সাম্প্রতিক শিরোনাম

গোপাল অধিকারির সাফল্যের গল্প

২০১১ সাল। তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে কয়েক বন্ধুকে মিলে শুরু করি “দাশুড়িয়া কোচিং সেন্টার”। শুরুর বছর থেকেই সক্ষম হয়েছি সমাপনী, জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ বা A+ ও বৃত্তি ছিনিয়ে আনতে। পড়াতে পেরেছি আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের সন্তানদের। আজ তারা এইচ এসসি বা অনার্সে পড়ে যখন স্যার বলে সালাম জানায় গর্বে বুকটা ভরে ওঠে। পেয়েছি এক ঝাঁক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের। আর প্রাইভের পড়ানোটা শুরু আরও ১০ বছর আগে।
তখন পড়ি অষ্টম শ্রেণিতে। দাশুড়িয়া প্রি-ক্যাডেট স্কুল। শুরুটা ২০১৬। কিছু শোভাকাঙ্খিদের চাওয়া ও নিজ এলাকার দায়বদ্ধতা থেকেই পথ চলা। উদ্দেশ্য মানসম্মত শিক্ষা প্রদান। শুরু থেকেই শিক্ষার ভীত মজবুত করা। মানসম্মত পড়ার জন্য দূরে গিয়ে অর্থ এবং সময় অপচয় থেকে কিছুটা মুক্তি প্রদানের। অন্য প্রতিষ্ঠান যেখানে অল্প পড়িয়ে শিক্ষাকে ব্যবসাতে পরিণত করেছে তাদের মানসিকতাকে পরিবর্তন করানো। শুরুটা ৪৩জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে। সকলের সহযোগীতা ও ভালবাসায় পর্দাপন ৫ বছরে। ইউনিয়ন পর্যায়ে স্কুল আর সকল শ্রেণির মানুষের সন্তানের পড়ালেখার সুযোগ সেই চিন্তা থেকেই মেধাবী থেকে দুর্বল সকল শ্রেণিকেই ভর্তি নিতে হয়। চেষ্টা করতে হয় দুর্বলকে সবলে পরিণত করার।
অভিজাত ও উন্নত স্কুলগুলো যেখানে ভাল শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে ভাল ফলাফল করান, সেখানে আমাদের সকলকে নিয়ে চিন্তা করতে হয়। পকেট না ভরলে বেঁচে থাকি সম্মান ও ভালবাসায়। এখানে যে শিক্ষার্থীটি অ, আ লিখতে পারে না তাকেও শেখানোর জন্য ভর্তি করি। তেমনি চলে শুরু থেকে সমাপনী পর্যন্ত যুদ্ধ। কিভাবে ভাল করানো যায়? এবার বলি সমাপনী ২০১৯। শিক্ষাথী ১৯ জন। কেজি স্কুল থেকে সমাপনী দেওয়া যায় না এই অজুহাতে অন্যের প্ররোচনায় একজন মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় স্কুল ত্যাগ করল ৩জন মেধাবী শিক্ষার্থী। বাকি থাকল ১৬ জন। বদলিসহ পরিবর্তনজনিত কারণে ছাড়পত্র দিয়ে থাকল ১১ জন। এর মধ্যে মেধাবী হাতে গোনা ১/২জন।
বাকিরা বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে দুর্বল। কেউ লেখায়, কেউ বানানে কেউ বা পড়ায়? তবুও চেষ্টা ভাল ফলাফল আমার চাই। কারণ ভালকে ভাল করানোর মধ্যে কৃতত্ব নেই। মন্দকে ভাল করানোই কৃতিত্ব এই চেতনায়। বার বার পরীক্ষা, নোটপত্র আর কৌশল। বার বার সৃজনশীল পড়া ও পরীক্ষা। তবুও ফলাফল সন্তোষজনক নয়। পড়া ও লেখায় আরও কঠিন চাপ। নিয়মিত বাড়িতে বার্তা। একটু সফলতার মুখ দেখলাম। এর মাঝে দুর্বল তিনজনকে পরীক্ষা না দিতে অথবা অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তির অনুরোধ। কারণ ফেল করার আশংকা। কিন্তু কথা রাখলো না অভিভাবকরা। অভিভাবকদের আবেদন স্কুলে এতদিন পড়ছে এখন অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাব না। এখানে পড়ে ভাল করছে করবে। প্রয়োজনে আমরাও চেষ্টা করব। অনুরোধ ফেলানোর সুযোগ হলো না দায়িত্বের জায়গা থেকে। জোর দিলাম আবারও। বার বার কৌশল পরিবর্তন।
উদ্দেশ্য ভাল ফলাফল। পরীক্ষার বাকি এক মাস। নিলাম মডেল পরীক্ষা। ফলাফল ভুরাডুবি। আল্টেমেটাম এক মাস। পড়তে না বসলে ফোন করবেন ০১৭২৩-০৯১২১৩ এই নম্বরে। ব্যস কাজে লাগল কৌশল। পড়তে না বসলে আসতে শুরু করল কল। তারপর বাকি কথা আর পরের দিন দেখা হলে যত ব্যথা। এভাবেই সংগ্রাম চলল শেষ এক মাস। অবশেষে ৩১ ডিসেম্বর পেলাম সফলতার চিত্র। এপ্লাস ২টা, অল্পের জন্য হাতছাড়া ৬টা,আর ফেল করার মত হলে বিগ্রেডে উত্তীর্ণ ৩টা। সবমিলিয়ে সফলতার গল্প আমার কাছে। পরিশ্রম আর চেষ্টা থাকলে যে অনেক কিছু সম্ভব তাঁর প্রমাণ আবারও পেলাম। চলতে থাকবে চেষ্টা আর পরিশ্রম। সাফল্য চাই অবিরাম। চাই অবিরত আপনাদের ভালবাসা ও সহযোগীতা। কথা হবে আবারও কোন সাফল্যের গল্প নিয়ে। তবে এখানেই রাখছি না। বলতে চাই অভিজ্ঞতা থেকে কথা এবং কাজে মিল থাকলে, সৎ ও সততা নিয়ে কাজ করলে, পরিশ্রম করলে যে সফলতা আসে তা ভুলে গেলে চলবে না। শিক্ষার পেছনে যখন লাগছি শিক্ষার শেষ দেখে ছাড়ব কথা দিচ্ছি। সে পর্যন্ত সকলে ভাল থাকবেন। আর বেশি বেশি সন্তানদের যত্ন নিবেন। আহবানে
গোপাল অধিকারী পরিচালক দাশুড়িয়া প্রি-ক্যাডেট স্কুল। এটাই গোপাল অধিকারি সাফল্যের গল্প।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...