সাম্প্রতিক শিরোনাম

নোকিয়া ফোনের শহর ওউলু-র ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

একটা সময় ছিল যখন মোবাইল ফোন বলতেই লোকে বুঝতো নোকিয়ার হ্যান্ডসেটের কথা। সেই নোকিয়ার হ্যান্ডসেটের ব্যবসা যখন মুখ থুবড়ে পড়ল, অনেকেই ভেবেছিলেন ফিনল্যান্ডের একটি ছোট্ট শহর ওউলু-র ভবিষ্যৎও বোধহয় চিরতরে শেষ হয়ে গেল।

কারণ ওই শহরে বেশির ভাগ মানুষই কাজ করতেন নোকিয়া কোম্পানিতে, নোকিয়ার ব্যবসা উঠে যাওয়ায় তারা সবাই একসঙ্গে বেকার হয়ে পড়েছিলেন। খবর বিবিসি’র।

কিন্তু হাল না ছেড়ে ওউলু আবার কীভাবে ঘুরে দাঁড়াল, সেটা এক অত্যাশ্চর্য বাস্তব কাহিনী। ওউলুর বাসিন্দারা আজও সে দিনের কথা ভাবলে শিউড়ে ওঠেন।

‘ভয়ঙ্কর সময় ছিল সেটা, মানুষ রেগে গিয়েছিল – চরম লজ্জায় পড়েছিল’। একসঙ্গে শহরের প্রায় চার হাজার তিনশো লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন।

নোকিয়ার চিরচেনা রিংটোনের কথাও নিশ্চয় অনেকেরই মনে আছে। ২০০০ সাল নাগাদ বিশ্বের চল্লিশ শতাংশ মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটই বিক্রি করত নোকিয়া।

কিন্ত পরবর্তী মাত্র দশ বছরের মধ্যে তাদের সেই ব্যবসা পুরোপুরি লাটে ওঠে। আর তাতে প্রত্যন্ত ফিনিশ শহর ওউলু-র অর্থনীতিই একরকম ভেঙে পড়ে, কারণ সেই শহরের মেরুদন্ডই ছিল নোকিয়া।

‘ওউলু রিং স্লিপ ট্র্যাকারে’র পেটেরি লাহটেলা বলছিলেন, ‘সে সময় একটা বিরাট নিরাপত্তাহীনতা আর অনিশ্চয়তার মেঘ আমাদের ঘিরে ধরেছিল। এখন কী হবে, কীভাবে বাঁচব সেই প্রশ্নই ছিল সবার মনে’।

‘বিজনেস ফিনল্যান্ডে’র কর্মকর্তা আর্টো পাসিনেন আবার জানাচ্ছেন, ‘শহরের পরিবেশ তখন সত্যিই ছিল থমথমে। কিন্তু খুব শিগগিরি মানুষ আবার বুঝতে পারল, এই সঙ্কট কিন্তু একটা নতুন সম্ভাবনার সূচনাও হতে পারে’।

সাব-আর্কটিক বলয়ের এই শহরটিতে তারপরই ধীরে ধীরে শুরু হল এক টেক স্টার্ট আপ বুম।

পাসিনেন বলছিলেন, ‘সারা দুনিয়াতেই তখন তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রতিভার অভাব ছিল। আর সেখানে হঠাৎ করে ওউলু এমন একটা শহরে পরিণত হল, যেখানে চার হাজারেরও বেশি দক্ষ কর্মী চাকরিতে নিয়োগের জন্য প্রস্তুত!’

পেটেরি লাহটেলা যোগ করেন, ‘যারা এতদিন মোবাইল ফোন বানাতেন তারাই ধীরে ধীরে নানা ওয়্যারেবল ডিভাইস, মেডিক্যাল ডিভাইস বা গাড়ি নির্মাণ শিল্পের জন্য কাজ করা শুরু করলেন।’

‘আমাদের এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে হবু শিল্পোদ্যোগীদের জন্য নতুন সেন্টার চালু হল, বিভিন্ন কোম্পানি যাতে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মী খুঁজে পেতে পারে সেটারও ব্যবস্থা হল’।

‘বিজনেস ফিনল্যান্ডে’র কর্মকর্তা আর্টো পাসিনেনও বলছিলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটা হল, ওউলু কখনও হাল ছেড়ে দেয়নি’।

‘নোকিয়ার চাকরি যাওয়ার পরও তারা সক্রিয় ছিলেন, সারা দুনিয়ায় এতদিন তাদের যে সব কনট্যাক্ট গড়ে উঠেছিল তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা বলতে শুরু করলেন, এই দ্যাখো এখানে কিন্তু বিরাট একটা দক্ষ লোকবল আছে। তা তোমরা কেন ওউলু-তে এসে রিক্রুট করছ না?’

ওউলু অবশ্য নানা ধরনের সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ থেকেও উপকৃত হয়েছিল। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল নোকিয়াও।

নোকিয়ার এরিয়া সানকারি বলছিলেন, ‘আমাদের কর্মীরা যাতে নতুন কর্মসংস্থান খুঁজে পায় সে ব্যাপারেও আমাদের একটা দায়িত্ব ছিলই’।

‘সে জন্য আমরা ‘ব্রিজ’ নামে নতুন একটা প্রকল্প চালু করেছিলাম, যেটা দারুণ সফল হয়েছিল। যেমন, ওউলুতেই ওই প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ে উঠেছিল প্রায় তিন-চারশো স্টার্ট-আপ’।

ওউলু এখন সারা বিশ্বেই টেক ইনোভেশনের একটি বড় কেন্দ্র – অন্তত তিনটি ফাইভজি টেস্ট নেটওয়ার্ক আছে এখানে।

আর্টো পাসিনেন বিশ্বাস করেন, ‘নোকিয়ার মুখ থুবড়ে পড়া আখেরে হয়তো ওউলু-র জন্য ভালই হয়েছে। এখন মোবাইল ফোন ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তির অন্য নানা ক্ষেত্রে ছড়িয়ে আছেন শহরের বাসিন্দারা, যেটা অনেক শক্ত ভিতের ওপর শহরটোকে দাঁড় করিয়েছে’।

ফিনিশ ভাষায় একটা শব্দ আছে ‘সিসু’ বলে, যার অর্থ হাল না-ছাড়া, কোনও কিছুর পেছনে লেগে থাকা।

ওইলুর মধ্যে সেই ‘সিসু’ ছিল বলেই কঠিন সময়েও তারা চেষ্টা চালিয়ে গেছে, সামনের দিকে তাকিয়ে আশার আলো দেখতে পেরেছিল।

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...