সাম্প্রতিক শিরোনাম

মা আমার হাতটা ধরে ছিল কেমনে খুলে গেল…

আমরা লঞ্চের নিচতলায় ছিলাম। হঠাৎ শব্দ। দেখি বড় কিছু একটা সব উল্টে দিচ্ছে। মা আমার হাতটা ধরে ছিল। তারপর কেমনে খুলে গেল, জানি না। আমার বোনটা কই চলে গেল? আমি কিভাবে বেরিয়ে এলাম, জানি না। পরে পেলাম ওদের, এইখানে এসে…।’

নিজে প্রাণে বেঁচে গেলেও মা-বোনকে হারিয়ে বিলাপ করছিলেন রিফাত হোসেন (২২)। গতকাল সোমবার বিকেলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) মর্গের সামনে গিয়ে এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা গেল। সামনে দুটি মাইক্রোবাসে রাখা তাঁর মা ময়না বেগম (৪০) এবং ছোট বোন মুক্তার (১৪) মৃতদেহ। স্বজনরা জানাল, মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম উপজেলার পানামগঞ্জ এলাকার মাসুম মিয়ার ছেলে রিফাত তাঁর দুই বোন আর মাকে নিয়ে কষ্টকর দিন পার করছিলেন। মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাবা তাঁদের খোঁজ রাখেন না। ঢাকার সোয়ারীঘাট এলাকায় থেকে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান রিফাত। করোনা মহামারির এই সময়ে তাঁরা গ্রামে চলে যান। কাজের সন্ধানে গতকাল পরিবার নিয়ে ফের ঢাকায় আসছিলেন তিনি।

সাইদুল ইসলাম (৪৫) নামের এক নিহতের মুখে হাত বুলিয়ে কাঁদছিলেন তাঁর বোন নাসিমা বেগম। ‘ভাই, তুই ওঠ। ছয় মাস আগে মা আমাদের ছাইড়া চলে গেল। দুইটা বাচ্চা রাইখা, আমাগো রাইখা তুই ক্যামনে যাস?’ নাসিমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিল স্বজনরা। তারা জানায়, মীরকাদিমের সাইদুল সদরঘাটে হকারি করতেন। গ্রামের বাড়ি থেকে সদরঘাটে এসে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে সংসার চালাতেন।

রিফাতের মতো অনেক স্বজনের আহাজারিতে শোকাবহ এক পরিবেশ তৈরি হয় মর্গের সামনে। নিখোঁজ স্বজনের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে অনেকে।

ইসলামপুরের কাপড় ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান উজ্জলের (৪৮) লাশ নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জ থেকে লঞ্চে করে এসে ব্যবসা করত উজ্জল।  দুটি মেয়ে আছে তার। এদের নিয়ে আমার মেয়েটা এখন কী করবে? কী বলব ওকে…?’

এদিকে দুপুর থেকেই মর্গে এসে স্বজনদের খোঁজে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছিল কয়েক শ মানুষ। মর্গের এক পাশে আফরোজা আক্তার নামে এক নারী বিলাপ করছিলেন। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই হাউমাউ করে কান্না করে বললেন, ‘আমার ভাইকে খুঁজে পাচ্ছি না। আমার ভাই ওই লঞ্চে ছিল, গেল কই?’ পাশে থাকা এক স্বজন জানান, ভাই গোলাপ হোসেন ভূইয়া (৪৫) নিহত হওয়ার খবর শুনে আফরোজা পাগলের মতো ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। সেখান থেকে জানানো হয়, লাশ পাঠানো হয়েছে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে।

মর্গ থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে লাশ তোলার সময় বিলাপ করছিলেন জাকির শেখ নামের আরেক ব্যক্তি। ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল। চিকিৎসা করাইতে আইসা শেষবিদায় নিল? আমার সব শেষ করল।’ জাকির শেখ জানান, মুন্সীগঞ্জের সুজানগরে তাঁর বাড়ি। তাঁর স্ত্রী সুমনা বেগম শিশুসন্তান তামিমকে (১৩) নিয়ে কাঠপট্টি থেকে ঢাকায় আসছিলেন। দুপুর থেকে খুঁজে সন্ধ্যায় তিনি দুজনের লাশ পেয়েছেন। উদ্ধারকারীরা তাঁকে জানিয়েছেন, মা ও ছেলের লাশ একসঙ্গে পাওয়া যায়। মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন। জাকির শেখের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ।

আফরোজা জানান, তাঁর ভাই গোলাপ মুন্সীগঞ্জের সিপাহীপাড়া এলাকায় থাকতেন। তাঁর তিনটি মেয়ে রয়েছে। ছোট মেয়েটির বয়স চার বছর। তাঁর এক আত্মীয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। রক্তের প্রয়োজন। রক্ত দিতে গোলাপ ঢাকা আসছিলেন। আরেকজনকে বাঁচানোর আগে গোলাপ নিজেই মারা গেলেন। সন্ধ্যায় আফরোজা ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

 

 

 

 

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...