ফেসবুক বুস্টিং এবং এডভার্টাইজিং এর খরচ কত? এই প্রশ্নের সবচেয়ে সহজ এবং নির্ভুল উত্তর হচ্ছে – It Depends !!
‘it depends’ শুনতে সম্ভবত আপনারা এই আর্টিকেল পড়ছেন না। কাজেই কিছু ডেটা দিয়ে দিয়ে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি-
বাট এগেইন, ইন্ডাস্ট্রি এবং পারফরম্যান্স ভেদে আমি প্রতি ক্লিকের জন্য সর্বনিম্ন ১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ তিনশো টাকাও খরচ হতে দেখেছি! তাই উপরের এভারেজ খরচের হিসাবকে আপনার বিজনেসের জন্যেও এপ্লিকেবল ধরে নিয়ে নিজের খরচ অনুমান করতে গেলে বা পারফরম্যান্স যাচাই করতে গেলে ভুল করবেন। ‘ফেসবুকে বুস্ট করতে আসলেই কত টাকা খরচ হয়’- এটি জানা যেমন জরুরী, তার চেয়ে বেশি জরুরী হচ্ছে কী কী বিষয়ের উপর এবং কীভাবে এই খরচটা নির্ভর করে – সেটি জানা।
কেনো এবং কীভাবে খরচ হয় সেটি জানতে পারলে সেই খরচ কমানো বা বাজেট অনুযায়ী বেস্ট পারফরম্যান্স অর্জন করা সহজ হয়ে যাবে।
ফেসবুকে এড দেয়ার সময় আপনাকে বিভিন্ন ধরনের AD OBJECTIVES থেকে একটি অবজেক্টিভ সিলেক্ট করতে হবে। কোন অবজেক্টিভ সিলেক্ট করলেন – তার উপর এড এর খরচ অনেকাংশে নির্ভর করে।
ধরুন আপনি Facebook Ads & Marketing Mastery নামক অনলাইন কোর্সের জন্য একটি ফেসবুক এডভার্টাইজিং ক্যাম্পেইন শুরু করলেন। ক্যাম্পেইনে আপনি এমন একটি অডিয়েন্স টার্গেট করলেন, যারা ডিজিটাল মার্কেটিং, ফেসবুক বা গুগল এডস, ইত্যাদি বিষয়ের উপর আগ্রহী। এখন এই অডিয়েন্সের দুইজন মানুষের কথা চিন্তা করুন, দুইজনই আপনার অনলাইন কোর্সের আলোচ্য বিষয়ের প্রতি ইন্টারেস্টেড। উনাদের একজন নিউজফীডে কোনো প্রাসংগিক পোস্ট দেখলে সেই লিঙ্কে ক্লিক করে ওয়েবসাইটে চলে যান। ওদিকে অন্যজন খুব বেশি ক্লিক করেন না, তবে করলে সাধারনত সেই ওয়েবসাইটের সাথে এংগেজড হন (ফর্ম ফিলাপ করেন, বা সাবস্ক্রাইব করেন, ইত্যাদি)।
এখন, এড ক্যাম্পেইন এর অবজেক্টিভ হিসেবে আপনি যদি Traffic সিলেক্ট করেন, তাহলে আপনার এড সেই প্রথম ব্যক্তির কাছে পৌঁছে যাবে। আর যদি অবজেক্টিভ হিসেবে Conversion সিলেক্ট করেন, তাহলে ফেসবুক আপনার এডটি দ্বিতীয় ব্যাক্তির কাছে পৌঁছে দিবে। জেনারেল সেন্স এ চিন্তা করলে- যত মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে ল্যান্ড করে, তার চেয়ে অনেক কম মানুষ কিন্তু কনভার্ট হয়। এর মানে অবজেক্টিভ হিসেবে Conversion সিলেক্ট করলে আপনার অডিয়েন্স ছোট হয়ে আসবে। আর অডিয়েন্স যত ছোট বা Narrow হয়, ফেসবুক এড এর খরচ সাধারণত তত বেশি হয়।
সাধারণতঃ যেসব ক্যাম্পেইন এর উদ্দেশ্য হচ্ছে কোনো কিছু সেল করা – সেগুলোর খরচ বেশি হবে। ভিডিও ভিউ বা প্রোমোশনাল ক্যাম্পেইনগুলোর খরচ তুলনামূলক কম। অর্থাৎ Conversion এর খরচ Website Traffic বা Link Clicks এর চেয়ে বেশি হবে, আবার লিঙ্ক ক্লিকের খরচ Video Views বা লাইক/কমেন্ট এর খরচের চেয়ে বেশি হবে।
আমি একজন ফেসবুক ইউজার, আমি কিন্তু ফেসবুকে এড দেখতে যাই না, আমি ফেসবুকে থাকি আমার নেটওয়ার্কের সাথে কমুনিকেট করতে, আপডেটেড থাকতে। খুব বেশি এড আমার নিউজফীডে আসতে থাকলে আমি বিরক্ত হবো। এই সমস্যা ফেসবুক সল্ভ করে Ad Auction এর মাধ্যমে। ফেসবুকে এড প্লেস হওয়ার একটা লিমিট আছে, সেই লিমিটেড জায়গার মধ্যে অনেকগুলো ব্র্যান্ড তাদের এড প্লেস করার জন্য বিড করছে। যে ব্র্যান্ড Auction এ জিতবে, তার এড সেই স্পেসে প্লেস হবে।
এর মানে হচ্ছে, আপনাকে শুধু এড ক্যাম্পেইন রান করলেই হবে না, সেটি যথেষ্ট ভ্যালুয়েবল হতে হবে যাতে অকশনে জয়ী হতে পারে। আনফর্চুনেটলি, বেশি টাকার বিড করলেই যে আপনি জিতবেন – ব্যাপারটা তা না। অকশনে জিততে হলে ফেসবুকের চোখে আপনাকে ‘ভ্যালুয়েবল’ হতে হবে, আর ফেসবুক আপনার বিড কে ভ্যালু করবে তিনটি ফ্যাক্টরের উপরঃ
অকশনে আপনার এডটি অন্যান্য একইরকম এডের সাথে কমপিট করে এবং উপরের তিনটি ক্রাইটেরিয়ার কম্বিনেশনে যে এড জয়ী হয়, সেটিই অডিয়েন্সের সামনে যায়।
বিডিং দুই ধরনের হয়ঃ অটোম্যাটিক এবং ম্যানুয়াল।
ম্যানুয়াল বিডিং এর ক্ষেত্রে আপনি নিজেই সেট করে দিবেন যে একেকটি প্লেস উইন করার জন্য আপনি সর্বোচ্চ কত টাকা বিড করতে রাজী আছেন। আর অটোম্যাটিক বিডিং এর ক্ষেত্রে – আপনার ক্যাম্পেইনের টোটাল বাজেট এবং সময়কালের উপর ভিত্তি করে ফেসবুক নিজেই সেটি ক্যালকুলেট করে নিবে।
পরামর্শঃ ক্যাম্পেইনের অবজেক্টিভ পূরণ হওয়া আপনার কাছে কতটুকু মূল্যবান, সেটির উপর ভিত্তি করে আপনার বিড সেট করুন। Lowest Cost এর দিকে ফোকাস না করে Return on Investment এর উপর ফোকাস করুন। যতো বেশি বিড করবেন, আপনার এড সবচেয়ে কার্যকর অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ততো বেশি থাকবে।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা দরকার। আপনার এড কিন্তু আপনার নিকটতম কম্পিটিটরের বিড এর চেয়ে সামান্যই বেশি টাকা কাটবে। অর্থাৎ আপনি যদি প্রতি ক্লিকের জন্য ৫ টাকা করে বিড করেন, আর আপনার নিকটতম কম্পিটিটর যদি প্রতি ক্লিকের জন্য ২ টাকা বিড করে, তাহলে আপনাকে মাত্র ২.০১ টাকা পে করতে হবে ঐ ক্লিকের জন্য, পুরো ৫ টাকা পে করতে হবে না।
ফেসবুক এড এর খরচের ক্ষেত্রে টার্গেট অডিয়েন্স অনেক বড় একটি ফ্যাক্টর। ভিন্ন ভিন্ন ডেমোগ্রাফি আর অডিয়েন্সের জন্য খরচ ভিন্ন হতে পারে। অডিয়েন্স যতো রিলেভেন্ট এবং স্পেসিফিক, এড এর খরচ সাধারণত ততো কম।
ধরুন Facebook Ads & Marketing Mastery 2020 – এই অনলাইন কোর্সের জন্য আপনি এড দিচ্ছেন। এড দেয়ার সময় আপনি অডিয়েন্স হিসেবে যদি ‘Digital Marketing’ এ ইন্টারেস্টেড লোকজনকে টার্গেট করেন, তাহলে কেমন হয়?
অতটা ভালো না !!
অডিয়েন্স এখানে অনেক ব্রড, কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এ আগ্রহী অডিয়েন্সের সবাই যে ফেসবুক মার্কেটিং এ স্পেসিফিকভাবে আগ্রহী হবে, তা না। উনাদের কেউ কেউ শুধু গুগল মার্কেটিং বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে আগ্রহী হতে পারে; তাদের কাছে ফেসবুক মার্কেটিং এর অনলাইন কোর্স নিয়ে গেলে কাজে দিবে না।
কাজেই টার্গেট অডিয়েন্স যত বেশি সম্ভব রিলেভেন্ট রাখতে হবে। এখানেও ঝামেলা আছে, খুব বেশি স্পেসিফিক হয়ে গেলে আবার খরচ বেড়ে যেতে পারে, কারণ তখন Available Ad Placement এর সংখ্যা কম হয়ে যেতে পারে।
ফেসবুকে অডিয়েন্স সেগমেন্ট ক্রিয়েট করার জন্য প্রায় ৩৫০ রকমের Attributes আছে। এগুলো সিলেক্ট করা বা একটি কম্বিনেশন ক্রিয়েট করে পারফেক্ট অডিয়েন্স তৈরি করতে অনেক Trial and Balance এর প্রয়োজন আছে। প্রতিটি আলাদা আলাদা সার্ভিস, প্রোডাক্ট, অব্জেক্টিভ এবং এড এর জন্য অডিয়েন্স আলাদা হতে পারে, এবং এর বেসিসে খরচের তারতম্য হতে পারে।
বলা বাহুল্য, এড ক্যাম্পেইন এর কোয়ালিটি এবং প্রাসংগিকতা এখানে অনেক বড় ফ্যাক্টর। ফেসবুকে একটি সিম্পল লোগো আর একটি হেডলাইন দিয়ে ওয়েবসাইটে যেতে বললেই মানুষ চলে যাবে না। এড ইন্টারেস্টিং হতে হবে, ভিজুয়ালি আকর্ষণীয় হতে হবে, মানুষের ইমোশনের সাথে কানেক্ট করতে পারতে হবে, প্রাসংগিক হতে হবে।
অন্যথায় খরচ বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে ফেসবুক এড এর Relevance Score নামক মেট্রিক নিয়ে কথা বলা দরকার। ফেসবুক আপনার এডকে তার Relevance Scale এ যাচাই করবে (১ থেকে ১০ এর মধ্যে)। এই স্কোর যতো বেশি হবে, আপনার এড ততো ভাল পারফর্ম করবে এবং খরচ ততো কম হবে।
অডিয়েন্স যদি এড এর সাথে এংগেজড হয়, লাইক কমেন্ট শেয়ার করে, তাহলে Relevance Score বাড়ে। আবার, অনেক মানুষ যদি আপনার এড ইগনোর করে, হাইড করে বা “this ad isn’t relevant to me” অপশনে ক্লিক করে, তাহলে স্কোর কমে যায় তথা খরচ বেড়ে যায়।
অবভিয়াস না? আপনি যদি একটি শাড়ি বিক্রি করেন, তাহলে প্রতিটি শাড়ি বিক্রির জন্য যত টাকা এড এর পেছনে খরচ হবে, সেই খরচে কি আপনি একটি গাড়ি বিক্রি করতে পারবেন?
কোন ইন্ডাস্ট্রি তে আছেন, কি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করছেন, আপনার ইন্ডাস্ট্রিতে টার্গেট অডিয়েন্সের Purchase Behaviour কেমন- এগুলোর উপর এড এর খরচ নির্ভর করবে।
উদাহরণ হিসেবে নিচে একটি টেবিল দেখাচ্ছি।
এগেইন, উপরের টেবিলের এক্সাক্ট ডেটাগুলোর উপর নির্ভরশীল হয়ে আপনার মার্কেটিং প্ল্যান না করাই ভাল, জাস্ট কম্প্যেয়ার করার জন্য এটি খেয়াল করতে পারেন।
পীক আওয়ারে কমপিটিশন বেড়ে যায়, খরচও বেড়ে যায়।
আপনি যে অডিয়েন্স কে টার্গেট করছেন, সেই একই অডিয়েন্সকে একই সময়ে অন্যান্য অনেক ব্র্যান্ডও যদি টার্গেট করে, সেক্ষেত্রে কম্পিটিশন বেড়ে যায়। মূলত একারণে বছরের শেষে, ঈদ বা অন্যান্য ছুটির সময় এড এর জন্য খরচ বাড়তে পারে।
এমনকি সপ্তাহের কোন দিন বা দিনের কোন সময়ে এড দিচ্ছেন, তার উপর ভিত্তি করে সেই সময়ের কম্পিটিশন তথা খরচ কম-বেশি হবে। তাছাড়া আপনার কতগুলো কম্পিটিটর আছে, তারা কোন অডিয়েন্স টার্গেট করছে, কেমন খরচ করছে – এসবের উপরও আপনার এড এর খরচ নির্ভর করতে পারে।
ফেসবুকের বিভিন্ন পজিশনে এড প্লেস করা হয়। ফেসবুকের পাশাপাশি সেই এডগুলো মেসেঞ্জার এবং ইন্সটাগ্রামেও শো করা যেতে পারে। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেরই আবার একাধিক প্লেসমেন্টে এড দেয়া যায়।
কাজেই, কোন প্ল্যাটফর্মে এড দিচ্ছেন সেটার উপর আপনার এড এর খরচ নির্ভর করবে। একই প্ল্যাটফর্মের ভিন্ন ভিন্ন প্লেসমেন্টেও এড এর খরচ আবার ভিন্ন হবে। তুলনা বুঝার জন্য AdEspresso এর গ্রাফটি দেখুন; ইন্সটাগ্রাম এর প্লেসমেন্টগুলোর খরচ তুলনামূলক বেশি পাওয়া গিয়েছে ওদের স্টাডি তেঃ
কোনো এভারেজ ভ্যালু বা ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে আটকে থেকে সেটি টার্গেট করতে যাওয়া, বা নিজের পারফরম্যান্স কে সেটির সাথে তুলনা করা সম্ভবত ভুল এপ্রোচ। বরং যা করবেনঃ আপনি নিজেই একটি ক্যাম্পেইন রান করুন, সেটির Cost Per Click পর্যবেক্ষণ করুন, এরপর সেই CPC কে বেইজলাইন ধরুন। সময়ের সাথে সাথে সেই ক্যাম্পেইন বিভিন্ন ফ্যাক্টর মাথায় রেখে আপডেট করুন এবং CPC আগের তুলনায় ইমপ্রুভ করার চেষ্টা করুন। পরের ক্যাম্পেইনগুলোতেও আগের ক্যাম্পেইনের CPC কে বেইজলাইন ধরুন এবং এর চেয়ে ইম্প্রুভ করার টার্গেট করুন। ধারাবাহিক এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন, টেস্ট এবং এনালাইজ করুন, অপটিমাইজ করুন।
বাই দ্য ওয়ে, আপনার এক্সিস্টিং ক্যাম্পেইনগুলোর খরচ কেমন হচ্ছে? আপনার মতে সেটি কম না বেশি? এই খরচ আরও কমাতে কী কী করবেন বলে চিন্তা করছেন? কমেন্টে জানাতে পারেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment