কোরবানির পশু পরিবহনে প্রস্তুত রেলওয়ে। তবে পশু সঙ্কটে এই ওয়াগন চালু করা যাচ্ছে না। রেলের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে, পশু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সাড়া নেই। একটি ওয়াগন রেক যত সংখ্যক পশু পরিবহনে সক্ষম, সব মিলিয়ে সারাদেশে সেই পরিমাণ বুকিং পাওয়া যায়নি।
করোনা পরিস্থিতিতে খামারি ও পশু ব্যবসায়ীদের সহায়তা করতে কোরবানির পশু পরিবহনের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। এর আগে শাকসবজি, কৃষিপণ্য এবং আমের পরিবহন করে রেল। শাকসবজি পরিবহনে উল্লেখযোগ্য বুকিং না পেলেও আমে দারুণ সাড়া পাওয়া যায়। সংস্থাটি আশা করেছিল কোরবানির পশু পরিবহনেও সাড়া পাওয়া যাবে। তবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন নিজেই জানিয়েছেন, রেলে কোরবানির পশু পরিবহনে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাহিদা পাওয়া যাচ্ছে না।
রেলের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে, ২০০ গরুর বুকিং পেলেও ওয়াগন রেক পরিচালনা করা সম্ভব হতো। কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে ৫-১০টি গরু, ১৫-২০টি ছাগলের বুকিং পাওয়া যাচ্ছে। এত কম সংখ্যক পশু পরিবহন করলে রেলের লোকসান হবে। রেলের দুই অঞ্চলের বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে একই তথ্য জানা গেছে।
করোনা পরিস্থিতিতে কোরবানির পশু পরিবহনে রেলের সহায়তা চেয়েছিল প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা রেলে আগ্রহী নয়। গবাদি পশু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রেলে গরু, ছাগল পরিবহন তাদের জন্য লাভজনক নয়। কারণ, এ প্রক্রিয়ায় পরিবহনে প্রথমে খামার থেকে স্টেশনে নিতে হয় গরু, ছাগল। তাতে এক দফা ভাড়া গুনতে হয়। এরপর স্টেশন থেকে সড়ক পথে হাটে নিতে আবার ভাড়া লাগে। সময়ও বেশি লাগে।
উট বাদে যে কোনো পশু পরিবহনে যোগাযোগ করতে গত ৭ জুলাই নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর জানায় রেল। এতে সোমবার যোগাযোগ করা যায়, এখন পর্যন্ত একটিও পশুবাহী ওয়াগন চলেনি। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তারা জানান, একটি মিটারগেজ ওয়াগনে ১৬টি গরু পরিবহন করা যায়। একটি রেকে ২৫টি ওয়াগন থাকে। এ হিসাবে অন্তত ৪০০ গরু পরিবহন করা যাবে। ব্রডগেজ ওয়াগন রেকের ধারণ ক্ষমতা আরো বেশি। একেকটি ব্রডগেজ ওয়াগনে ২৫টি পর্যন্ত গরু পরিবহন করা হয়।
সর্বশেষ ২০০৮ সালের জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে সাতটি পশুবাহী রেল চালানো হয়েছিল। এবার যে ওয়াগনগুলোতে পশু পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে, সেগুলোকে স্বাভাবিক সময়ে যাত্রীবাহী লোকাল ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে পার্সেল পরিবহন করা হয়। কাঁচামাল, মাছ ও মুরগিও পরিবহন করা হয়।
করোনার বিস্তার রোধে গত ২৪ মার্চ সারাদেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মালবাহী ট্রেন চালু থাকলেও খুব একটা চাহিদা ছিল না। ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে ট্রেন চালু হয়। দুই দফায় ১৯ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হলেও যাত্রী সঙ্কটে পরে দুটি বন্ধ হয়ে যায়। সামাজিক দূরত্ব মানতে চলমান ট্রেনগুলোতে অর্ধেক আসন খালি রেখে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। যাতায়ত নিরুৎসাহিত করতে এবারের ঈদযাত্রায় ট্রেন বাড়াবে না রেল।