বেসরকারি মালিকাধীন এবি ব্যাংক লিমিটেড করোনার ধাক্কা সামাল দিতে একসঙ্গে ১২১ জন ব্যাংক কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। গত ৮ জুলাই ১২১ কর্মীর উদ্দেশ্যে চাকুরিচ্যুতির নির্দেশনা জারি করে এবি ব্যাংক। সেই নির্দেশনা আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে।
গত এপ্রিল থেকেই ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে এ বি ব্যাংক। এ নিয়ে গত দুই/তিন মাসে দেড় শতাধিক কর্মীকে ছাঁটাই করছে ব্যাংকটি। ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের উদ্দেশ্যে এব নির্দেশনায় বলা হয়, আপনাদের সকল বকেয়া এবং পাওনা পরিশোধ করা হবে। এবি ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী সকলকে তিন মাসের বেতন প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভবিষ্যতে ব্যাংক টিকিয়ে রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাংক আর অতিরিক্ত খরচ পরিচালনা করতে পারছে না। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিলে তার জন্য তিনি নিজেই দায়ী থাকবেন।
করোনা সময়ে ব্যাংক কর্মীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যাতে করে কর্মীদের নানা প্রণোদনা দিয়ে উজ্জীবিত করা হয়। ফলে কোনো ব্যাংক কর্মীর বেতন কমানো, ইনক্রিমেন্ট বন্ধ রাখা কিংবা ছাঁটাই করা বাংলাদেশ ব্যাংক সমর্থন করে না। এটা নীতিগতভাবেও ঠিক না বরং অমানবিক কাজ।
অন্যদিকে এ ব্যাপারে জানতে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
দেশের প্রথম সারির এ ব্যাংকটি উদ্যোক্তা পরিচালকদের লুটপাট অনিয়েম আর খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকটি বর্তমানে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তারা শুধু ব্যাংক থেকে ঋণের নামে নেওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করার অভিযোগ রয়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের সব ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে এবি ব্যাংকের পরিচালকরা নিজ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ঋণ নিয়েছেন। তাদের ঋণের স্থিতি ৯০৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
১৯৮২ সালে যাত্রা শুরু করে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর ব্যাংকটির নাম বদল করে রাখা হয়েছে এবি ব্যাংক। সারাদেশে ও দেশের বাইরে ১০৫টি শাখা, ৩০০টির বেশি এটিএম বুথ এবং ৫টি সহযোগী কোম্পানি রয়েছে। বর্তমানে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ২০০ জন।