সিরাজুর রহমান: এই প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের মাটিতেই বিশ্ব মানের ইলেক্ট্রিক কার তৈরির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (বিএআইএল)। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি আনুমানিক ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। মিরসরাই ইকোনমিক জোনে ১০০ একর জমির উপর তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবে আগামী ২০২১ সালের মধ্যেই একাধিক ক্যাটাগরির বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি ও মোটরসাইকেল উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (বিএআইএল)। বিদেশ থেকে গাড়ি তৈরির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ আমদানি করা হলেও এই প্ল্যান্টে গাড়ির ৬০% (চেসিস, ব্যাটারি, সফটওয়্যার ইত্যাদি) পর্যন্ত যন্ত্রাংশ নিজস্ব প্রযুক্তি ও প্রকৌশল ব্যাবহার করে উৎপাদন হবে।
বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (বিএআইএল) মুলত পরিবেশ বান্ধব লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী চালিত টু-হুইলার, থ্রী-হুইলার গাড়ি ও মোটরসাইকেল তৈরির পাশাপাশি সেডান, হ্যাচব্যাক এবং স্পোর্ট ইউটিলিটি কারসহ (এসইউভি) সহ বৈদ্যুতিক যানবাহন তৈরির পরিকল্পনা করছে। তাছাড়া পিক-আপ, মাইক্রোবাস, মিনি-ট্রাক এবং মাল্টি পারপাস ইউটিলিটি যানবাহন তৈরির ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (বিএআইএল) এর উৎপাদিত লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী চালিত ইলেক্ট্রিক ভ্যাসেলস (ইভি) যানবাহনগুলো বাজারে প্রচলিত সম জাতীয় যানবাহন থেকে দামে অনেকটাই সাশ্রয়ী হবে এবং এমনকী সেগুলো বিদেশ থেকে আমদানিকৃত রিকণ্ডিশন বা ব্যবহৃত গাড়িগুলোর চেয়ে দামে প্রায় ৫০% পর্যন্ত কম হতে পারে। উন্নত প্রযুক্তির ইলেক্ট্রিক মোটর চালিত (ইভি) গাড়িগুলোর পরিবহনের জ্বালানী এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ 90% পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। অন্যদিকে পরিবেশে ক্ষতিকর কার্বন ও অন্যান্য গ্যাস নিঃসরণ এড়িয়ে শতভাগ উন্নত এবং আরামদায়ক পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাস্তা সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে বিশ্ব মানের যানবাহণ ডিজাইন করতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (বিএআইএল) এর উৎপাদিত সেডানের দাম ১২ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা, স্পোর্ট ইউটিলিটি কার (এসইউভি) এর দাম ২০ লক্ষ টাকা এবং হ্যাচব্যাকের দাম ৮ লক্ষ টাকার নিচে মুল্য নির্ধারণ করা হতে পারে। তাছাড়া এই অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির বিভিন্ন মডেলের সাশ্রয়ী ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে মোটরসাইকেল তৈরি করবে।
অত্যন্ত শক্তিশালী এই লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারীর সার্ভিস লাইফ টাইম ধরা হয়েছে ১০ বছর এবং এই ইলেক্ট্রিক মোটর গাড়িগুলো একবার চার্জে কমপক্ষে ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারবে এবং প্রতি কিলোমিটার খরচ পড়বে মাত্র ২.০০ টাকা বা তার কাছাকাছি। তাছাড়া ২০ মিনিটের একবার ফুল-চার্জে এই গাড়িগুলো একটানা ৪০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি এবং এ লক্ষ্যে তারা হাইওয়েতে গুরুত্বপূর্ণ স্পটে পাওয়ার সাপ্লাই স্টেশন স্থাপন করবে।