খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রেকর্ড ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে শুধু খুলনা জেলায় ১৩ জন। এই সময়ে বিভাগে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৯০৩ জন।
দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে খুলনায় সর্বোচ্চ আটজন, ঝিনাইদহে সাতজন, চুয়াডাঙ্গায় পাঁচজন, কুষ্টিয়ায় চারজন, যশোরে একজন, বাগেরহাটে তিনজন, সাতক্ষীরায় একজন, নড়াইলে একজন এবং মেহেরপুরে দুইজন মারা গেছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্রেতর জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, খুলনায় ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্ত হয়েছে।
এ সময় মারা গেছে আটজন এবং শনাক্ত হয়েছে ৩০৫ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৫৬৯ জনের। মারা গেছেন ২২৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ২২৭ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬০ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৫২ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৩ জন।
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৬০ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬২ জন এবং মারা গেছে ৬৩ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ১২৭ জন।
যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১২১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০ হাজার ১৫৯ জনের। এ সময় মারা গেছেন ১১৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৭৮৯ জন।
২৪ ঘণ্টায় নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৯ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৩৭১ জন। মোট মারা গেছেন ৩৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৯৪ জন।
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৪২১ জনের। এ সময় মারা গেছেন ২৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২২৩ জন।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১১৭ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৩৮ জন। এ সময় মারা গেছেন ৭৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯০২ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১২২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৬৬২ জন। এ সময় মারা গেছে ১৬৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ১৪৭ জন।
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৬৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৯৬ জনের। এ সময় মারা গেছেন ৭৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২০ জন।
মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৩৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৪৪৮ জন। আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেছে ৩৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১৩ জন।
সম্প্রতি খুলনায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দু’দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও তা কাজে আসেনি। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে ছিল খুলনার প্রশাসন।
এ দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ২৮ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ৭৯টি মামলায় ৮২ জনকে ১ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়। খুলনার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ট্রেন ও বাস। চলছে না ইজিবাইক ও থ্রি হুইলার।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।