বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, নতুন আঙ্গিকে পাটকলগুলো চালু হলে অভিজ্ঞকর্মীদেরই সেখানে চাকরি হবে, এজন্য তাদেরকে আধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণও দেয়া হবে।
এরই মধ্যে শ্রমিকদের জুন মাসের বেতনভাতা পরিশোধ করতে ৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দও দিয়েছে সরকার।
পরবর্তীতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের মাধ্যমে পাটকলগুলো ফের চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের
দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকল সম্প্রতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য এসব পাটকলের প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিকের শতভাগ পাওনা মিটিয়ে দিয়ে তাদের চাকরি অবসায়ন করা হবে।
পরিবেশ রক্ষার জন্য যেহেতু সিনথেটিক থেকে সকলেই এখন মুক্তি চায় সেখানে পাট হচ্ছে একটা বিকল্প। সেখানে আমাদের একটা বিশাল সম্ভাবনা বিশ্বব্যপী রয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে সময়োপযোগী করতে হবে, আধুনিক করতে হবে, নতুন করতে হবে।
“সেজন্য আমরা আমাদের পাটের যারা শ্রমিক, তাদের যে মজুরির টাকা পাওনা-দেনা যা ছিল, সব মিটিয়ে… আমরা একবারে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা তাদের জন্য…সেখানে সব টাকা তাদের হাতে দেব না। কারণ নগদ টাকা দিয়ে দিলে তখন দেখা যাবে মেয়ের জামাই, ভাই, ভাতিজা, আত্মীয়-স্বজন সব এসে হুমড়ি খেয়ে পড়বে এবং ভাগ চাইবে।”
যে প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের পাওনা মেটানো হবে তাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
নতুন করে পাটকলগুলো চালুর পরিকল্পনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এটাকে নতুনভাবে করব, এখানে যারা আগ্রহী তাদেরকে আমরা আবার ট্রেনিং দেব। ট্রেনিং দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে তাদেরকে তৈরি করব। পাটকল চালু হলে অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তারাই নতুন করে চাকরি পাবে।”
আমি বলেছি অর্ধেকটা সঞ্চয়পত্র করে দেব। পারিবারিক সঞ্চয়পত্র, যেখানে তারা ১১ শতাংশের মতো পাবে। সেখানে ভালো টাকা প্রতি তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক পাবে, যা প্রতিদিন সে কাজ করে মাসে মজুরি পেত, তার চেয়ে বেশি টাকাই পাবে। সেটা আমরা হিসেব করছি, যা পাওনা ছিল সেটা আমরা সব শোধ করে দেব।”
আর এই ইন্ডাস্ট্রিগুলো হচ্ছে সব থেকে পুরনো। সেই ষাটের দশকে, পঞ্চশের দশকে করা। এই ইন্ডাস্ট্রি দিয়ে আসলে লাভ করা সম্ভবও না। সেজন্য আমরা চাচ্ছি এটাকে আবার নতুনভাবে তৈরি করতে। কারণ পাটের একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। পাট আমাদের অর্থকরী ফসল। পাট একদিকে যেমন কৃষিপণ্য অপরদিকে ইন্ডাস্ট্রি, দুটোই।”
বিশ্বে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্যের বাজার ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “নিজেরা চেষ্টায় জোগাড় করতে পারে না। এইভাবে তো একটা ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারে না।
বাংলাদেশ পাটের জন্মরহস্য উন্মোচন, গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন পাটজাত পণ্য আবিষ্কারের কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, “সেগুলো আমাদের উৎপাদন করতে হবে। সেগুলো আমাদের দেশের কাজে লাগবে, বিদেশে রপ্তানি হবে।”