পঞ্চগড়ে প্রেমিকের সাথে আপত্তিকর অবস্থা দেখে ফেলার কারণে স্বামীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা এলাকায়। জহুর আলী (৬৫) নামের নিহত ওই ব্যক্তি মৃত্যুর আগে মোবাইল ভিডিওতে ঘাতকদের নাম বলেছেন।
নিহত ব্যক্তির বাড়ি পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের গাঠিয়াপাড়া এলাকায়।
অনুযায়ী হত্যাকারীরা হলেন জহুর আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা বেগম (৪৫) এবং তার প্রেমিক ইদ্রিস আলী (৫০)।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, গত ৩ বছর ধরে জহুর আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা বেগমের সাথে আটোয়ারী উপজেলার সাতখামার এলাকার ইদ্রিস আলীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক চলছিল।
এ নিয়ে বিচার শালিশও হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে বেকার হয়ে পড়ে জহুর আলী।
বৃহস্পতিবার ভোরে জহুর আলী তার স্ত্রী ও ইদ্রিসকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জহুর আলীর গলায় ছুরি চালিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় ইদ্রিস ও জাহেদা।
ইদ্রিস কৌশলে জাহেদা ও জহুর আলীকে বাংলাবান্ধা এলাকায় পাথর ভাঙার কাজ দেয়ার কথা বলে বুধবার বাংলাবান্ধায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি ঘর ভাড়া নেয় তারা। ওই বাড়িতে অন্য শ্রমিকরাও ভাড়ায় থাকতেন।
এ সময় বাড়ির মালিক হকিকুল ইসলাম ভিডিও ধারণ করেন। ওই ভিডিওতে ইদ্রিস ও তার স্ত্রী জাহেদা খাতুন তার গলায় ছুরি চালিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানান জহুর আলী। পরে স্থানীয়রা তাকে প্রথমে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি জব্দ করেছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
জহুর আলীর চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে তাকে গলায় ছুরিকাঘাত অবস্থায় দেখতে পায়।
এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এখন পর্যন্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জহুর আলীর ছেলে নুরুজ্জামান বলেন, আমার মা মারা যাওয়ার পর জাহেদা বেগমকে বিয়ে করেন আমার বাবা। ইদ্রিসের সাথে আমার ছোট মায়ের তিন বছর ধরে সম্পর্ক। এর আগে একাধিকবার বিচার শালিসও হয়েছে। কাজ দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে আমার ছোট মা ও ইদ্রিস পরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
পরকিয়ার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। আমরা ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেছি। হত্যাকারীরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।