বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেন।
ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী জাতীয়ভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’।
শিশু একাডেমি মিলনায়তনে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন। জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দুস্থ নারীদের সেলাই মেশিন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের তালিকা অনুযায়ী ৬৪ জেলায় তিন হাজার ২০০ সেলাই মেশিন ও ১৩০০ দুস্থ ও অসহায় নারীর মধ্যে দুই হাজার টাকা করে মোট ২৬ লাখ টাকা প্রদান করা হবে। একই সাথে গোপালগঞ্জ জেলার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০০ ল্যাপটপ বিতরণ করা হবে।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আর্থিক অনুদান গ্রহণের জন্য ৫ জন, সেলাই মেশিন গ্রহণের জন্য ৫ জন এবং ল্যাপটপ গ্রহণের জন্য ৫ জন নির্বাচিত সুবিধাভোগী উপস্থিত থাকবেন।
অনুদানের অর্থ ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত সুবিধাভোগীদের মোবাইল নম্বরে হস্তান্তর করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক উপস্থিত সুবিধাভোগীদের মধ্যে সেলাই মেশিন এবং ল্যাপটপ হস্তান্তর করবেন।
বঙ্গমাতার গৌরবময় কর্মজীবনের উপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মান ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০ টায় বনানী কবরস্থানে শহীদ ফজিলাতুন্নেসার সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ শেষে কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ সহযোগী সংগঠনগুলো এই কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করবে। এছাড়া যুব মহিলা লীগ ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে মোমবাতি প্রজ্জলন এর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কেবল একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণীই নন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরণাদাত্রী।
ছায়ার মত অনুসরণ করেছেন প্রাণপ্রিয় স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে। এই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য অবদান রেখেছেন। জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন, এজন্য অনেক কষ্ট-দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে।
বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার বেলা ১২টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।