষার স্বার্থে হলেও বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরী।পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে মনে হচ্ছে বেশ খানিকটা লম্বা পথ এ যাত্রায় চলতে হবে আমাদেরকে।
পরিশেষে বলে রাখা দরকার কেউ এগিয়ে না আসলেও নাগরিক সেবায় ব্রত নিয়ে কাজ করাই
যেহেতু বাংলাদেশ পুলিশের পেশাগত কাজ সে লক্ষ্যে প্রয়োজনে নিজেদের বেতন ভাতা বোনাস থেকে টাকা সংগ্রহ করে সরকারের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছেন তদ্রুপভাবে নিজস্ব সদস্যদরে পাশেও দাঁড়ান জরুরি । সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব না করে এখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজ সদস্যদের মাঝে নিরাপত্তা কিট প্রদান করা অতীব জরুরী। সবাই যখন নিজের বুঝটা বুঝার চেষ্টা করছে এই পেশার অভিভাবক যারা আছেন তাদেরও খুব উচিৎ হবে কালবিলম্ব না করে যত দ্রুত সম্ভব আপনারাসহ অধ;স্তনদের নিরাপত্তা কীটের( পিপিই) ব্যবস্থা করা। জীবন সবার একই রকম আর মানুষ হিসেবে নিজের প্রতি ও পরিবারের প্রতি এ দূর্বলতা সবারই আছে এবং থাকবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment