মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা গেছেন। সেখানে পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
শনিবার সকালে তাঁর মৃতুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আবুল বাশার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
এর আগে রবিবার দুপুরে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আবু ওসমান চৌধুরী বার্ধক্যজনিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। পরে তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
আবু ওসমান চৌধুরী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন মেজর পদে কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইট-এর সংবাদ পেয়ে ২৬ মার্চ সকালে বেলা ১১টায় তিনি চুয়াডাঙার ঘাঁটিতে পৌঁছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সসৈন্য যোগ দেন।
এর আগে ১৯৭১ সালের ৬ মার্চ আবু ওসমান চৌধুরী পদ্মা মেঘনার ওপারে কুষ্টিয়া থেকে বরিশাল জেলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাকে দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গণ নামকরণ করে সে রণাঙ্গণের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন।
পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার তাকে দক্ষিণ পশ্চিমাংসের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেন।
প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনকে দুই ভাগ করে ৮নং ও ৯নং সেক্টরদ্বয় গঠন করেন এবং ৮ নং সেক্টরের দায়িত্বে আবু ওসমানকে নিয়োগ করা হয়। প্রাথমিকভাবে সে সময় ওই সেক্টরের অপারেশন এলাকা ছিল কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর ও পটুয়াখালী জেলা।
মে মাসের শেষে অপারেশন এলাকা সংকুচিত করে কুষ্টিয়া ও যশোর, খুলনা জেলা সদর, সাতক্ষীরা মহকুমা এবং ফরিদপুরের উত্তরাংশ নিয়ে এই এলাকা পুনর্গঠন করা হয়। এই সেক্টরের প্রধান ছিলেন আবু ওসমান চৌধুরী এবং পরে মেজর এম এ মঞ্জুর। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম (১৯৭১)
মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার আবু ওসমান চৌধুরীকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেছে।