গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪১ জনের মৃত্যু এবং নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩৩৬০ জন। এ নিয়ে করোনায় মোট মৃত্যু সংখ্যা ২২৩৮ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৪ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ৩৭০৬ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৮৪ হাজার ৫৪৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ৬৩২টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ লাখ ৪ হাজার ৭৮৪টি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৮ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এনিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ এবং ১২ জন নারী। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৭৭০ জন এবং নারী ৪৬৮ জন। তাদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন এবং ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, রংপুর বিভাগে ৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৮ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৭৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৬৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৬৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৫৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৪ হাজার ২২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ২ হাজার ২৮২ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫৮১ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ১৭৪ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ২৩ হাজার ৪৭৫ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৩ হাজার ১০৬ জন।
দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২। আর দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, এখন পর্যন্ত মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৪৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল রয়েছে ১৬টি এবং মহানগরীর বাইরে ঢাকা জেলায় একটি। ঢাকা মহানগরে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা ছয় হাজার ৭৭৩ এবং আইসিইউ বেড রয়েছে ১৮০টি। রোগী ভর্তি রয়েছেন দুই হাজার ৩৭৫ জন এবং আইসিইউতে রোগী রয়েছেন ৯৭ জন। সব বিভাগ মিলিয়ে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৬১০টি এবং আইসিইউ রয়েছে ৩৭৯টি। সব বিভাগে রোগী ভর্তি হয়েছেন চার হাজার ৬৯১ জন, আর আইসিইউতে রয়েছেন ১৮৩ জন। সব হাসপাতালেই রোগী ভর্তি হতে পারবেন কারণ অনেক শয্যা খালি রয়েছে। সব হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে মোট ১০ হাজার ২৪০টি, হাইফ্লো নেজাল ক্যানেলা ৮০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৫৫টি।