বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০টি বগি

বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০টি বগি
রেলওয়ের জন্য চীন থেকে ২০০টি মিটারগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ (বগি) কিনছে সরকার। অনমনীয় ঋণ বা সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিটের মাধ্যমে বগিগুলো কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৯২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর ফলে রেলওয়ের যাত্রীসেবার মান বাড়বে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল সোমবার শেরেবাংলানগরে নিজ কার্যালয়ে অনমনীয় ঋণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান। বৈঠকে কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, টেন্ডারার্স ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০০টি মিটারগেজ কোচ সংগ্রহ শীর্ষক প্রকল্পের অর্থায়নে ক্রেডিট এগ্রিকোল করপোরেট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার একটি প্রস্তাব অনমনীয় ঋণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মূলত বাংলাদেশ রেলওয়ের মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচের চাহিদা পূরণের জন্য প্রকল্পটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও নীতিগত অনুমোদন রয়েছে। ওপেন টেন্ডার করে চীনের সিফান কোম্পানি লিমিটেডকে (যা পরবর্তী সময় সিআরআরসি সিফান কোম্পানি লিমিটেডে রূপান্তরিত হয়েছে) গ্রহণযোগ্য দরদাতা হিসেবে এবং সাংহাই পুডং ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। এটি

অনেক পুরনো প্রকল্প, এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকল্প দলিলে দেখা যায়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ২০০ মিটারগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পটি ২০১১ সালের ২০ জুলাই অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দেয়। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল এটি অগ্রিম ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদন লাভ করে। প্রকল্পে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৮৪ দশমিক ৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ ইউরো। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। 
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৯২৭ কোটি ৫১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে সাহায্য পাওয়া যাবে ৭৩১ কোটি ৫১ লাখ ৯২ হাজার টাকা। সরকার দেবে ২১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। কোচগুলোর গুণগত মান যাচাইয়ে একটি কমিটি হবে। এই জাতীয় কোচ আগে আমরা ব্যবহার করিনি। তাই চীনের যে কোম্পানিটি এসব কোচ সরবরাহ করবে তাদের উৎপাদিত কোচগুলো সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। তারা কোন কোন দেশে এসব কোচ সরবরাহ করেছে এবং এসবের গুণগত মান কেমন তা যাচাই করতে একটি কমিটি গঠন করা হবে। তারা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে গিয়ে এসব দেখবেন। 
ঋণের সুদের হার সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণ মানেই তো সুদ দিতে হবে। আগে তো লাইবরের ভিত্তিতে ঋণের সুদ নির্ধারণ হতো। এখন ইউরিবরের ভিত্তিতে ঋণ নেওয়া হচ্ছে। এ ভিত্তিতে ঋণের সুদের হার ২ শতাংশের বেশি হবে না। এ ঋণে কোনো কঠিন শর্ত নেই। জাপান থেকে আমরা যে ঋণ নেই তা নমনীয়। সুদের হার খুবই নগণ্য। তবে অন্যান্য ঋণে সাধারণত লাইবরের ওপর ২ শতাংশ সুদ দিতে হয়। এখানে আমরা ইউরোর মাধ্যম ঋণের অর্থ নেব এবং পরিশোধ করব।