হবিগঞ্জ ৩ আসনের এমপি এডভোকেট আবু জাহিরের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার দৈনিক আমার হবিগঞ্জের প্রকাশক, সম্পাদক ও আমার এমপি ডট কমের প্রতিষ্টাতা সুশান্ত দাশ গুপ্তের জামিন আবেদন নাকচ করেছেন হবিগঞ্জ জুডিশ্যিাল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালট। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় সিনিয়র জুডিয়িাল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলামের ভার্চুয়াল আদালতে শুনানী শেষে জামিন আবেদন নাকচ করা হয়।
বাদীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেনপৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ ও আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। অপর দিকে বিবাদীর পক্ষে হবিগঞ্জ বারের সিনিয়র আইনজীবী মোহিত আহমেদ চৌধুরী। উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানী শেষে সিনিয়র জুডিয়িাল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন। সুশান্তের আইনজীবী জানিয়েছেন তিনি উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করবেন।
প্রসঙ্গত সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের তুখোর ছাত্রলীগ নেতা ও লন্ডন আওয়ামীলীগের তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক সুশান্ত দাশ গুপ্তের সম্পাদনায় দৈনিক ‘আমার হবিগঞ্জ’ প্র্রকাশ হয় গত পহেলা বৈশাখে। পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় হবিগঞ্জ ৩ আসনের এমপি আবু জাহির, ত্রানের চাল আত্নসাতকারি চেয়ারম্যান মেম্বার ও ছাত্রলীগ নেতার অপকর্ম সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রিন্ট ভার্সনের পাশপাশি তিনি ওয়েব সাইট ও ফেসবুকে তা আপলোড করেন। গত ২০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সায়েদুজ্জামান জাহির বাদি হয়ে সুশান্ত দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরপাত্তা আইনে মামলা করেন।
মামলায় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ,বার্তা সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদককেও আসামী করা হয়েছে। সাক্ষী রাখা হয়েছে আবু জাহির এমপি, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসমাইল হোসেন, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ তালুকদার ইকবাল, লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদ, শায়েস্তাগঞ্জের পৌর মেয়র সালেক মিয়া, হবিগঞ্জ পৌর মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহাব, হবিগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার সাধাির সম্পাদক ফরহাদ হোসেন কলিকে। তারা সকলই আওয়ামীলীগের সাথে যুক্ত।
ওই মামলায় ২১ মে ভোরে সুশান্ত দাশ গুপ্তকে পত্রিকা অফিস থেকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ পুলিশ। গ্রেফতারের এড়াতে বাকি ৩ সাংবাদিক গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে পত্রিকা প্রকাশনা অব্যাহত রয়েছে। বাদি সায়েদুজ্জামান জাহির জানান, এমপি আবু জাহির হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য। তার বিরুদ্ধে সুশান্ত দাশ গুপ্ত পত্রিকায় অসত্য সংবাদ প্রকাশ করেছেন। যা প্রেসক্লাবের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তাই আমি সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করেছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্যদের ১২ জনের তালিকায় আবু জাহির এমপি ৭ নম্বরে রয়েছেন। তালিকায় উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে আছেন সাবেক দুই অর্থমন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমান, শাহ এ এস এম কিবরিয়া, সাবেক ত্রান ও দুর্যোাগ মন্ত্রী এবাদুর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার শিপা, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গউছ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক।
এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সুশান্ত গ্রেফতার হওয়ার পর দেশ বিদেশে সাংবাদিক, ব্লগার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে যখন সাংবাদিকরা লড়ছেন, তখন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব কিভাবে এই আইনের মাধ্যমে একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করেন এ নিয়ে প্রশ্ন করছেন তারা। ইতোমধ্যে সুশান্ত মুক্তি পরিষদ নামে একটি কমিটি গঠন হয়েছে।