১০ কিলোমিটারের এই সেতু বরিশালের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে ভোলাকে। বরিশালের লাহারহাট থেকে ভোলার ভেন্ডুরিয়া ফেরিঘাটকে সংযুক্ত করবে এ সেতু। একটি দেশের অর্থনীতির গতি নির্ভর করে সেদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। যে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা যত উন্নত সে দেশের এগিয়ে যাবার গতি তত বেশি। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি, এই গাতিকে আরো তরান্বিত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন আনার বিকল্প নেই। দেশের প্রধান সড়ক গুলিকে দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নিত করা হচ্ছে। এক্সপোর্ট ইম্পোর্টের প্রধান রোটে হচ্ছে এক্সপ্রেস ওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, যা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো গাতিশীল করবে।
সবশেষে বরিশাল-ভোলাকে সড়কপথে যুক্ত করার জন্য তৈরি হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ সেতু। পদ্মাসেতু, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র আর কর্ণফুলী টানেল ছাড়া ঢাকার বাইরে এটিই হতে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। কয়েক বছরের মাঝে দ্বীপ জেলা ভোলাকে বদলে দিবে এই সেতু। এই সেতুর মধ্য দিয়ে ভোলায় সম্প্রতি আবিস্কৃত গ্যাস খনির জন্য পাইপলাইন বসানো সম্ভব হবে। আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হচ্ছে, সেতুর নিচের অংশে নদীর মাঝখানের চরগুলোতে ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে, আসবে বিদেশি বিনিয়োগ।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর প্রাক্কলিত বাজেট ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা। নদীর মাঝে চরের উপর ৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্টসহ এ সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ১০ কিলোমিটার। সেতুতে সর্বোমোট স্প্যান বসবে ৫৮টি, অবস্থাভেদে প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য হবে ১১০-২০০ মিটার। সেতুর জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হচ্ছে প্রায় ১৩০০ একর। বাজেটের প্রসঙ্গ আসলে একটা বিষয় উল্লেখ করা উচিৎ, সেতুটি পদ্মা সেতুর মতো ডাবল ডেকার নয়। এটি শুধুমাত্র সড়কসেতু হচ্ছে। মূলত পদ্মার মতো খরস্রোতা নয় এখানের নদী। তাই জটিলতা বেশি হবে না। কাজও হবে দ্রুত গাতিতে, টার্গেট চার বছরে কাজ শেষ করা।
সেতু তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হলো ফান্ডিং। এধরনের মেগা প্রজেক্টের কাজ মূলত ফান্ডিং সোর্সের উপর নির্ভর করে। ডিপিপির কাজ আগামী মাসের মধ্যে শেষ করে চীন অথবা সৌদি আরবের সঙ্গে হতে পারে জিটুজি চুক্তি।