সংসদ ভবন এলাকার লেকরোডে সাইক্লিং করার সময় গাড়ির ধাক্কায় রেশমা নাহার নামে এক পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে।
তিনি পর্বতারোহী, দৌড়বিদ এবং সাইক্লিস্ট ছিলেন। পাশাপাশি রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার আইয়ুব আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তার গ্রামের বাড়ি নড়াইলে।
যে মাইক্রোবাসটি রেশমাকে চাপা দিয়েছে। তার খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, গাড়িচাপায় রেশমার সাইকেলটি পেছন থেকে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। সেটি ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ জব্দ করেছে। রেশমার দুলাভাই মনিরুজ্জামান জানান, রেশমা আগে তার বড় বোনের সঙ্গে পুরান ঢাকায় থাকতেন। পরে কর্মস্থল পরিবর্তন হলে তিনি মিরপুর সরকারী স্টাফ কোয়ার্টার চলে যান।
মাইক্রোবাসটির কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তারা মামলা করবেন।শুক্রবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে রেশমা সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যানের লেকরোড ধরে গণভবনমুখী সড়কে দিয়ে এগোচ্ছিলেন।
উড়োজাহাজ ক্রসিং দিয়ে চন্দ্রিমায় ঢোকার ব্রিজের সামনের সড়কে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস তাকে চাপা দিয়ে দ্রুতবেগে পালিয়ে যায়। এতে তিনি সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে মাথায় আঘাত পান। পথচারীরা উদ্ধার করে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেশমা খুবই উদ্যমী ছিলেন। গান, আবৃত্তি, পাঠচক্রে নিয়মিত অংশ নিতেন। সাইকেল চালাতে ভালবাসতেন। তিনি সকালে সাইকেল চালিয়ে রমনায় গিয়ে শরীরচর্চা করে হাতিরঝিল যেতেন। সেখানে কয়েক চক্কর দিয়ে সাইকেলে চালিয়ে বাসায় ফিরতেন।
রেশমার স্বপ্ন ছিল নিজেকে পর্বতারোহী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি এ্যাভারেস্টের চূড়ায় ওঠার স্বপ্ন দেখছিলেন। সেজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ফেসবুকে নিজের নামের সঙ্গে বন্ধনীচিহ্নে পর্বতারোহী জুড়ে দিয়েছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি পর্বতারোহণসহ বিভিন্ন এ্যাডভেঞ্চার কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন।
রেশমা ভারতের নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ নেন। কেনিয়া পর্বতের লেনানা চূড়া জয়ের পর ২০১৯ সালের আগস্টে ভারতের লাদাখে ৬ হাজার ১৫৩ মিটার উচ্চতার স্টক কাঙরি পর্বত চূড়া এবং এক সপ্তাহের মধ্যে ৬ হাজার ২৫০ মিটার উচ্চতার কাং ইয়াতসে-২ পর্বত চূড়ায় সামিট করেন।