কক্সবাজারে চলমান অর্ধশতাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প। এর মধ্যে অন্যতম ‘শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প’র প্রথম পর্যায়ে ১৯টি পাঁচতলা ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষা এলাকায় তৈরি হওয়া এ প্রকল্পের ফ্ল্যাট হস্তান্তর আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ২৩ জুলাই উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে ফ্ল্যাটের চাবি। এরই মধ্যে উদ্বোধনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাঝে ১৯টি ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। এসব ভবনের ফ্ল্যাটগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে উপকারভোগীদের হস্তান্তর করতে গত মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে লটারির ড্র সম্পন্ন করা হয়েছে। লটারির ভিত্তিতে ৬০০ পরিবারের মধ্যে ফ্ল্যাটগুলো বুঝে দেওয়া হবে।
বিশ্বমানের পর্যটন শিল্প বিকাশ ও ভৌগোলিক গুরুত্ব বিবেচনায় কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নতি করা হচ্ছে। বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড শহরের কুতুবদিয়া পাড়া, নাজিরাটেক এবং সমিতি পাড়া এলাকার বিপুল পরিমাণ ভূমি অধিগ্রহণ করে সরকার। অধিগ্রহণের আওতায় পড়া জমিতে ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার বাস করতো। যারা ভূমিহীন হয়ে পড়ে। সাড়ে ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার ক্ষতিগ্রস্তকে পুর্নবাসন করতে সরকার ‘শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষা এলাকায় প্রায় ২৫৩ দশমিক ৩৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পে ১৩৭ টি ৫ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। যার মধ্যে শেখ হাসিনা টাওয়ার নামে একটি ১০ তলা বিশিষ্ট সুউচ্চ ভবনও থাকবে।
ইতিমধ্যে উপকারভোগীদের তালিকাও চুড়ান্ত করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দেওয়া তালিকা ধরে জেলা প্রশাসন তদন্তের মাধ্যমে উপকারভোগীর তালিকা চুড়ান্ত করেছে। বিমান বন্দরের পাশে থাকা পরিবারগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে ফ্ল্যাটগুলো হস্তান্তর করা হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্বাবধায়নে ২০১৭ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯টি ভবনের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি ভবনগুলোর কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামি ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এসময় উপকারভোগীদের সাথেও কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারি পরিবারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল, স্বাস্থ্য সেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক, বিনোদনের জন্য পার্ক থাকবে। পাশাপাশি প্রকল্প এলাকায় আশ্রয় পাওয়া মৎস্যজীবীদের কর্মসংস্থানের জন্য স্থাপত্যশৈলী ও আধুনিক নগরায়ন পরিকল্পনায় নির্মিত হবে একটি শুটকি পল্লী। খুরুশকূল অশ্রয়ণ প্রকল্পটিকে মূল শহরের সঙ্গে সংযোগের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে ব্রিজ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যা পর্যটকদের আকর্ষণ করবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পটিতে সব ব্যবস্থা যখন চালু হবে তখন তাদের কর্মসংস্থানের অভাব হবে না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথেও কথা হয়েছে। তারা যেন আধুনিক সুযোগ সুবিধা পান সেদিকে নজর দেওয়া হবে।