কোরবানির পশুর চামড়ার দাম গত বছরের তুলনায় ২৩ থেকে ২৯ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে খাসির চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকা আর বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা বর্গফুট।
বাণিজ্যমন্ত্রী সঙ্গে রবিবার চামড়া ব্যবসায়ীদের বৈঠকে এই দাম নির্ধারণ করা হয়। বাণিজ্যসচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চামড়া খাত শিল্পের উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা।
গত বছরের সংকট বিবেচনায় নিয়ে চামড়াশিল্প সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে এবার চামড়ার দর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া এবার সব পর্যায়ে নজরদারির জন্য বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে সরবরাহ পর্যায়ে বিক্রেতা যেন ন্যায্য দাম পান সে বিষয়টি নজরে রাখা হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ধরা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, গত বছর যা ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সে হিসাবে গত বছরের চেয়ে দাম কমানো হয়েছে ২৯ শতাংশ। সারা দেশে খাসির চামড়ার দাম ধরা হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা, গত বছর যা ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা বর্গফুট। এ ক্ষেত্রে গত বছরের চেয়ে দাম কমেছে ২৭ শতাংশ। পাশাপাশি বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা, যা গত বছর ছিল ১৩ থেকে ১৫ টাকা। এ ক্ষেত্রে দাম কমানো হয়েছে ২৩ শতাংশ।
চামড়ার দাম নির্ধারণ নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও বাণিজ্যসচিব জাফর উদ্দীন বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়েছে। সবার স্বার্থই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোনো রকম সংকট যাতে তৈরি না হয় সে জন্য এবার প্রচারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
গরিব ও এতিমদের হক চামড়ার দাম নিয়ে গত বছরের কারসাজি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। দাম না পেয়ে অনেকেই ক্ষোভে চামড়া রাস্তায় বা ড্রেনে ফেলে দেয়। অনেকেই মাটিতে পুঁতে ফেলে।
নির্ধারিত মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, মজুদ এবং চামড়ায় প্রয়োজনীয় লবণ লাগানো তদারকিতে একটি কমপ্রিহেন্সিভ মনিটরিং প্ল্যান গ্রহণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় যৌথ সমন্বয় কমিটি, কেন্দ্রীয় সমন্বয় ও মনিটরিং কমিটি, কন্ট্রোল রুম, ঢাকা ও নাটোর জেলার জন্য বিশেষ মনিটরিং টিম, বিভাগীয় ও জেলার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর/সংস্থার সমন্বয়ে মনিটরিং টিম এবং সব জেলা পর্যায়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এই টিম কাজ করবে।